বিজ্ঞাপন
ইরান-ইসরাইলের টানা ১২ দিনের সংঘাতের পর যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেও, মূল ইস্যু—ইরানের পরমাণু কর্মসূচি ধ্বংস হয়েছে কি না—তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই গেছে। যুক্তরাষ্ট্র দাবি করেছে, তারা ইরানের তিনটি স্থাপনায় হামলা চালিয়ে ‘ধ্বংস’ করেছে কর্মসূচি। কিন্তু ইরান বলছে, বাস্তবে তেমন কিছু হয়নি।
বিশ্লেষকদের মতে, ইরানের পারমাণবিক সক্ষমতা ধ্বংস না হওয়ার পেছনে রয়েছে অন্তত তিনটি বড় কারণ—
১. গোপন ও বিকল্প স্থাপনার অস্তিত্ব
নাতাঞ্জ, ইসফাহান ও ফোর্দো—এই তিনটি কেন্দ্র লক্ষ্য করে হামলা চালানো হলেও, ইরানের কর্মসূচি কেবল এগুলোর মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। আরও অনেক গোপন বা কম পরিচিত স্থাপনা রয়েছে, যেগুলোর অবস্থান নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি।
২. প্রযুক্তি ও দক্ষতা হস্তান্তরযোগ্য নয়
ইরান ইতোমধ্যেই পারমাণবিক প্রযুক্তির যথেষ্ট জ্ঞান ও দক্ষতা অর্জন করেছে। স্থাপনা ধ্বংস হলেও এই জ্ঞান কেউ কেড়ে নিতে পারবে না। প্রয়োজনে তারা আবার শুরু করতে পারবে।
৩. লুকানো ইউরেনিয়াম ও সম্ভাব্য গোপন পরিকল্পনা
বিশ্লেষকরা বলছেন, ইরান ৪০০ কেজির বেশি সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম লুকিয়ে রেখেছে, যা দিয়ে ৮–১০টি পারমাণবিক বোমা তৈরি সম্ভব। এটি এখন তাদের জন্য কৌশলগত প্রতিরক্ষা বলয়ের মতো। অনেকেই বলছেন, তারা হয়তো উত্তর কোরিয়ার পথ অনুসরণ করতে যাচ্ছে।
বিশ্লেষকদের মন্তব্য: ‘ধ্বংস নয়, বরং এখন ইরান আরও সাহসী’
দ্য গার্ডিয়ানের আন্তর্জাতিক বিশ্লেষক জুলিয়ান বার্গার বলেন, “ইরান টিকে গেছে, সেটাই তাদের বড় জয়। পরমাণু কর্মসূচির কিছু ক্ষতি হলেও, তাদের পরমাণু অস্ত্র বানানোর সক্ষমতা অক্ষত রয়েছে। এখন হয়তো তারা ভাবছে—পরমাণু বোমাই তাদের একমাত্র নিরাপত্তা।”
চাপ আসবে ইউরোপ-আমেরিকা থেকেও
পশ্চিমা বিশ্ব বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন আবারও ইরানের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ বন্ধের জন্য। এটা ইরানের সামনে বড় রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে।