ছবি : সংগৃহীত।
বিজ্ঞাপন
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় শুক্রবার হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। আল জাজিরার প্রচারিত এক ভিডিওচিত্রে দেখা যায়, একটি ইসরায়েলি কোয়াডকপ্টার শেখ রাদওয়ান এলাকার একটি স্কুল ভবনের ওপর ঘুরপাক খাচ্ছিল। স্থানীয় বাসিন্দারা আতঙ্কে সেটি পর্যবেক্ষণ করছিলেন। কিছুক্ষণ পর ওই কোয়াডকপ্টার বিস্ফোরক ফেললে অন্তত ১২ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হন। উল্লেখ্য, ওই স্কুল ভবনে অনেক ফিলিস্তিনি অস্থায়ীভাবে আশ্রয় নিয়েছিলেন।
আল-আহলি হাসপাতালের একটি সূত্র আল জাজিরাকে জানিয়েছে, গাজা সিটির তুফাহ এলাকায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় আরও একজন নিহত হয়েছেন।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, দুর্ভিক্ষ ও অপুষ্টিতে নতুন করে দুজনের মৃত্যু হয়েছে, যার মধ্যে একটি শিশু রয়েছে। এ নিয়ে গাজায় দুর্ভিক্ষ-সম্পর্কিত মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৭৩ জনে, যাদের মধ্যে ১১২ জন শিশু। মন্ত্রণালয়ের ভাষ্য, বহু মানুষ এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে কিংবা রাস্তায় আটকা রয়েছেন। ইসরায়েলি বোমা হামলা ও উদ্ধার সরঞ্জামের অভাবে উদ্ধারকর্মীরা তাদের কাছে পৌঁছাতে পারছেন না।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৮ মার্চ থেকে ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি ও বন্দী বিনিময় চুক্তি ভেঙে সামরিক অভিযান পুনরায় শুরুর পর এখন পর্যন্ত ১০ হাজার ৭১৭ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ৪৫ হাজার ৩২৪ জন আহত হয়েছেন।
এদিকে মানবিক সহায়তা নিতে আসা বেসামরিকদের ওপরও হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। শুধু গত ২৪ ঘণ্টায় এমন হামলায় ২৪ জন নিহত এবং ১৩৩ জন আহত হয়েছেন। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, ২৭ মে থেকে মানবিক সহায়তা নিতে গিয়ে ২ হাজার ৬০ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১৫ হাজার ১৯৭ জন আহত হয়েছেন।
এর আগে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, হামাস যুদ্ধ শেষ করতে ইসরায়েলের শর্ত না মানলে গাজার বৃহত্তম শহর ধ্বংস করে দেওয়া হবে। এক্স (সাবেক টুইটার) প্ল্যাটফর্মে দেওয়া এক পোস্টে তিনি লেখেন, “গাজায় হামাসের খুনি ও ধর্ষকদের মাথার ওপর খুব শিগগিরই নরকের দরজা খুলে যাবে।”
তিনি ইসরায়েলের যুদ্ধবিরতি শর্তগুলোও উল্লেখ করেন—সমস্ত বন্দিকে মুক্তি এবং হামাসের সম্পূর্ণ নিরস্ত্রীকরণ। তবে হামাস জানিয়েছে, ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার নিশ্চয়তা ছাড়া তারা নিরস্ত্রীকরণে রাজি নয়।
গত মার্চ থেকে ইসরায়েলের পূর্ণ অবরোধ গাজার ২৪ লাখ মানুষের জন্য ভয়াবহ সংকট তৈরি করেছে। খাদ্য ঘাটতি, দুর্ভিক্ষ, মহামারির আশঙ্কা এবং জরুরি সেবা ভেঙে পড়ায় মানবিক বিপর্যয় ক্রমেই গভীর হচ্ছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি হামলায় এ পর্যন্ত অন্তত ৬২ হাজার ২৬৩ জন নিহত এবং ১ লাখ ৫৭ হাজার ৩৬৫ জন আহত হয়েছেন। অন্যদিকে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের হামলায় ইসরায়েলে ১ হাজার ১৩৯ জন নিহত এবং ২০০ জনের বেশি মানুষ জিম্মি হয়েছিলেন।
সূত্র: আনাদোলু এজেন্সি, আল জাজিরা
জনপ্রিয়
বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...