Logo Logo

ইরানের বিরুদ্ধে জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল


Splash Image

ইরানের পরমাণু কর্মসূচি ঘিরে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে আরোপিত সব ধরনের অস্ত্র ও অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করা হয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোর উদ্যোগে নেওয়া এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তেহরান কড়া প্রতিক্রিয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে।


বিজ্ঞাপন


রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের প্রক্রিয়া শুরু করে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানি। ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির সক্ষমতা অর্জন থেকে বিরত রাখার লক্ষ্যেই ওই চুক্তি করা হয়েছিল। তবে শুরু থেকেই পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে তেহরান।

জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের ২০০৬ থেকে ২০১০ সালের মধ্যে গৃহীত প্রস্তাবগুলো অনুযায়ী ইরানের ওপর আরোপিত সব নিষেধাজ্ঞা ইউরোপীয় সময় শনিবার রাত ৮টা থেকে কার্যকর হয়েছে। চলতি সপ্তাহে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনের ফাঁকে নিষেধাজ্ঞা ফেরানোর প্রক্রিয়া বিলম্বিত করার উদ্যোগ নিলেও তা ব্যর্থ হয়।

ইউরোপীয় দেশগুলোর এক যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “আমরা ইরান এবং অন্যান্য দেশকে জাতিসংঘের এসব প্রস্তাব সম্পূর্ণভাবে মেনে চলার আহ্বান জানাচ্ছি।” ব্রিটেন, ফ্রান্স এবং জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রীরাও এই বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক প্রধান কায়া কালাস বলেছেন, জাতিসংঘ ও ইইউর পূর্বে প্রত্যাহার করা সব ধরনের পরমাণু সংশ্লিষ্ট নিষেধাজ্ঞা অবিলম্বে পুনর্বহাল করতে ইইউ ব্লক পদক্ষেপ নেবে। তার ভাষায়, “ইরানের পরমাণু ইস্যুর টেকসই সমাধান কেবল আলোচনা ও কূটনীতির মাধ্যমেই সম্ভব।”

তেহরানের পাল্টা হুঁশিয়ারি

নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের কড়া সমালোচনা করে ইরান জানিয়েছে, এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে কঠোর প্রতিক্রিয়া দেখাবে তারা। এর আগে শনিবার ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জার্মানিতে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূতদের পরামর্শের জন্য দেশে ফিরিয়ে নিয়েছে তেহরান। ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান অবশ্য বলেছেন, “পরমাণু অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তি (এনপিটি) থেকে বেরিয়ে যাওয়ার কোনো ইচ্ছা নেই আমাদের।”

ইরানের ঘনিষ্ঠ মিত্র রাশিয়া জাতিসংঘের এই পদক্ষেপকে অবৈধ আখ্যা দিয়েছে। জাতিসংঘ সদরদপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ বলেন, “নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করা অবৈধ এবং কার্যকর করা সম্ভব নয়।” তিনি জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসকে চিঠি লিখে সতর্ক করে জানান, এই সিদ্ধান্ত স্বীকৃতি দেওয়া হলে তা হবে ‘একটি বড় ভুল’।

ইউরোপীয় শক্তিগুলো জানিয়েছে, ইরান যদি জাতিসংঘের পরমাণু পরিদর্শকদের প্রবেশাধিকার পুনর্বহাল করে, সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের মজুদ কমায় এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় বসতে রাজি হয়, তবে নিষেধাজ্ঞা ছয় মাসের জন্য স্থগিত রাখা যেতে পারে। ব্রিটেন, ফ্রান্স এবং জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা বলেন, “জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল কূটনীতির সমাপ্তি নয়। আমরা কূটনৈতিক প্রচেষ্টা ও আলোচনার প্রক্রিয়া চালিয়ে যাব। ইরানকে চুক্তিতে ফিরে আসার আহ্বান জানাই।”

মধ্যপ্রাচ্যে ইতোমধ্যেই উত্তেজনা তীব্র আকার ধারণ করেছে। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল ইরানের পরমাণু স্থাপনায় বিমান হামলা চালানোর পর পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে। বিশ্লেষকদের মতে, জাতিসংঘের নতুন এই পদক্ষেপ অঞ্চলের অস্থিরতা আরও বাড়িয়ে দিতে পারে।

বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন

আরো দেখুন


বিজ্ঞাপন

পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...