ছবি : সংগৃহীত।
বিজ্ঞাপন
হামলার পর বন্দুকধারী নিজেই আত্মহত্যা করেছেন বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা এসোসিয়েটেড প্রেস (এপি)।
পুলিশ জানায়, সোমবার (২৯ জুলাই) স্থানীয় সময় সকালে নিউইয়র্কের পার্ক অ্যাভিনিউর একটি উচ্চ নিরাপত্তাসম্পন্ন অফিস ভবনে বন্দুকধারী শেন তামুরা (লাস ভেগাসের বাসিন্দা) এই হামলা চালান। হামলার কারণ এখনো পরিষ্কার নয়, তবে তার মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে পূর্ব ইতিহাস রয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।
নিহত পুলিশ কর্মকর্তা দিদারুল ইসলাম ছুটিতে ছিলেন। তিনি নিউইয়র্ক পুলিশ বিভাগে তিন বছর ছয় মাস কর্মরত ছিলেন। তাঁর স্ত্রী সন্তানসম্ভবা এবং তার দুটি ছোট সন্তান রয়েছে।
নিউইয়র্ক পুলিশ কমিশনার জেসিকা টিশ বলেন, “তিনি যেমন বেঁচেছেন, তেমনই বিদায় নিয়েছেন— একজন বীরের মতো।”
নিরাপত্তা ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গেছে, হামলাকারী একটি বিএমডব্লিউ গাড়ি থেকে নেমে এম৪ রাইফেল হাতে ভবনের দিকে এগিয়ে যান। প্রবেশ করেই তিনি দিদারুল ইসলামকে গুলি করেন এবং একটি নারীকে লক্ষ্য করে গুলি চালান, যিনি আশ্রয়ের চেষ্টা করছিলেন।
এরপর লবিতে প্রবেশ করে এলোপাতাড়ি গুলি চালান বন্দুকধারী। এলিভেটরের দিকে যাওয়ার সময় নিরাপত্তা ডেস্কের পেছনে লুকিয়ে থাকা একজন নিরাপত্তাকর্মী ও আরেকজন ব্যক্তিকে গুলি করেন। এরপর তিনি ৩৩ তলায় উঠে একটি রিয়েল এস্টেট প্রতিষ্ঠানে আরেকজনকে হত্যা করে নিজেই গুলি করে আত্মহত্যা করেন।
পুলিশ তার গাড়ি থেকে একটি রাইফেল কেস, একটি রিভলভার, গুলি ও ম্যাগাজিন উদ্ধার করেছে।
ভবনের দ্বিতীয় তলায় থাকা জেসিকা চেন নামের এক নারী জানান, তিনি একটি উপস্থাপনায় অংশ নিচ্ছিলেন, তখন হঠাৎ নিচ থেকে একের পর এক গুলির শব্দ শুনতে পান।
তিনি বলেন, “আমরা সবাই খুব ভয় পেয়েছিলাম। সবাই মিলে একটি কনফারেন্স রুমে গিয়ে দরজায় টেবিল ঠেলে আটকে দিই।”
তিনি আরও জানান, তিনি তখনই তার বাবা-মাকে ভালোবাসার কথা জানিয়ে বার্তা পাঠান।
নিউইয়র্ক সিটির মেয়র এরিক অ্যাডামস বলেন, “পাঁচজন নিরপরাধ মানুষকে গুলি করা হয়েছে। আহতদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।” তিনি ঘটনার দ্রুত তদন্ত এবং নিরাপত্তা পুনর্মূল্যায়নের আশ্বাস দেন।
ঘটনার পর সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিটে নিউইয়র্ক ফায়ার সার্ভিস ভবনে পৌঁছে উদ্ধার কাজ শুরু করে। ভবনটিতে দেশের শীর্ষ আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও ন্যাশনাল ফুটবল লিগ (এনএফএল)-এর অফিস রয়েছে। ভবনটিতে ব্ল্যাকস্টোন ও আয়ারল্যান্ড কনসুলেটের কার্যালয়ও রয়েছে।
পুলিশ কমিশনার জানিয়েছেন, ভবনটিতে নিউইয়র্ক পুলিশের দুটি ইউনিট বেসরকারিভাবে নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিল।
উল্লেখ্য, চলতি বছর জুলাই পর্যন্ত নিউইয়র্কে গুলি সংক্রান্ত সহিংসতা ও খুনের হার গত কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে কম ছিল। তবে এই মর্মান্তিক হামলা শহরের নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে নতুন করে ভাবনার মুখে ফেলেছে।
জনপ্রিয়
পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...