বিজ্ঞাপন
২০০২ সালে হিসাব শাখার বরাদ্দে বিদ্যালয়টি একতলা একটি ভবন পেলেও সেটিও এখন ভাঙাচোরা। দেয়ালের প্লাস্টার খসে পড়া এবং ছাদের অংশ ধসে পড়ায় শিক্ষার্থীরা একাধিকবার আহত হয়েছে। ওই ভবনের একটি কক্ষে অফিস ও অন্য কক্ষে প্রধান শিক্ষকের কার্যালয় থাকলেও প্রতিদিনই জীবনঝুঁকি নিয়ে কার্যক্রম চালাতে হচ্ছে।
শ্রেণিকক্ষের বেহাল দশার বর্ণনা দিতে গিয়ে শিক্ষকরা জানান, টিনশেড কক্ষে ছিদ্র দিয়ে পানি পড়ে বৃষ্টির দিনে বই-খাতা বাঁচাতে শিক্ষার্থীরা হিমশিম খায়। দীর্ঘদিন ধরে টয়লেটও ব্যবহার অনুপযোগী অবস্থায় রয়েছে। ন্যূনতম সুযোগ-সুবিধার মধ্যেও শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা কষ্ট করে পাঠদান অব্যাহত রেখেছেন।
শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরাও প্রতিনিয়ত আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। এক শিক্ষার্থীর মা রাশেদা বেগম বলেন, “আমরা প্রতিদিন ভয়ে থাকি, কখন যে ভবনটা ভেঙে পড়ে বাচ্চাদের গায়ে লাগে। তবুও পড়াশোনা বন্ধ রাখতে পারি না। সরকার যদি দ্রুত নতুন ভবনের ব্যবস্থা না করে তাহলে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।”
আরেক অভিভাবক শাহাদাত হোসেন জানান, “বাচ্চাদের ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশে পাঠাতে আমাদের কষ্ট হয়। সরকারের কাছে জোর দাবি, দ্রুত এই বিদ্যালয়ে একটি নতুন ভবন বরাদ্দ দেয়া হোক।”
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. ফকরুল ইসলাম বলেন, “প্রতিদিন ভগ্নপ্রায় ভবনের নিচে বসে অফিস করতে হয়। শিক্ষার্থীরা যখন ক্লাস করে, তখনও আমরা আতঙ্কে থাকি। ঝড়-বৃষ্টি হলেই শিক্ষাদান বন্ধ রাখতে হয়। তবুও আমরা চেষ্টা করছি সর্বোচ্চ দায়িত্ব নিয়ে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে। তবে এভাবে আর কতদিন? অনতিবিলম্বে একটি নতুন ভবন অত্যন্ত জরুরি।”
ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. রাসেল আহমেদ বলেন, “বিদ্যালয়ের জন্য নতুন ভবনের আবেদন একাধিকবার করা হলেও এখনও কোনো বরাদ্দ আসেনি। শিক্ষা অফিস থেকে শুরু করে বিভিন্ন দপ্তরে গিয়েছি, কিন্তু কোনো সুফল পাইনি। সরকারের প্রতি আহ্বান, দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হোক। না হলে যেকোনো মুহূর্তে ঘটতে পারে বড় দুর্ঘটনা।”
প্রতিকূল পরিবেশের মধ্যেও মুসুল্লীয়াবাদ এ কে মাধ্যমিক বিদ্যালয় ফলাফলে শীর্ষে রয়েছে। এ বছরের এসএসসি পরীক্ষায় বরিশাল বোর্ডের সার্বিক ফল খারাপ হলেও কুয়াকাটা পরীক্ষা কেন্দ্রে অংশগ্রহণকারী কয়েকটি বিদ্যালয়ের মধ্যে প্রথম স্থান অর্জন করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
কলাপাড়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, “আমরা বিষয়টি অবগত আছি। ইতিমধ্যে বিদ্যালয়টির জন্য দুইটি ভবন ও ৯৬ জোড়া বেঞ্চের চাহিদা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। আশা করছি খুব দ্রুতই এর সমাধান হবে।”
স্থানীয় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা আশা করছেন, সরকারের দ্রুত উদ্যোগের মাধ্যমে মুসুল্লীয়াবাদ এ কে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নিরাপদ ও আধুনিক ভবনে পাঠদানের সুযোগ পাবে।
জনপ্রিয়
বিজ্ঞাপন
পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...