Logo Logo

ফরিদপুরে মন্দিরের শতবর্ষী গাছ কেটে বিক্রি করলেন যুবদল নেতা


Splash Image

ফরিদপুর সদর উপজেলার একটি প্রাচীন মন্দিরের শতবর্ষী মেহগনি গাছ কেটে বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছে সাইফুল মোল্লা নামে এক যুবদল নেতার বিরুদ্ধে।


বিজ্ঞাপন


ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার মাচ্চর ইউনিয়নের বারোনীখোলা কালী মন্দিরে। এ ঘটনায় মন্দির কমিটি ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সদর উপজেলার খলিলপুর বাজার-সংলগ্ন বারোনীখোলা কালী মন্দিরটি ব্রিটিশ আমল থেকে হিন্দু সম্প্রদায়ের উপাসনাস্থল হিসেবে পরিচিত। প্রতি বছর চৈত্র মাসে এখানে অনুষ্ঠিত হয় ঐতিহ্যবাহী বারোনী মেলা। মন্দির প্রাঙ্গণে থাকা একটি পুরোনো মেহগনি গাছের নিচে ভক্ত ও স্থানীয়রা বিশ্রাম নিতেন। গত বুধবার গাছটি কেটে বিক্রি করে দেন সাইফুল মোল্লা।

মন্দির কমিটি ও স্থানীয়রা জানান, সাইফুল মোল্লার দাদা মৃত ফাজিল মোল্লা ব্রিটিশ আমলে হিন্দু সম্প্রদায়ের ধর্মীয় কর্মকাণ্ডের জন্য মৌখিকভাবে দুই শতাংশ জমি দান করেছিলেন। সেই জমিতে স্থাপিত হয় বর্তমান কালী মন্দির। প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে সেখানে পূজা চলে আসছে। বিএস, আরএস ও এসএ সব খতিয়ানেই জমিটি মন্দির হিসেবে নিবন্ধিত রয়েছে। মন্দির কমিটি জমিটি স্থায়ীভাবে মন্দিরের নামে লিখে নেওয়ার দাবিতে গত বছর মামলা দায়ের করে। বর্তমানে জমির মালিকানা জেলা প্রশাসকের অধীনে রয়েছে এবং সরকারি রেকর্ডেও জমিটি মন্দির হিসেবে উল্লেখ আছে।

বারোনীখোলা মন্দির কমিটির সভাপতি সত্য রঞ্জন মালো বলেন, “যে গাছটি কাটা হয়েছে, তার ছায়াতলে ভক্তরা বিশ্রাম নিতেন। আমরা গাছটিকে ভগবানের মতো যত্ন করেছি। সাইফুল আমাদের কোনো কথা শোনেননি, জোর করে গাছ কেটে নিয়ে গেছেন। বিএনপি করায় এলাকায় তার প্রভাব রয়েছে।”

অন্যদিকে, সাইফুলের চাচাতো ভাই মাহফুজ মোল্লা বলেন, “মন্দিরের দাগে মোট ৭২ শতাংশ জমি। এর মধ্যে ২ শতাংশ মন্দিরের, বাকিটা আমাদের ওয়ারিশদের। সাইফুলরা বাটোয়ারা শেষে বিক্রি করে দিয়েছে তাদের অংশ, কিন্তু সে জোর করে আবার গাছ কেটে নেয়।”

মাচ্চর ইউনিয়ন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এস এ মামুনুর রশিদ বলেন, “সাইফুলের কাজটি খুবই ন্যক্কারজনক। এ এলাকার হিন্দু সম্প্রদায়ের সঙ্গে আমাদের প্রাচীন সম্পর্ক রয়েছে। সাইফুল দীর্ঘদিন আওয়ামী রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিল। সে নিজেকে যুবদল নেতা দাবি করলেও দলের কোনো পদে নেই।”

গাছ কাটার বিষয়টি স্বীকার করে সাইফুল মোল্লা বলেন, “মন্দির কমিটি জমির স্বত্ব নিয়ে মামলা করেছে। সেই মামলার খরচ চালাতে গাছটি কাটা হয়েছে। গাছটি মন্দিরের নয়, এটি আমার বাবার লাগানো। ভাগ-বাটোয়ারার পর গাছটি আমার চাচা মনি মোল্লার জায়গায় ছিল।”

এ বিষয়ে কোতোয়ালি থানার এএসআই জিয়াউর রহমান বলেন, “আমরা লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন

আরো দেখুন


বিজ্ঞাপন

পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...