Logo Logo
বিশ্ব
ইসরায়েল-ইরান যুদ্ধ

ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে মোদি সরকারের নীরবতার কঠোর সমালোচনা সোনিয়া গান্ধীর


Splash Image

কংগ্রেস নেত্রী সোনিয়া গান্ধী। ছবি : সংগৃহীত

ইসরায়েলের সাম্প্রতিক আক্রমণাত্মক কার্যক্রম এবং গাজা ও ইরানে মানবিক বিপর্যয় নিয়ে ভারতের নীরব অবস্থানের কঠোর সমালোচনা করেছেন কংগ্রেস নেত্রী সোনিয়া গান্ধী।


বিজ্ঞাপন


শনিবার ‘দ্য হিন্দু’ পত্রিকায় প্রকাশিত স্বলিখিত এক নিবন্ধে তিনি সরাসরি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকারের কূটনৈতিক নীতিকে দায়ী করে বলেন, “শুধু কণ্ঠরোধই নয়, দীর্ঘকাল যাবৎ লালিত যাবতীয় মূল্যবোধও ভারত বিসর্জন দিয়েছে।”

নিবন্ধের শিরোনাম ছিল “দেরিতে হলেও ভারত এখনো সরব হতে পারে”। এতে তিনি দাবি করেন, ভারতের ঐতিহ্যবাহী পররাষ্ট্রনীতি—যা শান্তিপূর্ণ উপায়ে দুই জাতি সমাধানের পক্ষে ছিল—তা থেকে মোদি সরকার স্পষ্টভাবে সরে এসেছে। স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের দাবিকে উপেক্ষা করে ভারত এখন ইসরায়েলের একপেশে অবস্থানকে মৌন সম্মতি দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেন সোনিয়া।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পশ্চিম এশিয়ায় ভূমিকাকে ‘ধ্বংসাত্মক’ আখ্যা দিয়ে সোনিয়া লেখেন, “সবচেয়ে দুঃখজনক, একসময় যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধনীতি নিয়ে যারা সমালোচনা করতেন, সেই ট্রাম্প আজ তার পূর্বসূরিদের পথেই হাঁটছেন।”

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকেও ছাড় দেননি সোনিয়া। তিনি জানান, নেতানিয়াহুর নেতৃত্বে ইসরায়েল একটি সংঘাতপ্রবণ, উগ্রপন্থী রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। শান্তি বা সংলাপের পরিবর্তে সংঘাত ও দমননীতিই তার মুখ্য কৌশল।

গাজার সাম্প্রতিক মানবিক বিপর্যয়ের প্রসঙ্গ তুলে সোনিয়া লেখেন, “৫৫ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন। কোথাও পুরো পরিবার নিশ্চিহ্ন হয়েছে, কোথাও গোটা এলাকা ধূলিসাৎ হয়েছে। হাসপাতালগুলো ধ্বংস হয়ে গেছে। পুরো গাজা এখন দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে আছে।”

সেই বিপর্যয়ের মুখেও ভারতের নিরবতাকে ‘নৈতিক ও কূটনৈতিক ঐতিহ্য থেকে বিচ্যুতি’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন তিনি।

ইরানের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের ঐতিহাসিক পটভূমি তুলে ধরে সোনিয়া লেখেন, “ইরান আমাদের বহুদিনের বন্ধু। আমাদের দুই দেশের মাঝে গভীর সভ্যতাগত সম্পর্ক রয়েছে।” ১৯৯৪ সালে জাতিসংঘে কাশ্মীর ইস্যুতে ভারতের বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাব উত্থাপনের পথ রুদ্ধ করেছিল ইরান। ইসলামি প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পর ইরান-ভারত সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ হয়েছে। ১৯৬৫ ও ১৯৭১ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধেও এই সম্পর্কের ইতিবাচক প্রভাব স্পষ্ট ছিল।

সোনিয়া গান্ধী নিবন্ধের শেষাংশে লিখেছেন, “ভারতকে স্পষ্ট ও স্বচ্ছ বার্তা দিতে হবে। কূটনৈতিকভাবে সক্রিয় ভূমিকা গ্রহণ করে পশ্চিম এশিয়ায় উত্তেজনা হ্রাসে সহায়তা করতে হবে। এখনো খুব বেশি দেরি হয়নি।”

কংগ্রেসের অন্যান্য শীর্ষ নেতা—মল্লিকার্জুন খাড়গে, রাহুল গান্ধী ও প্রিয়াঙ্কা গান্ধী ভদ্রও ইতিমধ্যে ইসরায়েলের আগ্রাসন এবং ভারতের নীরবতার বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলেছেন। অসুস্থতা কাটিয়ে উঠে এবার সেই কণ্ঠে যুক্ত হলেন কংগ্রেসের অন্যতম অভিজ্ঞ মুখ সোনিয়া গান্ধী।

আরও পড়ুন

বন্ধু নির্বাচনে সতর্ক হোন, বলছেন নবী করিম ﷺ
বন্ধু নির্বাচনে সতর্ক হোন, বলছেন নবী করিম ﷺ
পৃথিবীর শান্তির জন্য হুমকি ইসরায়েল, মুসলিম বিশ্বকে প্রস্তুতির আহ্বান হেফাজতের
পৃথিবীর শান্তির জন্য হুমকি ইসরায়েল, মুসলিম বিশ্বকে প্রস্তুতির আহ্বান হেফাজতের