বিজ্ঞাপন
গ্রেপ্তারকৃতরা হলো—নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ দুর্গাপুর গ্রামের কামলা বাড়ির রুহুল আমিনের ছেলে মোরশেদ আলম ওরফে মুন্সি (৩২) এবং কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ থানার বিনয়নগর গ্রামের ভূঁইয়া বাড়ির মৃত নুর নবী খোকনের ছেলে মো. মাহফুজুন নবী সুজন (৩৩)।
শনিবার (২১ জুন) ভোররাতে জেলার বেগমগঞ্জের দুর্গাপুর ও সোনাইমুড়ীর বজরা বাজার এলাকা থেকে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এর আগে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতের কোনো এক সময়ে উপজেলার সোনাপুর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের কালিকাপুর গ্রামের ওসমান আলী হাজী বাড়িতে এই নির্মম হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়।
নিহত সিতারা বেগম ছিলেন মৃত মোফাজ্জল হকের স্ত্রী এবং পাঁচ সন্তানের জননী।
পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার রাতের কোনো এক সময়ে চুরির উদ্দেশ্যে আসামিরা ঘরে প্রবেশ করে। এ সময় সিতারা বেগম ঘরে একা ছিলেন এবং চোরদের চিনে ফেলায় তাকে গলা কেটে হত্যা করে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা।
পরে শনিবার ভোররাতে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় বেগমগঞ্জের দুর্গাপুর এলাকা থেকে মোরশেদ আলম ওরফে মুন্সিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তার দেওয়া স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে তার শয়নকক্ষ থেকে নিহতের ব্যবহৃত একটি বাটন মোবাইল ফোন, কয়েকটি প্রিন্ট শাড়ি, জামাকাপড় ও একটি সাউন্ড বক্স উদ্ধার করা হয়।
পরবর্তীতে তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী অভিযান চালিয়ে সোনাইমুড়ীর বজরা বাজার এলাকা থেকে প্রধান আসামি সুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার দেখানো জায়গা থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত দেশীয় একটি দা, একটি স্ক্রু ড্রাইভার, একটি অ্যান্ড্রয়েড ফোন এবং একটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়।
স্থানীয়রা জানান, সিতারা বেগম ঈদুল আজহা উপলক্ষে ছেলের সঙ্গে সোনাইমুড়ী পৌর এলাকায় থেকে নিজ গ্রামে বেড়াতে এসেছিলেন। বৃহস্পতিবার রাতের খাবার শেষে নিজ ঘরে একা ঘুমিয়ে পড়েন। শুক্রবার সকাল ১০টা পর্যন্ত কোনো সাড়া না পেয়ে পরিবারের সদস্যরা ঘরে প্রবেশ করলে তার রক্তাক্ত মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে।
স্থানীয়দের ধারণা, চোরেরা টিনশেড ঘরের সিঁধ কেটে ঘরে ঢোকে এবং চুরির সময় ধরা পড়ার ভয়ে সিতারা বেগমকে হত্যা করে পালিয়ে যায়।
এ বিষয়ে সোনাইমুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোরশেদ আলম বলেন, “চোরদের চিনে ফেলায় সিতারা বেগমকে হত্যা করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার ঘটনায় প্রধান আসামি সুজন নিজের জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে।”
গ্রেপ্তার দুই আসামিকে শনিবার নোয়াখালী চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
প্রতিবেদক - গিয়াস রনি, নোয়াখালী।