Logo Logo

গাজায় ইসরায়েলি হামলায় একদিনে আরও ৮৫ জন নিহত


Splash Image

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর লাগাতার হামলায় নতুন করে অন্তত ৮৫ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে সাত নারী ও দুই শিশু রয়েছে।


বিজ্ঞাপন


বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরের আল-আহলি স্টেডিয়ামে আশ্রয় নেওয়া বাস্তুচ্যুত পরিবারগুলোর ওপর চালানো হামলায় অন্তত ১২ জন প্রাণ হারান।

স্টেডিয়ামটি গাজার বহু বাস্তুচ্যুত মানুষের অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে পরিণত হয়েছিল। প্রত্যক্ষদর্শী নাজওয়া আল জাজিরাকে বলেন, “হাতে যা ছিল তাই নিয়ে বেরিয়েছি। আমাদের কিছুই বাকি নেই। আমরা আতঙ্কে আছি। যাতায়াত করাটাও ব্যয়বহুল, জিনিসপত্র আনার সামর্থ্য নেই।”

জাতিসংঘ সতর্ক করেছে, ইসরায়েলি সেনারা গাজা সিটিতে আতঙ্ক সৃষ্টি করছে এবং হাজারো মানুষকে দক্ষিণে পালাতে বাধ্য করছে। তবে ইসরায়েলি সেনাপ্রধান এয়াল জামির দাবি করেন, নিরাপত্তার স্বার্থেই ফিলিস্তিনিদের দক্ষিণে যেতে বলা হচ্ছে। জাতিসংঘের অনুসন্ধান কমিশনের মতে, এসব পদক্ষেপ আসলে গাজায় স্থায়ী নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা এবং পশ্চিম তীরে ইহুদি সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে নেওয়া হয়েছে।

জামির আরও জানান, গাজার অধিকাংশ মানুষ ইতোমধ্যেই গাজা সিটি ছেড়ে চলে গেছেন এবং সেনারা সেখানকার অভিযানে আরও অগ্রসর হবে। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া যুদ্ধে এখন পর্যন্ত অন্তত ৬৫ হাজার ৪১৯ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১ লাখ ৬৭ হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। ধারণা করা হচ্ছে, ধ্বংসস্তূপের নিচে আরও বহু মানুষ চাপা পড়ে আছেন।

নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে গাজার যুদ্ধ নিয়ে ইসরায়েলবিরোধী তীব্র সমালোচনা হয়। ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসউদ পেজেশকিয়ান বলেন, “যারা শিশু হত্যা করে মানুষকে ভয় দেখাচ্ছে, তারা মানবতার যোগ্য নয়।” সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আহমাদ আল-শারআ অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে বলেন, “আমরা গাজার জনগণের সঙ্গে আছি। এই যুদ্ধ এখনই থামাতে হবে।”

নরওয়ের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসপেন বার্থ আইদে আল জাজিরাকে জানান, শান্তি প্রক্রিয়ার জন্য নীরব আলোচনায় অগ্রগতি হচ্ছে। জুলাইয়ে ১৪২টি দেশ যে “নিউ ইয়র্ক ঘোষণা” সমর্থন করেছে, তার ভিত্তিতেই এই উদ্যোগ চলছে।

অন্যদিকে মার্কিন দূত স্টিভ উইটকফ বলেন, ওয়াশিংটন “আশাবাদী, এমনকি আত্মবিশ্বাসী” যে আগামী কয়েক দিনের মধ্যে শান্তি অগ্রগতির ঘোষণা আসবে। তিনি আরও জানান, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ২১ দফা শান্তি পরিকল্পনা ইতোমধ্যেই বিশ্বনেতাদের হাতে পৌঁছে গেছে।

তবে পূর্ববর্তী শান্তি প্রচেষ্টা বারবার ভেস্তে দিয়েছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। চলতি মাসের শুরুতে তিনি দোহায় হামাস নেতাদের ওপর হামলার নির্দেশ দেন, যখন তারা ট্রাম্পের শান্তি প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করছিলেন। এর আগে গত ১৮ মার্চ তিনি একতরফাভাবে যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভেঙে গাজায় তীব্র বোমাবর্ষণ শুরু করেন এবং পূর্ণাঙ্গ অবরোধ আরোপ করেন। এর ফলে দুর্ভিক্ষ দেখা দেয় ও অনেকে না খেয়ে মারা যান।

আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) ইতোমধ্যে নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে বিশ্বনেতাদের বারবার যুদ্ধবিরতির আহ্বান সত্ত্বেও ইসরায়েলি হামলা অব্যাহত থাকায় গাজার মানবিক বিপর্যয় ক্রমেই গভীরতর হচ্ছে।

বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন

আরো দেখুন


বিজ্ঞাপন

পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...