প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস। ফাইল ছবি
বিজ্ঞাপন
মঙ্গলবার (১ জুলাই) রাজধানীর প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে আয়োজিত ‘জুলাই অভ্যুত্থান’ স্মরণে মাসব্যাপী কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “জুলাই ছিল মর্মবাণী, ফ্যাসিবাদী বিলাপ ছিন্ন করে নতুন বাংলাদেশ গড়ার। এই আন্দোলন ছিল গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের লড়াইয়ের ডাক। এখন আমাদের কাজ, যেন আবার গণঅভ্যুত্থানের জন্য অপেক্ষা করতে না হয়। স্বৈরাচারী শাসনের নতুন কোনো চক্রান্ত মাথাচাড়া দেওয়ার আগেই তা রুখে দিতে হবে।”
তিনি বলেন, “এই কর্মসূচির মূল লক্ষ্য জনগণকে তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার সম্পর্কে সচেতন করা, রাজনৈতিক দায়বদ্ধতার দাবি তোলা এবং কাঙ্ক্ষিত সংস্কারের সুযোগ যাতে হারিয়ে না যায়, তা নিশ্চিত করা। যে লক্ষ্যে ছাত্রজনতা শহীদ হয়েছেন, সে লক্ষ্য বাস্তবায়নে আমাদের আবার শপথ নিতে হবে। প্রতিবছর যেন জুলাই উদযাপন করা হয়, যাতে স্বৈরাচার কোনোভাবে মাথাচাড়া দিতে না পারে।”
প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে আয়োজিত অনুষ্ঠানে মাসব্যাপী কর্মসূচির সূচনা করা হয়। একইসঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয় ‘জুলাই ক্যালেন্ডার’।
নিহত শহীদদের স্মরণে দেশের সব ধর্মীয় উপাসনালয়ে (মসজিদ, মন্দির, গির্জা ও প্যাগোডা) বিশেষ দোয়া ও প্রার্থনার আয়োজন করা হয়।
এই উপলক্ষে একই দিনে শুরু হয়েছে ‘জুলাই খুনিদের’ বিচারের দাবিতে গণস্বাক্ষর অভিযান, যা চলবে আগামী ১ আগস্ট পর্যন্ত। পাশাপাশি, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে শহীদদের স্মরণে একটি শিক্ষাবৃত্তি কার্যক্রম চালু করা হয়েছে।
ঘোষিত মাসব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে ৫ জুলাই, ৭ জুলাই ও ১৪ জুলাই পৃথক কর্মসূচি পালন করা হবে। উদযাপনের চূড়ান্ত দিন হিসেবে চিহ্নিত ‘৩৬ জুলাই’—অর্থাৎ ৫ আগস্টকে কেন্দ্র করে হবে বৃহৎ আয়োজন।
এই দিনে শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধা নিবেদন, শহীদ পরিবারের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার সাক্ষাৎ, বিজয় মিছিল, এয়ার শো, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, ভিডিও-ডকুমেন্টারি প্রদর্শনী এবং ড্রোন শো অনুষ্ঠিত হবে।
২০২৪ সালের জুলাই মাসজুড়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে সারাদেশে ছাত্র-জনতা গণআন্দোলন গড়ে তোলে। এই আন্দোলনের চূড়ান্ত রূপ ঘটে ৫ আগস্টে, শেখ হাসিনা সরকারের পতনের মধ্য দিয়ে। ঐতিহাসিক এই রাজনৈতিক পরিবর্তন আজ ‘জুলাই বিপ্লব’ বা ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান’ নামে পরিচিত।