Logo Logo

ইরানে হামলার প্রতিবাদে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে বিক্ষোভ


Splash Image

ইরানের তিনটি পারমাণবিক কেন্দ্র লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ইসরায়েলের সঙ্গে তেহরানের চলমান সংঘাতের প্রেক্ষাপটে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে এ হামলা চালানো হয়।


বিজ্ঞাপন


আর এই হামলার প্রতিবাদে রোববার (২২ জুন) যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে গণবিক্ষোভ।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে, ইরানের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযানকে কেন্দ্র করে দেশটির বিভিন্ন শহরে রাস্তায় নেমে এসেছেন হাজার হাজার মানুষ। তারা বলছেন, এই হামলা কেবল মধ্যপ্রাচ্যে আরেকটি যুদ্ধের সূচনা নয়, বরং যুক্তরাষ্ট্রের ভেতরে বিদ্যমান সামাজিক ও অর্থনৈতিক সংকট থেকে দৃষ্টি সরিয়ে নেওয়ার কৌশল।

লস অ্যাঞ্জেলেস শহরের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত ফেডারেল বিল্ডিংয়ের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভকারীরা স্লোগান দেন: “ইরান থেকে হাত সরাও”, “যুদ্ধ নয়, চাই চাকরি ও শিক্ষা”। বিক্ষোভকারীদের একটি বড় অংশই ছিলেন ইরানি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক।

এক তরুণ বিক্ষোভকারী সিএনএনকে বলেন, “আমার পরিবার ইরানে রয়েছে। তাদের শহর বোমাবর্ষণের শিকার হচ্ছে। এ কারণে এটা আমার জন্য শুধু রাজনৈতিক নয়, ব্যক্তিগত বিষয়ও।”

নিউইয়র্ক শহরের মিডটাউনে শতাধিক মানুষ বিক্ষোভে অংশ নেন। “হ্যান্ডস অব ইরান” এবং “মধ্যপ্রাচ্যে নতুন যুদ্ধ নয়” লেখা প্ল্যাকার্ড হাতে মিছিল করেন তারা। আয়োজক ইভেট ফেলারকা বলেন, “এভাবে চলতে থাকলে বিশ্বযুদ্ধ শুরু হতে পারে, যার পরিণতি হবে ভয়াবহ পারমাণবিক ধ্বংস।”

বস্টন কমন পার্কেও শতাধিক বিক্ষোভকারী জড়ো হন এবং শহরের ভিতর দিয়ে সিটি হল পর্যন্ত মিছিল করেন। অনেকে বলেন, “সাধারণ মানুষ যেখানে স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা এবং বাসাভাড়ার মতো মৌলিক চাহিদা নিয়ে সংকটে ভুগছে, সেখানে সরকার কোটি কোটি ডলার ব্যয় করছে অপ্রয়োজনীয় যুদ্ধযন্ত্রে।”

ম্যাসাচুসেটস পিস অ্যাকশনের নির্বাহী পরিচালক ব্রায়ান গারভে বলেন, “বছরের পর বছর ধরে আমরা একই ভুল করছি। ইতিহাস থেকে কিছুই শিখছি না।”

সান ফ্রান্সিসকোতেও শতাধিক মানুষ মার্কেট স্ট্রিট ধরে বিক্ষোভ করেন। ট্রাম্পের বিরুদ্ধে তার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের অভিযোগ তোলেন অনেকেই। বিক্ষোভকারীদের বক্তব্য, “তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, বিদেশে আর সামরিক সংঘাতে জড়াবেন না। কিন্তু এখন যা হচ্ছে, তা ঠিক উল্টো।”

ইরানি বংশোদ্ভূত মানবাধিকার কর্মী আর্দাভান আমিনি বলেন, “আমার আত্মীয়রা ইরানে আছেন। প্রতিদিন আতঙ্কে থাকি—তারা নিরাপদ কি না।”

ওরেগনের বেন্ড শহরে আয়োজিত বিক্ষোভে স্থানীয় বাসিন্দারা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বিরুদ্ধে কংগ্রেসের অনুমতি ছাড়া যুদ্ধ শুরু করার অভিযোগ তোলেন। আয়োজক ফ্রেডি ফিনি-জোর্ডেট বলেন, “শুধু ট্রাম্প নয়, অনেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাহী ক্ষমতার সীমা লঙ্ঘন করে থাকেন।”

ভার্জিনিয়ার রিচমন্ড শহরের কেন্দ্রস্থলে রোববার প্রায় ৫০ জন বিক্ষোভকারী জড়ো হন। “যুদ্ধ নয়, জনগণের ট্যাক্সের টাকা দেশের উন্নয়নে ব্যয় করো”—এ দাবিতে স্লোগান দেন তারা। ভেটেরানস ফর পিস সংগঠনের সদস্য রেইন বোরো বলেন, “আমেরিকান জনগণের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ কোনো যুদ্ধ চায় না। আমরা শান্তি চাই, নিরাপত্তা চাই, এবং অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা চাই।”

বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন

আরো দেখুন


বিজ্ঞাপন

পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...