ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সৈয়দ আব্বাস আরাগচি। ছবি: রয়টার্স
বিজ্ঞাপন
দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সৈয়দ আব্বাস আরাগচি সম্প্রতি কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল আরাবি আল জাদিদকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ ঘোষণা দেন।
সাক্ষাৎকারে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “আমাদের পরমাণু স্থাপনায় যে হামলা ঘটল— তার গুরুতর এবং গভীর প্রভাব নিশ্চিতভাবেই তেহরানের ভবিষ্যৎ কার্যক্রমে পড়বে। আমরা জাতিসংঘের নন-প্রোলিফারেশন ট্রিটি (এনপিটি) চুক্তির অন্যতম অংশীদার; কিন্তু এই অংশীদারিত্ব ভবিষ্যতেও থাকবে কি না তা পুনর্বিবেচনা করার সময় এসেছে এবং আমরা তা করব।”
১৯৭০ সালে তৎকালীন ইরানি সরকার জাতিসংঘের এনপিটি চুক্তিতে স্বাক্ষর করে। সে সময় দেশটির রাষ্ট্রপ্রধান ছিলেন শাহ রেজা পাহলভি। ওই চুক্তির মাধ্যমে ইরান প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল যে, তারা কখনও পরমাণু অস্ত্র তৈরি করবে না এবং আইএইএ-এর পর্যবেক্ষণ ও নির্দেশনা অনুসরণ করবে।
তবে সাম্প্রতিক সময়ে ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনার মধ্যে এই পুরোনো চুক্তি নতুন করে বিতর্কের কেন্দ্রে চলে এসেছে। গত ৬ জুন এক বিবৃতিতে আইএইএ জানায়— ইরান যে মাত্রার সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম মজুত করেছে, তা দিয়ে পরমাণু বোমা তৈরি করা সম্ভব।
এই বিবৃতির মাত্র এক সপ্তাহ পর, ১৩ জুন দিবাগত রাতে ‘দ্য রাইজিং লায়ন’ নামের একটি সামরিক অভিযানে ইরানের ভূখণ্ডে বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল। পরে এক ভিডিওবার্তায় ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বলেন, “জাতিসংঘের পরমাণু সংস্থার বিবৃতিকে আমলে নিয়ে এই অভিযান পরিচালিত হয়েছে।”
ইরান বলছে, এই হামলার নেপথ্যে রয়েছে আইএইএ-এর কর্মকাণ্ড। ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমাইল বাঘাই ১৬ জুন এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে বলেন, “ইরানে ইসরায়েলি হামলার ক্ষেত্র প্রস্তুত করে দিয়েছে আইএইএ।”
এই পরিস্থিতিতে ইরানের আইনসভা 'মজলিশে' বুধবার একটি বিল পাস হয়েছে, যেখানে আইএইএ-এর সঙ্গে সম্পর্ক স্থগিতের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। বেশিরভাগ এমপি এই বিলের পক্ষে ভোট দিয়েছেন। তবে ইরানের সংবিধান অনুযায়ী, দেশটির পররাষ্ট্রনীতি নির্ধারণে সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। তিনি এখনো পর্যন্ত এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য করেননি।