গাজা সিটিতে টানা হামলা, একদিনেই প্রাণ হারালেন অন্তত ২১ জন। ছবি- সংগৃহিত
বিজ্ঞাপন
গাজা সিটির মানুষদের আবারও দক্ষিণে সরিয়ে যেতে নির্দেশ দিয়েছে ইসরায়েলি সেনারা। শনিবার দিনের শুরু থেকে টানা হামলায় অন্তত ২১ জন নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ১৩ জনই গাজা সিটির বাসিন্দা। ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, শুধু বোমা হামলায় নয়—ক্ষুধা ও চিকিৎসার অভাবেও আরও ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে গত ২৪ ঘণ্টায়।
গাজার জেইতুন এলাকায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় একটি বাড়ি ধসে পড়ে। ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে উদ্ধার করা হয় এক বাসিন্দার লাশ। চারপাশের বাড়িঘর মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। এদিকে খান ইউনিসের আমাল এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ি দেখতে গিয়ে ড্রোন হামলায় আহত হয়েছেন ছয় ফিলিস্তিনি।
শাতি শরণার্থী ক্যাম্পে একটি বাড়িতে ইসরায়েলি গোলাবর্ষণে নিহত হয়েছেন অন্তত পাঁচজন, যার মধ্যে একটি শিশু রয়েছে। অন্যদিকে, খাদ্য সহায়তার জন্য অপেক্ষমাণ তিন ফিলিস্তিনিকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় ইসরায়েলি সেনারা।
বাসিন্দাদের অভিযোগ, আশ্রয়ের কোনো নিরাপদ জায়গা আর নেই। গাজা সিটির এক বাসিন্দা আব্দেল নাসের মুস্তাহা বলেন, “চাইলে সরে যাই, আবার চাইলে থাকি—তাতে কোনো পার্থক্য হয় না। মৃত্যু আমাদের সর্বত্র পিছু নেয়। কখনো বোমায়, কখনো ক্ষুধায়।”
বিশ্লেষকদের মতে, ইসরায়েলের এই পদক্ষেপ আসলে ফিলিস্তিনিদের জোর করে দক্ষিণে ঠেলে দেওয়ার কৌশল। মধ্যপ্রাচ্য বিশ্লেষক লুসিয়ানো জাকারার ভাষ্য, “এটি কোনো স্বেচ্ছায় সরিয়ে নেওয়া নয়, বরং মৃত্যুভয় দেখিয়ে মানুষকে দক্ষিণে জড়ো করা হচ্ছে।” এতে মিশরও বড় ধরনের রাজনৈতিক চাপের মুখে পড়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
অন্যদিকে ইউরোপীয় কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশনস–এর গবেষক তাহানি মুস্তাফা বলেন, “ইসরায়েল যে সর্বোচ্চ ধ্বংস আর সমষ্টিগত শাস্তির নীতি মেনে চলছে, তা আর আড়াল করার কিছু নেই। গত দুই বছরে তাদের কোনো পদক্ষেপকেই নিয়মতান্ত্রিক সামরিক অভিযান বলা যায় না।”
অবরোধ, ক্ষুধা ও ধারাবাহিক হামলায় গাজার সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা এখন ভয়াবহ অমানবিক সংকটে নিমজ্জিত।
সূত্র- আল জাজিরা
জনপ্রিয়
বিজ্ঞাপন
পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...