Logo Logo

মামুন ওরফে সাগরের প্রতারণার শিকার ১শত প্রবাসী, গোপালগঞ্জে সংবাদ সম্মেলন


Splash Image

সৌদি আরবে কর্মরত প্রায় ১০০ জন বাংলাদেশি প্রবাসী তাদের তিন মাসের কষ্টার্জিত বেতন হারিয়েছেন এক প্রতারকের ফাঁদে পড়ে।


বিজ্ঞাপন


গোপালগঞ্জ জেলার নিজড়া গ্রামের বাসিন্দা মামুন ওরফে সাগর, যিনি নিজেকে কখনো সাগর, কখনো আবদুল্লাহ নামে পরিচয় দেন, সৌদি আরবের এএজিসি ও এসিটি নামে দুটি সাপ্লাইয়ার কোম্পানির পরিচালক পরিচয় দিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে প্রবাসীদের অর্থ আত্মসাৎ করেন।

শনিবার (২৮ জুন) দুপুর ১২টায় গোপালগঞ্জ সদরের মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনের বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ইউনিয়ন কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সেখানে ভুক্তভোগী প্রবাসীদের পরিবার ও স্বজনরা উপস্থিত হয়ে প্রতারক মামুন ও তার সহযোগীদের বিচারের দাবিতে মুখ খুলেন।

সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী প্রবাসীদের পরিবারের সদস্যরা জানান, মামুন তাদের প্রিয়জনদের বিদেশে কাজ দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে সৌদি আরব নিয়ে গিয়ে সেখানে তিন মাস কাজ করানোর পর বেতন না দিয়ে গা-ঢাকা দেন। অনেক প্রবাসী এখন সেদেশে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। তারা বেতন তো পাননি, উপরন্তু খাবার ও বাসা ভাড়ার টাকাও এখন বাংলাদেশ থেকে পরিবার পাঠাচ্ছে।

হরিদাসপুরের বাসিন্দা আবু সামা শেখ বলেন, “আমি আমার সবকিছু বিক্রি করে ছেলেকে বিদেশ পাঠিয়েছি। কিন্তু মামুন তার প্রায় ৫ লক্ষ টাকা মেরে দিয়েছে। এখন ছেলে খাওয়ার টাকার জন্য কান্নাকাটি করে, আমি কষ্ট করে টাকা পাঠাই।” তিনি অভিযোগ করেন, মামুন এই টাকা দিয়ে তার বোন জামাই আল-আমিন সোহেলকে দিয়ে ইসলামপুরে কাপড়ের ব্যবসা করাচ্ছেন।

একই রকম অভিযোগ করেন টুঙ্গিপাড়ার গিমাডাঙ্গার ওয়াশিমের স্ত্রী। কাঁদতে কাঁদতে তিনি জানান, “আমার স্বামী প্রতারকের পাল্লায় পড়ে ২০ লক্ষ টাকা হারিয়েছে। এখন আমরা দেশে-বিদেশে দুজনেই অসহায় জীবন যাপন করছি। সরকার যেন আমাদের এই কষ্টের টাকা ফেরত দিতে সাহায্য করে।”

সংবাদ সম্মেলনে আরো বলা হয়, মামুন ও তার পরিবারের সদস্যরা, যেমন ভাই মোহাম্মদ সোহাগ শেখ, বোন জামাই মোহাম্মদ আল-আমিন ওরফে সোহেল এবং শ্বশুর মনির মোল্লা—এই প্রতারণার সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত। অভিযোগ করতে গেলে তারা উল্টো ভুক্তভোগীদের হুমকি ও মামলা করার ভয় দেখাচ্ছে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন প্রবাসী নাদিম শেখের স্ত্রী রেশমা বেগম, শফিকুল ইসলামের স্ত্রী শারমিন, ওয়াশিমের স্ত্রী হুমায়রা বেগমসহ আরও অনেকে। তারা সকলেই প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, “আমরা চাই এই প্রতারক চক্রের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক এবং আমাদের প্রবাসী স্বজনদের কষ্টের টাকা যেন দ্রুত ফেরত দেওয়া হয়।”

এই ভয়ঙ্কর প্রতারণার ঘটনায় সমাজে চরম ক্ষোভ ও হতাশার সৃষ্টি হয়েছে। ভুক্তভোগীদের পরিবারগুলো সরকার ও প্রশাসনের কাছে দ্রুত হস্তক্ষেপ ও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।

প্রতিবেদক - এ.জেড আমিনুজ্জামান রিপন, গোপালগঞ্জ।

বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন

আরো দেখুন


বিজ্ঞাপন

পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...