ছবি : সংগৃহীত।
বিজ্ঞাপন
তারা বলছেন, বিকল্প কোনো ব্যবস্থা ছাড়াই শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশ অন্যায় এবং তা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন দমন করার উদ্দেশ্যেই দেওয়া হয়েছে। তাই তারা হল ত্যাগ করবেন না এবং দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন।
শনিবার (২১ জুন) সন্ধ্যায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে এসব ঘোষণা দেওয়া হয়। এর আগে সকাল থেকেই পাঁচ দফা দাবিতে তারা ক্যাম্পাসে অবস্থান কর্মসূচি, মিছিল ও প্রতিবাদ করেন।
ঢামেক শিক্ষার্থী তৌহিদুল আবেদীন তানভীর বলেন, “মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমরা হল ত্যাগ করছি না। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কোনো আলোচনা না করেই একতরফাভাবে একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ করা এবং আমাদের হল থেকে বের করে দিতে চাওয়া সম্পূর্ণ অযৌক্তিক।”
তিনি আরও বলেন, “পরিত্যক্ত ভবনে জীবনের ঝুঁকি থাকলেও বিকল্প কোনো ব্যবস্থা না করেই প্রশাসন যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা স্পষ্টতই আন্দোলন দমন করার একটি প্রচেষ্টা। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে হলে অবস্থান চালিয়ে যাব এবং আমাদের যৌক্তিক দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চলবে।”
এক নারী শিক্ষার্থী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “বিকল্প ব্যবস্থা ছাড়া হলে তালা দেওয়ার নির্দেশ মানে আমাদের নিরাপত্তা ও শিক্ষা উভয়কেই হুমকির মুখে ফেলা। আমরা আন্দোলনে আছি এবং থাকব।”
কলেজ বন্ধের ঘোষণার পর ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক উদ্বেগ দেখা দেয়। যাদের বাড়ি দূরে, তারা এখন কোথায় যাবেন তা নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। ঈদের ছুটি শেষে অনেক শিক্ষার্থী মাত্রই হলে ফিরে এসেছেন।
বিকেলে কলেজ প্রশাসনের পক্ষ থেকে অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মো. কামরুল আলম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, “কলেজের চলমান অচলাবস্থা নিরসনে আগামীকাল ২২.৬.২০২৫ খ্রি. থেকে একাডেমিক কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হলো। সব ছাত্রছাত্রীকে দুপুর ১২টার মধ্যে হোস্টেল ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হলো।”
তবে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, পেশাগত পরীক্ষার্থীদের এবং বিদেশি শিক্ষার্থীদের এই বন্ধের আওতামুক্ত রাখা হয়েছে।
শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, শুধু আবাসন নয়, নিরাপদ শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত তারা একাডেমিক কার্যক্রমে ফিরবেন না। তাদের পাঁচ দফা দাবিগুলো হলো—
১. দ্রুত নতুন ছাত্রাবাস ও ছাত্রীনিবাসের বাজেট পাস
২. নতুন ভবন চালু না হওয়া পর্যন্ত বিকল্প আবাসনের ব্যবস্থা
৩. নতুন একাডেমিক ভবনের বাজেট অনুমোদন
৪. পৃথক বাজেট ও দ্রুত বাস্তবায়ন পরিকল্পনা
৫. সকল কার্যক্রমে শিক্ষার্থী প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত করা
শিক্ষার্থীরা স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, দাবি পূরণ না হলে আন্দোলন চলবে এবং তারা শান্তিপূর্ণভাবে হলে অবস্থান অব্যাহত রাখবেন।