বিজ্ঞাপন
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক কাজী তরিকুল ইসলাম সুনানের বাড়িতে সংঘটিত এই ঘটনায় এলাকায় চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে।
গত রোববার দিবাগত রাত আনুমানিক ২টা থেকে ৩টার মধ্যে ৭-৮ জনের একটি সশস্ত্র ডাকাতদল গ্রীল কেটে বাড়িতে প্রবেশ করে। এরপর অস্ত্রের মুখে পরিবারের সদস্যদের হাত-পা, মুখ ও চোখ বেঁধে জিম্মি করে ফেলে। ডাকাতরা আলমিরা ও শোকেস থেকে ১৩ ভরি স্বর্ণালঙ্কার এবং নগদ ৫০ হাজার টাকা লুট করে। সবচেয়ে নির্মম ঘটনা, ওই সময় ঘরে থাকা আমেরিকা প্রবাসী নববধূকে পাশের কক্ষে নিয়ে চারজন ডাকাত পালাক্রমে ধর্ষণ করে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, একতলা ভবনের প্রতিটি কক্ষে তাণ্ডব চালিয়েছে ডাকাত দল। ভাঙচুর করা হয়েছে আলমিরা, শোকেসসহ ঘরের আসবাবপত্র ও গৃহস্থালির অন্যান্য মালামাল। এমন অমানবিক ঘটনার পর কাজী সুনানের মা, বোনসহ পরিবারের সদস্যরা চরম আতঙ্ক ও মানসিক বিপর্যয়ে রয়েছেন।
ভুক্তভোগী শিক্ষক কাজী তরিকুল ইসলাম সুনান জানান, “ডাকাতরা প্রথমে বারান্দার গ্রীল কেটে ঘরে ঢুকে। পরে আমাদের সবাইকে একটি কক্ষে নিয়ে হাত-পা ও চোখ বেঁধে জিম্মি করে। অস্ত্রের মুখে তারা আলমিরা ও শোকেসের চাবি নেয় এবং সেগুলো খুলে স্বর্ণালঙ্কার ও টাকা নিয়ে যায়। আমাকে তারা শয়নকক্ষে বেঁধে ফেলে রাখে। এরপর আমার স্ত্রীকে পাশের রুমে নিয়ে গিয়ে চারজন মিলে পাশবিক নির্যাতন চালায়।”
জানা যায়, সুনান চলতি বছরের মে মাসের প্রথম সপ্তাহে সিলেটের বাসিন্দা, আমেরিকা প্রবাসী এক তরুণীকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর নববধূ পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় স্বামীর সঙ্গে বসবাস শুরু করেন।
ঘটনার খবর পেয়ে সোমবার বিকেলে পটুয়াখালীর পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আনোয়ার জাহিদ, ডিবি পুলিশের সদস্যসহ জেলা পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তারা ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করেন।
কলাপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ জুয়েল ইসলাম জানান, “ভুক্তভোগী নববধূর ডাক্তারি পরীক্ষা পটুয়াখালীতে সম্পন্ন হয়েছে এবং আজ মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) তার জবানবন্দী গ্রহণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে শাকিল ও রাসেল নামে সন্দেহভাজন দুইজনকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় কলাপাড়া থানায় ডাকাতি (দণ্ডবিধির ৩৯৫ ও ৩৯৭ ধারা) এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯(৩) ধারায় মামলা রুজু হয়েছে।”
এ ঘটনায় স্থানীয়রা হতবাক ও ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তারা দ্রুততম সময়ের মধ্যে অপরাধীদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
প্রতিবেদক - জাকারিয়া জাহিদ, কলাপাড়া, পটুয়াখালী।