Logo Logo

গবেষক ও বিদেশগামী শিক্ষার্থীদের সহায়তায় নতুন উদ্যোগ: “মাই প্রবাস”


Splash Image

বাংলাদেশের তরুণ গবেষক ও শিক্ষার্থীদের জন্য আশার আলো হয়ে এসেছে নতুন একটি সংগঠন “মাই প্রবাস”। সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা ও সমন্বয়ক মো. রিয়াজ মিয়া, বর্তমানে ইউরোপের সাইপ্রাসে অবস্থিত ফিলিপস ইউনিভার্সিটিতে পড়াশোনার জন্য ভর্তি হয়েছেন। বিদেশে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের সাথে নিয়মিত সেমিনার ও তাদের সমস্যার বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে তিনি এমন একটি উদ্যোগের সূচনা করেছেন, যা একদিকে শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য উন্নয়নে কাজ করছে, অন্যদিকে বিদেশগামী শিক্ষার্থীদের জন্য দালালমুক্ত ও প্রযুক্তিনির্ভর প্রসেসিং সুবিধা দিচ্ছে।


বিজ্ঞাপন


মানসিক স্বাস্থ্য উদ্যোগে নতুন দিগন্ত

‎‎বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)-এর তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বের প্রতি চার জনের মধ্যে একজন জীবনের কোনো না কোনো পর্যায়ে ডিপ্রেশনে আক্রান্ত হন। বাংলাদেশও এর বাইরে নয়। সাম্প্রতিক জরিপে দেখা গেছে, দেশের প্রায় ১৭% প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছেন। এদের মধ্যে ডিপ্রেশনই সবচেয়ে সাধারণ। নগরজীবনের প্রতিযোগিতা, কর্মসংস্থানের অভাব, পারিবারিক চাপ, একাকীত্ব ও সম্পর্কের টানাপোড়েন এ সমস্যাকে বাড়িয়ে তুলছে।

‎‎এই প্রেক্ষাপটে “মাই প্রবাস” শিক্ষার্থীদের জন্য বিনামূল্যে মানসিক স্বাস্থ্যসেবা চালু করেছে। অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা সহজেই পরামর্শ গ্রহণ করতে পারছেন। ইতোমধ্যে ঢাকার কেরাণীগঞ্জসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ডোপামিন লুপ, আধুনিক আসক্তি ও প্রযুক্তিনির্ভর মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে সেমিনার আয়োজন করা হয়েছে, যা শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।

‎গবেষণা ও জ্ঞানভিত্তিক কার্যক্রম

‎‎গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালে মো. রিয়াজ মিয়া মানসিক স্বাস্থ্যের উপর একটি গবেষণা পরিচালনা করেছিলেন। তিনি ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করে শিক্ষার্থীদের মানসিক অবস্থা নিয়ে প্রমাণভিত্তিক বিশ্লেষণ তৈরি করেন। বর্তমানে সেই গবেষণা সাধারণ শিক্ষার্থী ও গবেষকদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে, যাতে তারা বিনামূল্যে তা পড়তে ও কাজে লাগাতে পারেন।

‎দালালমুক্ত বিদেশযাত্রা প্রসেসিং

‎‎বাংলাদেশে বিদেশে পড়াশোনা ও কর্মসংস্থানের সুযোগ নিতে গিয়ে শিক্ষার্থীরা প্রায়ই এজেন্সি বা দালালের খপ্পরে পড়ে প্রতারিত হন। এই সমস্যার সমাধান হিসেবে “মাই প্রবাস” সম্পূর্ণ ডিজিটাল পদ্ধতিতে বিদেশে উচ্চশিক্ষা ও ওয়ার্ক ভিসার প্রসেসিং ব্যবস্থা চালু করেছে। শিক্ষার্থীরা ঘরে বসেই আবেদন থেকে শুরু করে নথিপত্র যাচাই ও প্রক্রিয়ার সব ধাপ সম্পন্ন করতে পারবেন। এতে খরচ যেমন কমবে, তেমনি থাকবে স্বচ্ছতা ও নিরাপত্তার নিশ্চয়তা।

‎ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা

‎‎“মাই প্রবাস” এর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা শুধু বিদেশযাত্রার সীমাবদ্ধতায় আবদ্ধ নয়। সংগঠনটি একটি সৃজনশীল, মানবিক ও ডিজিটাল সমাজ গঠন করার স্বপ্ন দেখছে। এ প্রসঙ্গে মো. রিয়াজ মিয়া বলেন— ‎“পৃথিবীর ৮.১৪২ বিলিয়ন মানুষের স্বাস্থ্যসেবা ও অধিকার নিয়ে কথা বলবে তারুণ্য। পৃথিবীর সব গবেষকদের গবেষণা মানুষের কল্যাণে কাজে লাগুক—এটাই আমাদের প্রত্যাশা।”

‎তরুণ প্রজন্মের জন্য অনুপ্রেরণা

‎‎বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্ম যেখানে প্রবাসযাত্রাকে শুধু অর্থনৈতিক সমাধান হিসেবে দেখছে, সেখানে “মাই প্রবাস” প্রমাণ করছে যে বিদেশযাত্রা মানে শুধু অর্থ উপার্জন নয়—বরং জ্ঞান, মানসিক সুস্থতা ও প্রযুক্তিনির্ভর স্বপ্নপূরণের পথ। এই সংগঠনের কার্যক্রম ইতিমধ্যেই শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও গবেষকদের মাঝে ইতিবাচক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

প্রতিবেদক- হাবিবুর রহমান, গোবিপ্রবি প্রতিনিধি।

বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন

আরো দেখুন


বিজ্ঞাপন

পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...