বিজ্ঞাপন
সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার কাতারের রাজধানী দোহায় হামাস নেতাদের একটি বৈঠক লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালানো হয়। বৈঠকটি মূলত গাজা যুদ্ধবিরতির মার্কিন প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করার জন্য আহ্বান করা হয়েছিল।
হামলায় প্রাণ হারান অন্তত ছয়জন—যাদের মধ্যে ছিলেন হামাসের জ্যেষ্ঠ নেতা খালিল আল-হায়্যার ছেলে, তার কার্যালয়ের পরিচালক, তিনজন দেহরক্ষী এবং একজন কাতারি নিরাপত্তাকর্মী। তবে শীর্ষ নেতারা বেঁচে গেছেন।
এটি গত ৭২ ঘণ্টায় ইসরায়েলের ষষ্ঠ বিদেশি হামলা এবং চলতি বছরের মধ্যে সপ্তম।
সোমবার থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি হামলায় গাজায় অন্তত ১৫০ জন নিহত এবং ৫৪০ জনের বেশি আহত হয়েছেন। বিশেষত সোমবার ৬৭ জন নিহত ও ৩২০ জন আহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ১৪ জন মারা যান ত্রাণ সংগ্রহের সময় এবং আরও ছয়জন — যার মধ্যে দুই শিশু — অনাহারে। মঙ্গলবার নিহত হন আরও ৮৩ জন, আহত হয়েছেন ২২৩ জন।
ইসরায়েলি বাহিনী গাজা সিটিতে উঁচু ভবন, অবকাঠামো ও ঘরবাড়ি ধ্বংস করছে, ফলে বহু মানুষ আশ্রয়হীন হয়ে পড়ছেন। ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া যুদ্ধে গাজায় এখন পর্যন্ত অন্তত ৬৪,৬৫৬ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ৪০৪ জন অনাহারজনিত কারণে মারা গেছেন। ধ্বংসস্তূপের নিচে আরও অনেকে নিখোঁজ রয়েছেন।
সোমবার লেবাননের বেকা ও হারমেল জেলায় বিমান হামলায় অন্তত পাঁচজন নিহত হন। ইসরায়েল দাবি করেছে, তারা হিজবুল্লাহর অস্ত্রগুদাম ও সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করেছে। একই দিনে বৈরুতের দক্ষিণে বারজা গ্রামে ইসরায়েলি ড্রোন হামলায় হিজবুল্লাহর একজন সদস্য আহত হন।
সোমবার রাতে সিরিয়ার হোমসের একটি বিমানঘাঁটি ও লাতাকিয়ার কাছে একটি সামরিক ব্যারাকে হামলা চালানো হয়। সিরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এটিকে রাষ্ট্রীয় সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন ও আঞ্চলিক নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে অভিহিত করেছে। চলতি বছরের মধ্যে সিরিয়ার সামরিক অবকাঠামো লক্ষ্য করে প্রায় ১০০টি হামলায় অন্তত ৬১ জন নিহত হয়েছেন।
সোমবার রাতে তিউনিসিয়ার সিদি বু সাঈদ বন্দরে ভিড়ে থাকা ‘ফ্যামিলি বোট’ নামের জাহাজে সন্দেহভাজন ইসরায়েলি ড্রোন হামলা হয়। জাহাজে ছয়জন যাত্রী ছিলেন; আগুন দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। পরের রাতে তিউনিসিয়া উপকূলে যুক্তরাজ্যের পতাকাবাহী ‘আলমা’ জাহাজেও অনুরূপ হামলা হয়, তবে হতাহতের খবর নেই।
প্রথমবারের মতো কাতারে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। ওয়েস্ট বে লাগুন এলাকায় কূটনৈতিক দপ্তর, স্কুল, সুপারমার্কেট ও আবাসিক ভবনের মাঝে বিস্ফোরণ ঘটে। কাতারে হামাস নেতারা যুক্তরাষ্ট্রের অনুরোধে অবস্থান করছেন। ঘটনার ৩৫ কিমি দূরেই যুক্তরাষ্ট্রের আঞ্চলিক সামরিক ঘাঁটি সেন্টকম অবস্থিত।
এছাড়া বুধবার ইয়েমেনের রাজধানী সানায় হুথি অবস্থান লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালানো হয়, যার ফলে সানা বিমানবন্দর ক্ষতিগ্রস্ত হয়। চলতি মাসের শুরুতে একই বিমানবন্দরও হামলার শিকার হয়েছিল। আগের হামলায় হুথি সরকারের প্রধানমন্ত্রী আহমেদ আল-রাহাউই সহ কয়েকজন শীর্ষ কর্মকর্তা নিহত হন।
জনপ্রিয়
বিজ্ঞাপন
পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...