Logo Logo

বিদেশিদের জন্য মালয়েশিয়ায় স্থায়ীভাবে বসবাসের সুযোগ, জানুন শর্তসহ আবেদনের পুরো প্রক্রিয়া


Splash Image

সেলাঙ্গরের বাটু কেভসের দৃষ্টিনন্দন গুহা থেকে শুরু করে কুয়ালালামপুরের উঁচু আকাশছোঁয়া অট্টালিকা— মালয়েশিয়া এমন এক দেশ, যা ভ্রমণকারীদের সেখানে দীর্ঘ সময় থাকার জন্য আকৃষ্ট করে। আর এখন দেশটি বিদেশি নাগরিকদের জন্য আরও এক আকর্ষণীয় সুযোগ নিয়ে এসেছে।


বিজ্ঞাপন


ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, মালয়েশিয়া এখন বিদেশি নাগরিকদের স্থায়ী বসবাসের (পারমানেন্ট রেসিডেন্সি/পিআর) সুবিধা দিচ্ছে। পিআর পাওয়া ব্যক্তিরা দেশটিতে বসবাস, কাজ এবং পড়াশোনার অনুমতি পাবেন। যদিও এটি নাগরিকত্বের সব সুবিধা দেয় না, যেমন ভোটাধিকার পাওয়া যায় না, তবে পিআর সুবিধা অস্থায়ী ভিসাধারীদের তুলনায় অনেক বেশি স্বাধীনতা দেয়। পিআরধারী ব্যক্তিরা স্থানীয়দের মতো স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা এবং ব্যবসায়িক সুযোগ সুবিধা ভোগ করতে পারেন।

কারা আবেদন করতে পারবেন?

পিআর সুবিধা সবাইকে দেওয়া হয় না। এটি একটি যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে অনুমোদিত হয়। মূল শর্তগুলো হলো—

* দক্ষ পেশাজীবীরা, যারা বৈধ এমপ্লয়মেন্ট পাসে অন্তত ৫ বছর মালয়েশিয়ায় কাজ করেছেন অথবা কোনো প্রাসঙ্গিক সরকারি সংস্থার সুপারিশ পেয়েছেন।

* বিদেশি বিনিয়োগকারী যারা অন্তত ৫০ লাখ রিঙ্গিত (প্রায় ২০ লাখ মার্কিন ডলার) মালয়েশিয়ার কোনো ব্যাংকে ৫ বছরের জন্য স্থায়ী আমানত হিসেবে রাখবেন।

* যেসব বিদেশির বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, চিকিৎসা বা শিল্পকলা বিষয়ে বিশেষ দক্ষতা রয়েছে।

* বিদেশি নাগরিক যারা মালয়েশিয়ার নাগরিককে বিয়ে করেছেন এবং টানা ৫ বছর সেখানে বসবাস করেছেন।

এছাড়া মালয়েশিয়া ‘মাই সেকেন্ড হোম’ (MM2H) নামে একটি বিশেষ কর্মসূচিও চালু রেখেছে, যা সরাসরি পিআর না হলেও দেশটিতে টানা ১০ বছর বসবাসের সুযোগ দেয়। নির্দিষ্ট আর্থিক শর্ত পূরণকারীদের জন্য এটি ভবিষ্যতে পিআর পাওয়ার একটি পথ হিসেবে কাজ করবে।

কীভাবে আবেদন করবেন?

মালয়েশিয়ার ইমিগ্রেশন বিভাগ পিআর আবেদন প্রক্রিয়া পরিচালনা করে। আবেদন করতে হলে প্রয়োজন—

* পূর্ণাঙ্গ পিআর আবেদনপত্র

* বৈধ পাসপোর্ট ও ভিসার কপি

* চাকরি, বিনিয়োগ বা বিবাহের প্রমাণপত্র

* প্রাসঙ্গিক মন্ত্রণালয়ের সুপারিশপত্র

* আর্থিক সক্ষমতার প্রমাণপত্র

ধাপে ধাপে আবেদনের প্রক্রিয়া:

১. প্রথমে যোগ্যতা যাচাই করুন।

২. প্রয়োজনীয় সব নথি সংগ্রহ করুন।

৩. সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সুপারিশ বা অবদান রাখার প্রমাণ নিন।

৪. আবেদন জমা দিন মালয়েশিয়ার ইমিগ্রেশন দপ্তরের প্রধান কার্যালয় (পুত্রজায়া) বা প্রাদেশিক অফিসে। এ সময় প্রসেসিং ফি দিতে হবে ৫০০ রিঙ্গিত (প্রায় ১৪,৪০০ টাকা)।

৫. ইমিগ্রেশন কমিটি আবেদন পর্যালোচনা করবে।

৬. অনুমোদনের জন্য অপেক্ষা করতে হবে ২ থেকে ৫ বছর।

৭. আবেদন অনুমোদিত হলে প্রবেশ ফি দিতে হবে ১,৫০০ রিঙ্গিত (প্রায় ৪৩,০০০ টাকা)। নির্ভরশীল সদস্যদের জন্য বাড়তি ফি প্রযোজ্য হতে পারে।

৮. সবশেষে আবেদনকারীকে একটি নীল পরিচয়পত্র (MyPR কার্ড) দেওয়া হবে, যা মালয়েশিয়ার স্থায়ী বাসিন্দা হিসেবে তার পরিচয় নিশ্চিত করবে।

মালয়েশিয়া এখন বিদেশি নাগরিকদের জন্য দীর্ঘমেয়াদি বসবাসের একটি সুসংগঠিত পথ খুলে দিয়েছে। দক্ষ পেশাজীবী, বিনিয়োগকারী এবং বিশেষ যোগ্যতার মানুষদের জন্য এটি দেশটিতে স্থায়ীভাবে বসবাসের স্বপ্ন পূরণের এক সুবর্ণ সুযোগ।

বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন

আরো দেখুন


বিজ্ঞাপন

পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...