Logo Logo

গাজায় ইসরায়েলি অভিযানে একদিনে ৯৮ ফিলিস্তিনি নিহত, আহত ৩৮৫


Splash Image

মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি বিমান বাহিনীর গোলা ও বোমাবর্ষণে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় অন্তত ৯৮ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও ৩৮৫ জন। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাতে সোমবার সন্ধ্যার পর প্রকাশিত বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।


বিজ্ঞাপন


স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, প্রকৃত হতাহতের সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে। তাদের ভাষ্যে, “মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত গাজার হাসপাতালগুলোতে ৯৮ জনের মরদেহ ও ৩৮৫ জন আহত অবস্থায় আনা হয়েছে। তবে ধ্বংসস্তূপে আটকা থাকা অনেকের মরদেহ উদ্ধারে সরঞ্জাম ও জনবলের অভাবে প্রকৃত সংখ্যা এর চেয়ে বেশি।”

২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় সামরিক অভিযান চালিয়ে আসছে ইসরায়েলি সেনারা (আইডিএফ)। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, চলমান অভিযানে মোট নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬৫ হাজার ৬২ জনে এবং আহতের সংখ্যা ১ লাখ ৬৫ হাজার ৬৯৭ জনে।

গত ১৯ জুন যুক্তরাষ্ট্র, মিসর ও কাতারের মধ্যস্থতায় ইসরায়েল ও গাজা নিয়ন্ত্রণকারী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস দুই মাসের যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছিল। তবে ১৮ মার্চ সেই যুদ্ধবিরতি ভেঙে ফের অভিযান শুরু করে আইডিএফ। এর পরবর্তী পাঁচ মাসে গাজায় আরও ১২ হাজার ৫১১ জন নিহত এবং ৫৩ হাজার ৬৫৬ জন আহত হয়েছেন।

গাজার বিভিন্ন এলাকায় খাদ্য ও ত্রাণ সংগ্রহ করতে যাওয়া বেসামরিক মানুষের ওপরও নিয়মিত হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েলি সেনারা। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, গত ২৭ মে প্রথমবারের মতো ত্রাণ নিতে যাওয়া ফিলিস্তিনিদের ওপর গুলি চালানো হয়। এরপর থেকে এ ধরনের হামলা অব্যাহত রয়েছে।

শুধু গতকাল বুধবারই ত্রাণ সংগ্রহে যাওয়া ফিলিস্তিনিদের ওপর গুলি চালিয়ে ৭ জনকে হত্যা ও ৮৭ জনকে আহত করেছে ইসরায়েলি সেনারা। ফলে ত্রাণ সংগ্রহে নিহতের মোট সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৫০৪ জনে এবং আহতের সংখ্যা ১৮ হাজার ৩৪৮ জনে।

গত ২ মার্চ থেকে গাজায় খাদ্য ও ত্রাণের সরবরাহ সীমিত করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। এর ফলে তীব্র খাদ্যসংকট ও অপুষ্টি দেখা দিয়েছে। বুধবার ক্ষুধা ও অপুষ্টিজনিত কারণে আরও ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, প্রায় দুই বছরে গাজায় ক্ষুধা ও অপুষ্টিতে মৃত্যু হয়েছে ৪৩২ জনের, যাদের মধ্যে ১৪৬ জন শিশু।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী হামাস ইসরায়েলের ভূখণ্ডে ঢুকে অতর্কিত হামলা চালায়। ওই হামলায় ১ হাজার ২০০ জন নিহত হন এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যাওয়া হয়। হামলার জবাবে ও জিম্মিদের মুক্ত করতে একই দিন থেকে গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েল।

দীর্ঘ ১৫ মাসেরও বেশি সময় পর আন্তর্জাতিক চাপের মুখে গত ১৯ জানুয়ারি যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করলেও আইডিএফ নতুন করে অভিযান শুরু করে। বর্তমানে ধারণা করা হচ্ছে, হামাসের হাতে আটক ২৫১ জিম্মির মধ্যে অন্তত ১৫ থেকে ২০ জন এখনও জীবিত আছেন। তাদের উদ্ধারের জন্য সামরিক অভিযান অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছে ইসরায়েল।

জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বহুবার গাজায় সামরিক অভিযান বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে। ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসে (আইসিজে) ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। তবে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু স্পষ্ট করেছেন, হামাসকে সম্পূর্ণ দুর্বল ও অকার্যকর করা এবং অবশিষ্ট জিম্মিদের মুক্ত করা না পর্যন্ত অভিযান চলবে।

বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন

আরো দেখুন


বিজ্ঞাপন

পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...