Logo Logo
ইসলাম

ইবাদতের ঘর মসজিদে যেসব কাজ কঠোরভাবে নিষিদ্ধ


Splash Image

ছবি: সংগৃহীত

মসজিদ—শুধু চার দেয়ালের কোনো স্থাপনা নয়; এটি মুসলমানদের ইবাদতের ঘর, আত্মশুদ্ধির কেন্দ্র এবং ইসলামী সভ্যতার প্রতীক। এখানে নামাজ আদায় হয়, কোরআন তিলাওয়াত হয়, যিকির-আযকার হয়—যা মানুষের আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে।


বিজ্ঞাপন


তবে দুঃখজনক হলেও সত্য, অনেক সময় অজ্ঞতা, অবহেলা কিংবা অসচেতনতার কারণে এই পবিত্র স্থানে এমন কিছু কাজ করা হয়, যা ইসলামি শরিয়তে নিষিদ্ধ, নাজায়েজ বা গুনাহের শামিল।

মসজিদে কেনাবেচা ও বাণিজ্যিক প্রচারণা

রাসুলুল্লাহ ﷺ স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন, “তোমরা যদি মসজিদে কাউকে বেচাকেনা করতে দেখো, তবে তাকে বলো—আল্লাহ যেন তোমার ব্যবসায় বরকত না দেন।” (আবু দাউদ, হাদিস: ১০৭৬)। মসজিদের ভেতরে বই বিক্রি, চাঁদা তোলা, বা কোনো দাওয়াতি প্রচার ও বাণিজ্যিক প্রচারণা শরিয়তের দৃষ্টিতে স্পষ্টতই নিষিদ্ধ।

উচ্চ কণ্ঠে কথা বলা ও তর্ক-বিতর্ক

মসজিদে কথা বলা যাবে না—তা নয়; বরং উচ্চস্বরে কথা বলা, হাসাহাসি, তর্ক-বিতর্ক নিষেধ। এতে অন্য মুসল্লিদের ইবাদতে ব্যাঘাত ঘটে। হাদিসে বলা হয়েছে, “তোমাদের কেউ যেন মসজিদে কোরআন তিলাওয়াত করার সময় অন্যকে বিরক্ত না করে।” (মুয়াত্তা মালিক)

নাপাক অবস্থায় মসজিদে প্রবেশ

হায়েজ, নেফাস ও জানাবাত অবস্থায় মসজিদে প্রবেশ করা হারাম। আল কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, “...তোমরা মসজিদের নিকটবর্তী হয়ো না, যতক্ষণ না তোমরা পবিত্র হও।” (সুরা আন-নিসা: ৪৩)। তাই এসব অবস্থায় মসজিদে প্রবেশ না করাই আবশ্যক।

দুর্গন্ধযুক্ত খাবার খেয়ে মসজিদে আসা

রাসুল ﷺ বলেছেন, “যে ব্যক্তি কাঁচা পেঁয়াজ বা রসুন খেয়ে ফেলে, সে যেন আমাদের মসজিদে না আসে।” (সহিহ মুসলিম)। আজকাল অনেকে ধূমপান বা মসলাযুক্ত খাবার খেয়ে মসজিদে প্রবেশ করেন—যা অন্য মুসল্লিদের কষ্ট দেয়।

শিশুদের দৌড়ঝাঁপ ও চিৎকার

মসজিদ ইবাদতের স্থান, খেলাধুলার মাঠ নয়। ছোট শিশুদের যেন মসজিদে দৌড়াদৌড়ি না করে, চিৎকার না করে, সে বিষয়ে অভিভাবকদের সচেতন হতে হবে।

রাজনৈতিক প্রচারণা ও দলীয় বক্তব্য

মসজিদের পবিত্রতা রক্ষা করতে হলে সেখানে রাজনীতি বা দলীয় মতাদর্শ প্রচার নিষিদ্ধ। ইসলামের ঐক্য রক্ষা এবং মসজিদের পরিবেশ অক্ষুণ্ণ রাখতে এটি খুবই জরুরি।

মসজিদকে পারাপারের রাস্তা বানানো

রাসুল ﷺ বলেছেন, “মসজিদকে রাস্তা বানিয়ে কেবল পার হওয়া উচিত নয়।” (ইবনে খুজাইমা)। অনেকেই মসজিদকে শর্টকাট পথ হিসেবে ব্যবহার করেন, যা ইসলামিক আদব পরিপন্থী।

মৃত্যুর পর উচ্চস্বরে কান্না, বিলাপ ও মাতম

মসজিদে কারও মৃত্যু হলে সংক্ষিপ্ত দোয়া ও বিনয়ের সঙ্গে আচরণ কাম্য। উচ্চস্বরে কান্নাকাটি বা মাতম করা ইসলামে নিরুৎসাহিত এবং পরিবেশও নষ্ট করে।

মসজিদে কী কী করা উচিত?

ডান পা দিয়ে মসজিদে প্রবেশ করা এবং প্রবেশের দোয়া পড়া

নফল নামাজ আদায়, কোরআন তিলাওয়াত ও যিকির-আযকারে মগ্ন থাকা

মসজিদ পরিষ্কার রাখা

মোবাইল ফোন বন্ধ বা সাইলেন্ট রাখা

অন্য মুসল্লিদের সম্মান ও ইবাদতের প্রতি সংবেদনশীল থাকা

আরও পড়ুন

মৌলভী জয়নুল আবেদীন অ্যাসোসিয়েশনের বিনামূল্যে চক্ষু চিকিৎসা ক্যাম্প
মৌলভী জয়নুল আবেদীন অ্যাসোসিয়েশনের বিনামূল্যে চক্ষু চিকিৎসা ক্যাম্প
নারী-শিশু লাশ আর আগুনে পোড়া মসজিদ—এ কেমন মানবতা?
নারী-শিশু লাশ আর আগুনে পোড়া মসজিদ—এ কেমন মানবতা?