ছবি : সংগৃহীত।
বিজ্ঞাপন
এ উপলক্ষে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে কুচকাওয়াজ পরিদর্শন ও নবীন সৈনিকদের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে অংশ নেন বিজিবির মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বিজিবি ডিজি বলেন, “দেশ মাতৃকার অখণ্ডতা রক্ষায় নবীন সৈনিকেরা প্রয়োজনে তাদের জীবন উৎসর্গ করবে, তবু দেশের এক ইঞ্চি মাটিও হাতছাড়া হতে দেবে না।” তিনি আরও বলেন, “নবীন সৈনিকেরা কখনো দেশবাসীকে হতাশ করবে না। তাদের দেওয়া নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তাই দেশের মানুষের শান্তিপূর্ণ জীবন নিশ্চিত করবে।”
সকাল সাড়ে ৯টায় সশস্ত্র সালামের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয় সমাপনী কুচকাওয়াজ। অনুষ্ঠানে বিজিটিসিএন্ডসির কমান্ড্যান্ট ব্রিগেডিয়ার জেনারেল গাজী নাহিদুজ্জামান সহ বিজিবি ও অন্যান্য বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বেসামরিক প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি এবং গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
বক্তব্যের শুরুতেই ডিজি বিজিবি ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী তৎকালীন ইপিআরের ৮১৭ জন বীর শহীদ এবং ২০২৪ সালের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শহীদ ছাত্র-জনতাদের গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করেন। আহতদের জন্যও তিনি দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন।
বিজিবি ডিজি বলেন, “সীমান্তের অতন্দ্র প্রহরী খ্যাত এই বাহিনী ৪ হাজার ৪২৭ কিলোমিটার সীমান্ত সুরক্ষা, মাদক-অস্ত্র চোরাচালান প্রতিরোধ, নারী ও শিশু পাচার রোধ এবং দেশের অভ্যন্তরীণ আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তায় বিশেষ ভূমিকা রেখে চলেছে।”
তিনি নবীন সৈনিকদের 'মনোবল, ভ্রাতৃত্ববোধ, শৃঙ্খলা ও দক্ষতা'—এই চার মূলমন্ত্রে উদ্বুদ্ধ হয়ে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান। বলেন, “শৃঙ্খলা হচ্ছে সৈনিক জীবনের অলংকার। আদেশ ও কর্তব্য পালনে পিছপা না হওয়াই প্রকৃত সৈনিকের পরিচয়। সততা, বুদ্ধিমত্তা, আনুগত্য, তেজ ও উদ্দীপনার মধ্য দিয়েই একজন সৈনিক পেশাগত উৎকর্ষে পৌঁছাতে পারে।”
নারী সৈনিকদের উদ্দেশ্যে ডিজি বলেন, “মহান মুক্তিযুদ্ধে নারীদের অবদান অবিস্মরণীয়। আজকের নবীন নারী সৈনিকরা দেশপ্রেম, নিষ্ঠা ও দক্ষতার সঙ্গে বিজিবির গৌরবময় উত্তরাধিকার রক্ষায় অগ্রণী ভূমিকা রাখবে।”
অনুষ্ঠানে তিনি ১০৩তম ব্যাচের সেরা রিক্রুট হিসেবে চৌকস সৈনিক বক্ষ নম্বর-৫৭৪ সাইফ মিয়া সহ অন্যান্য কৃতী সৈনিকদের হাতে ক্রেস্ট তুলে দেন।
উল্লেখ্য, এ ব্যাচের মৌলিক প্রশিক্ষণ শুরু হয়েছিল ২০২৫ সালের ২৬ জানুয়ারি। দীর্ঘ ২৪ সপ্তাহের কঠোর প্রশিক্ষণ শেষে ৬৫৮ জন পুরুষ এবং ৩৬ জন নারীসহ মোট ৬৯৪ জন নবীন সৈনিক আজ আনুষ্ঠানিকভাবে শপথ গ্রহণ করে সৈনিক জীবনে পদার্পণ করেন।
অনুষ্ঠানের শেষাংশে আকর্ষণীয় ট্রিক ড্রিল ও ব্যান্ড ডিসপ্লে প্রদর্শনের মাধ্যমে কুচকাওয়াজ সমাপ্ত হয়।