বিজ্ঞাপন
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন অটোচালক মো. জাকির হোসেন, মো. কামাল এবং ভাঙারি দোকানদার মো. মিজানুর রহমান।
পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, চক্রটির মূল কার্যক্রম পরিচালিত হয় ঢাকার কোনাপাড়া এলাকা থেকে। সেখানকার মূল হোতারা বিভিন্ন জেলার স্থানীয় চোরদের সঙ্গে যোগাযোগ করে চুরির পরিকল্পনা সাজাতো। নির্দিষ্ট দিনে চক্রের সদস্যরা জেলা ভেদে গিয়ে স্থানীয় সহযোগীদের নিয়ে স্কুলগুলো টার্গেট করত। রাতের অন্ধকারে তালা ভেঙে ব্যাটারি চুরি করে স্থানীয় সহযোগীদের মাধ্যমে কুরিয়ার সার্ভিসে ঢাকায় পাঠানো হতো। পরে রাজধানীতেই চোরাই ব্যাটারি বিক্রি করা হতো।
সম্প্রতি লালমোহন উপজেলার গজারিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও তারাগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে মোট ২৪টি সোলার ব্যাটারি চুরি হয়। এর মধ্যে গত ১১ সেপ্টেম্বর রাতে তারাগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ১২টি ব্যাটারি চুরি হয়, যার বাজারমূল্য প্রায় ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা। এ ঘটনায় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. জামাল উদ্দিন লালমোহন থানায় মামলা দায়ের করেন।
মামলার পর লালমোহন থানা পুলিশের একটি বিশেষ দল তদন্তে নামে। প্রথমে স্থানীয় অটোচালক জাকির হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের সময় অপর আসামি কামাল তাকে ফোনে জানায় যে তারা রমাগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চুরি করতে যাচ্ছে। পুলিশ সঙ্গে সঙ্গে জাকিরকে নিয়ে রমাগঞ্জ এলাকায় অভিযান চালিয়ে কামালকে গ্রেপ্তার করে। তাদের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে পরে ভাঙারি দোকানদার মিজানুর রহমানকেও গ্রেপ্তার করা হয়।
তদন্তে জানা যায়, ঢাকার কোনাপাড়া থেকে কামাল ও সেলিম নামে আরেক সহযোগী ভোলায় আসে। স্থানীয় অটোচালক জাকিরের সহায়তায় তারা দিনের বেলায় স্কুলগুলো রেকি করে এবং রাতে তালা ভাঙার সরঞ্জাম ও প্লাস্টিকের বস্তা সংগ্রহ করে। ১২ সেপ্টেম্বর রাতে তারাগঞ্জ স্কুলের তালা ভেঙে ব্যাটারিগুলো চুরি করে জাকিরের অটোরিকশায় মিজানুরের দোকানে নিয়ে যাওয়া হয়। মিজানুর পরে ‘সওদাগর এক্সপ্রেস কুরিয়ার সার্ভিস’-এর মাধ্যমে ব্যাটারিগুলো ঢাকায় পাঠান।
লালমোহন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, “গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারি যে ঢাকার কোনাপাড়া থেকে একটি আন্তঃজেলা চোর চক্র এসে স্থানীয় চোরদের সহযোগিতায় বিভিন্ন স্কুলের ব্যাটারি চুরি করছে। প্রযুক্তি ও গোয়েন্দা তথ্যের মাধ্যমে চক্রের মূল হোতাদের শনাক্ত করতে সক্ষম হই। এ পর্যন্ত তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঢাকার সদস্যদের ধরতে অভিযান চলছে। এই চক্রের মূল উদ্দেশ্য সোলার ব্যাটারি চুরি করে ঢাকায় বিক্রি করা। আমরা চক্রটিকে পুরোপুরি নির্মূল করতে বদ্ধপরিকর।”
পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেপ্তারকৃতরা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে সম্মত হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
প্রতিবেদক- রিয়াজ উদ্দিন, ভোলা।
জনপ্রিয়
বিজ্ঞাপন
পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...