বিজ্ঞাপন
ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত বাজেট পরিকল্পনার কঠোর সমালোচনা করে মাস্ক বলেছেন, এটি দেশকে অনিয়ন্ত্রিত ঋণের পথে ঠেলে দিচ্ছে এবং জনগণের স্বার্থ উপেক্ষা করছে।
সোমবার (৩০ জুন) নিজের মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ দেওয়া পোস্টে মাস্ক বলেন, “এটা স্পষ্ট যে আমরা একদলীয় দেশের বাসিন্দা—নাম 'পোর্কি পিগ পার্টি'! এখন সময় নতুন একটি রাজনৈতিক দল গঠনের, যারা সত্যিই জনগণের কথা ভাববে।”
এই প্রতিক্রিয়ার সূত্রপাত মূলত একটি খসড়া ব্যয় পরিকল্পনা ঘিরে, যেখানে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ঋণসীমা ৫ ট্রিলিয়ন ডলার পর্যন্ত বাড়ানোর প্রস্তাব রাখা হয়েছে। মাস্ক এই পরিকল্পনাকে আখ্যায়িত করেছেন “পাগলামী পর্যায়ের খরচ” হিসেবে এবং যুক্তি দিয়েছেন যে, ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকান উভয় দলের রাজনীতিবিদরাই বাজেট ও ঋণ ইস্যুতে দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণ করছেন।
মাস্ক স্পষ্ট ভাষায় বলেন, “যদি এই পাগলামিপূর্ণ ব্যয় বিল পাস হয়, তাহলে পরদিনই ‘আমেরিকা পার্টি’ গঠিত হবে।” তার মতে, যুক্তরাষ্ট্রে বর্তমানে কার্যত একটি ‘ডেমোক্র্যাট-রিপাবলিকান ইউনিপার্টি’ কাজ করছে, যা জনগণের বাস্তব স্বার্থ উপেক্ষা করছে।
উল্লেখ্য, এর আগেও এই বিল নিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে প্রকাশ্যে বাকযুদ্ধে জড়িয়েছিলেন ইলন মাস্ক। যদিও পরবর্তীতে তার বক্তব্য কিছুটা নমনীয় হয়, কিন্তু এই বিতর্ক দেশটির শীর্ষ ব্যবসায়িক নেতাদের সঙ্গে রাজনৈতিক নেতৃত্বের দ্বন্দ্বকে আরও প্রকাশ্যে এনেছে।
মাস্কের এই মন্তব্যের পরে প্রযুক্তি ও শেয়ারবাজারেও দ্রুত প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। টেসলার শেয়ারের মূল্য তাৎক্ষণিকভাবে বড় ধরনের পতনের মুখে পড়ে, এবং কোম্পানির বাজারমূল্য থেকে প্রায় ১৫০ বিলিয়ন ডলার হারিয়ে যায়। যদিও পরে বাজার কিছুটা স্থিতিশীল হয়, তবে এই ঘটনা মার্কিন বাজারে রাজনৈতিক বিবৃতির তাৎক্ষণিক প্রভাব কতটা গভীর হতে পারে, তা স্পষ্ট করে দেয়।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ইলন মাস্কের এই বক্তব্য যুক্তরাষ্ট্রে তৃতীয় রাজনৈতিক শক্তি গঠনের জন্য নতুন মাত্রা যোগ করতে পারে। তবে বাস্তবতা হলো, দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রে দুটি প্রধান দলের বাইরে তৃতীয় শক্তির দীর্ঘমেয়াদি সাফল্য খুবই সীমিত। সাংবিধানিকভাবে নতুন দল গঠনের সুযোগ থাকলেও রাজনৈতিক কাঠামো, প্রচারযন্ত্র ও জনভিত্তির ঘাটতির কারণে নতুন দলগুলো টিকে থাকতে পারে না।
তবুও ইলন মাস্কের মতো একজন প্রভাবশালী উদ্যোক্তার সরাসরি রাজনৈতিক আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে। এখন দেখার বিষয়, মাস্কের প্রস্তাবিত ‘আমেরিকা পার্টি’ আদৌ বাস্তব রূপ পায় কিনা, নাকি এটিও বিগত দিনের মতই কোনো স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিক্রিয়া হয়েই থেকে যায়।