বিজ্ঞাপন
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত শনিবার মেয়ের বাড়ি মেহেরপুরের মহাজনপুরে বেড়াতে যান রাজমিস্ত্রি হারুন। রোববার সকালে সেখানে হঠাৎ স্ট্রোক করে তার মৃত্যু হয়। পরে মরদেহ দামুড়হুদার নিজ গ্রাম চিৎলায় আনা হলে আছরের নামাজের পর দাফনের প্রস্তুতি চলছিল। এ সময় লাশ গোসলের মুহূর্তে প্রতিবেশী প্রয়াত মোহন আলীর স্ত্রী মর্জিনা খাতুন দাবি করেন, হারুনের কাছে তার সুদের ১৫ হাজার টাকা পাওনা রয়েছে। টাকা পরিশোধ না করলে দাফন করতে দেওয়া হবে না বলে হুমকি দেন তিনি।
হঠাৎ এ ঘটনায় শোকাহত পরিবার হতবাক হয়ে যায়। মরদেহের পাশে দাঁড়িয়েই শুরু হয় টাকার জন্য তর্ক-বিতর্ক। খবর ছড়িয়ে পড়লে আশপাশের মানুষ স্তম্ভিত হয়ে পড়েন। অবশেষে প্রায় এক ঘণ্টা মরদেহ আটকে রাখার পর পরিবার বাধ্য হয়ে টাকা জোগাড় করে খাটিয়ার ওপর রেখে দেয়। টাকা হাতে নিয়েই জনরোষের মুখে দ্রুত সরে পড়েন মর্জিনা খাতুন।
মারা যাওয়া হারুনের চাচাতো ভাই মতিনুর ইসলাম মানিক জানান, দেড় মাস আগে হারুন মর্জিনার কাছ থেকে ৮ হাজার টাকা ধার নেন, যা ব্যবসার কাজে ব্যবহার করেছিলেন। কিন্তু রোববার মরদেহ গোসলের সময় মর্জিনা দাবি করেন, সুদসহ ২২ হাজার টাকা তিনি পাবেন। পরিবার অনুরোধ করে দাফনের পর বিষয়টি মিটমাট করার কথা বললেও মর্জিনা রাজি হননি। এমনকি একটি গরু জামানত হিসেবে রেখে পরে নগদ টাকা দেওয়ার প্রস্তাব করলেও তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেন। শেষ পর্যন্ত দরকষাকষি করে ১৫ হাজার টাকা পরিশোধ করতে হয় পরিবারকে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, মর্জিনা দীর্ঘদিন ধরে গ্রামে সুদের কারবার চালাচ্ছেন। তিনি অনেক মানুষকে ঋণ দিয়ে বিপদে ফেলেছেন। তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলে উল্টো নারী নির্যাতন মামলা দিয়ে হয়রানি করেন। এ কারণে গ্রামবাসী ভয়ভীতিতে নীরবতা পালন করে আসছেন।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আতিয়ার রহমান বলেন, “মূল টাকা হারুন জীবিত থাকতেই পরিশোধ করেছিলেন। মৃত্যুর পর মরদেহ আটকে রেখে সুদের টাকা আদায় করা সমাজের চোখে ন্যাক্কারজনক, ঘৃণিত ও লজ্জাজনক কাজ। মর্জিনা দীর্ঘদিন ধরে সুদের ব্যবসার আড়ালে মানুষকে সর্বনাশ করে আসছেন।”
এ বিষয়ে দামুড়হুদা মডেল থানার ওসি হুমায়ুন কবীর বলেন, “এমন কোনো ঘটনার খবর আমাদের জানা নেই। তবে অভিযোগ পেলে তদন্ত করে অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
জনপ্রিয়
বিজ্ঞাপন
পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...