Logo Logo

ফর্মহীনতার বৃত্তেই আটকে ‘লিটন দাস’, প্রশ্নের মুখে নির্বাচকরা


Splash Image

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এক দশক পার করে ফেলেছেন লিটন দাস। শুরুটা ছিল সম্ভাবনাময়। ছিলেন আস্থার প্রতীক। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সে আস্থা এখন প্রশ্নবিদ্ধ।


বিজ্ঞাপন


সাদা বলের ক্রিকেটে লম্বা সময় ধরে বাজে ফর্মে থাকা এই ব্যাটারকে নিয়ে এখন নির্বাচকদের চোখে-মুখে চাপা দুশ্চিন্তার রেখা।

একসময় দলে ‘অটো চয়েস’ হিসেবে বিবেচিত হওয়া লিটন দাসকে বাদ পড়তে হয়েছিল বাজে পারফরম্যান্সের কারণেই। এরপর ঘরোয়া লিগেও উল্লেখযোগ্য কিছু করে দেখাতে পারেননি তিনি। তবুও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হঠাৎ করেই ওয়ানডে দলে জায়গা করে নেন। সেই সঙ্গে পেয়েছেন টি-টোয়েন্টি দলের নেতৃত্বও। বিসিবির আস্থার জায়গায় থাকলেও মাঠে সেই আস্থার প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে না—এটাই এখন সবচেয়ে বড় সংকট।

লিটনের এই অন্তর্ভুক্তি নিয়ে শুরু থেকেই প্রশ্ন উঠেছে। নির্বাচকরা আসলে কোন প্রক্রিয়ায় তাকে দলে নিয়েছেন—তা নিয়েই তৈরি হয়েছে আলোচনা। তবে ওয়ানডে স্কোয়াড ঘোষণার দিন প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেন লিপু বলেছিলেন,

“শেষ সিরিজে লিটন দাস ছিলেন না। আপনারা জানেন, সে সময় তিনি একটু খারাপ সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিলেন। একটা সময় তিনি ছিলেন আমাদের সেরা ফিনিশারদের একজন। সেই কারণে এবং তিনি এখন টি-টোয়েন্টি দলের অধিনায়কও হয়েছেন।”

কিন্তু ঘোষণার ঠিক দশ দিনের ব্যবধানেই ফের ব্যর্থতার পরিচয় দিলেন লিটন দাস। কলম্বোতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে চার বল খেলে শূন্য রানে আউট হন। সেটাও আবার চার নম্বরে ব্যাট করতে নেমে। সাম্প্রতিক পরিসংখ্যানও হতাশাজনক। শেষ ১০ ওয়ানডে ইনিংসে লিটনের রান মাত্র ৩৫। এর মধ্যে ৪ ম্যাচে আউট হয়েছেন ডাক মেরে। এমন পরিসংখ্যানে যে কোনো ক্রিকেটপ্রেমীর মনে প্রশ্ন জাগে—আসলে কি জাতীয় দলে খেলার যোগ্যতা এখনো রাখেন লিটন?

বিসিবির এক পরিচালক হতাশা গোপন করতে পারেননি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি বলেন,

“কিছুই বলার নেই আসলে। সিনিয়ররা যদি এখনো দলের হাল ধরতে না পারেন তাহলে আর কবে?”

বিসিবির মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান ইফতেখার আহমেদ মিঠুও স্পষ্ট ভাষায় হতাশা প্রকাশ করেন,

“এই অভিজ্ঞ ক্রিকেটার যদি এমন ফিল করে (ক্রিকেট খেলে)। এটা তো বলার কিছু নেই। ব্যাট হাতে ধারাবাহিকতার এতই অভাব!”

তিনি মনে করেন, ফর্মহীন অবস্থায় খেলোয়াড়দের আরও বেশি মনোযোগ দেওয়া উচিত অনুশীলনে। উদাহরণ টানলেন অভিজ্ঞ ব্যাটার মুশফিকুর রহিমের:

“আউট অফ ফর্ম হতে পারে। তখন অবশ্যই অনুশীলনের দিকে মনোযোগটা বেশি বাড়াতে হবে। যে রকমটা মুশফিক করে থাকে। এ ছাড়া ঘরোয়াতে ভালো খেলার পরেও আন্তর্জাতিকে এসে অনেকে ভালো খেলতে পারে না। তরুণরাও ভালো করতে পারছে না।”

লিটনের সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না—জানতে চাইলে ওই পরিচালক বলেন,

“এখনো লিটনের সাথে কোনো কথা হয়নি, তবে এমন ব্যাটিং খুবই হতাশজনক। আমরা স্পিন বল খেলতে পারি না, বাউন্সার খেলতে পারি না, তাহলে কি খেলতে পারি?”

প্রশ্ন অনেক, উত্তর অনিশ্চিত। তবে নিশ্চিত একটি বিষয়—লিটনের ব্যর্থতা এখন আর নিছক খারাপ সময় হিসেবে দেখছে না কেউ, বরং তা হয়ে উঠছে জাতীয় দলের জন্য দীর্ঘমেয়াদি চিন্তার কারণ।

বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন

আরো দেখুন


বিজ্ঞাপন

পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...