বিজ্ঞাপন
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের কাছ থেকে বাজার পুনরুদ্ধার করতে ভারতের নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় ৪০ বিলিয়ন বা চার হাজার কোটি রুপি মূল্যের প্রণোদনা প্যাকেজ দিতে যাচ্ছে। এই সুবিধা ২০২৬ সাল থেকে শুরু হয়ে পরবর্তী দশ বছর ধরে কার্যকর থাকবে।
প্রস্তাবিত প্রণোদনার আওতায়, জাহাজ মালিকরা যদি পুরোনো জাহাজ ভারতে নিয়ে আসেন, তবে তারা স্ক্র্যাপ মূল্যের প্রায় ৪০ শতাংশ সমপরিমাণ ক্রেডিট নোট পাবেন। এই নোট তিন বছর পর্যন্ত বৈধ থাকবে এবং ভারতে নির্মিত নতুন জাহাজ কিনতে ব্যবহার করা যাবে। মালিকরা চাইলে একাধিক নোট একত্রে ব্যবহার করতে পারবেন বা বিক্রিও করতে পারবেন।
এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য হল ভারতের জাহাজ পুনর্ব্যবহার শিল্পকে আরও শক্তিশালী করা। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে বিশ্বজুড়ে ভাঙা জাহাজের এক-তৃতীয়াংশ ভারতে এসেছে। এদিকে, এককভাবে বাংলাদেশ এই খাতে ৪৬ শতাংশ বাজার দখল করে রেখেছে।
এশিয়ার তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি ভারত তার পশ্চিম উপকূলে অবস্থিত আলাং শিপইয়ার্ডের জন্য পরিচিত, যা বিশ্বের বৃহত্তম জাহাজ ভাঙার স্থান। দেশটির জাহাজ ভাঙার ব্যবসার ৯৮ শতাংশই এখান থেকেই আসে। তবে সস্তা শ্রমশক্তি ও পর্যাপ্ত কর্মসংস্থান সুবিধার কারণে প্রতিবেশী বাংলাদেশ ও পাকিস্তান ভারতের বাজারের বড় অংশ দখল করে রেখেছে।
সম্প্রতি ভূ-রাজনৈতিক সংকট এবং রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণের পর তেলের ট্যাঙ্কার ভাঙার পরিমাণ কমে যাওয়ায় দীর্ঘ সময় ধরে এই খাত মন্দায় ছিল। এর ফলে মালিকরা পুরোনো জাহাজের জীবনকাল যতটা সম্ভব বাড়ানোর চেষ্টা করছেন।
উল্লেখ্য, ভারত তার পূর্ব উপকূলে একটি নতুন জাহাজ ভাঙার ঘাঁটি তৈরি করার পরিকল্পনাও করছে, যা বাংলাদেশ থেকে ব্যবসা আকর্ষণ করার লক্ষ্য রাখে। এছাড়া, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকার চলতি মাসেই ২৫০ বিলিয়ন রুপি সমপরিমাণ সামুদ্রিক উন্নয়ন তহবিল অনুমোদন করতে যাচ্ছে। এই তহবিল দেশীয় জাহাজ নির্মাণকে উৎসাহিত করবে এবং বিদেশি জাহাজের ওপর নির্ভরশীলতা কমাবে।
সূত্রের বরাত দিয়ে এনডিটিভি জানিয়েছে, কেন্দ্রীয় সরকারের মন্ত্রিসভা চলতি সেপ্টেম্বরের শেষ নাগাদ এই প্রণোদনা প্রস্তাবটি অনুমোদন করতে পারে। তবে ভারতীয় নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় এবং প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরো এ বিষয়ে এখনও কোনো মন্তব্য করেনি।
জনপ্রিয়
বিজ্ঞাপন
পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...