Logo Logo

লালকেল্লার পাশে ভয়াবহ গাড়ি বিস্ফোরণ, দিল্লিতে নিহত ৯


Splash Image

ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লির ঐতিহাসিক লালকেল্লার পাশে ভয়াবহ বিস্ফোরণে প্রাণহানির সংখ্যা বেড়ে ৯ জনে দাঁড়িয়েছে। সোমবার (১০ নভেম্বর) সন্ধ্যার দিকে ঘটে যাওয়া এই বিস্ফোরণে আহত হয়েছেন আরও অন্তত ২৪ জন। ঘটনাটি ঘিরে রাজধানীজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে আতঙ্ক।


বিজ্ঞাপন


দেশটির শীর্ষ সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদন অনুযায়ী, স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টা ৫২ মিনিটে লাল কেল্লা মেট্রো স্টেশনের কাছে একটি হুন্দাই আই২০ গাড়িতে শক্তিশালী বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণের তীব্রতায় আশপাশের অন্তত ২২টি গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং রাস্তাজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে ছিন্নভিন্ন মরদেহ। লাল কেল্লা সংলগ্ন পর্যটন এলাকা মুহূর্তের মধ্যেই ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়।

দিল্লি পুলিশের কমিশনার সতীশ গোলচা সাংবাদিকদের জানান, “লাল কেল্লা ট্রাফিক সিগন্যালের কাছে ধীরে চলা একটি গাড়িতে এই বিস্ফোরণ ঘটে। গাড়িটিতে যাত্রী ছিল। বিস্ফোরণের তীব্রতায় আশপাশের কয়েকটি গাড়ি ও ভবনও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।”

বিস্ফোরণের ঘটনায় কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (এনআইএ) এবং ন্যাশনাল সিকিউরিটি গার্ড (এনএসজি) তদন্ত শুরু করেছে। সতর্কতা হিসেবে মুম্বাই, জয়পুর, উত্তর প্রদেশ ও উত্তরাখণ্ডে উচ্চ নিরাপত্তা জারি করা হয়েছে।

দিল্লির উপপ্রধান অগ্নিনির্বাপক কর্মকর্তা একে মালিক জানিয়েছেন, “আমরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করি। সন্ধ্যা ৭টা ২৯ মিনিটের দিকে আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।”

ঘটনাস্থলের ছবি ও ভিডিওতে দেখা যায়, রাস্তায় পড়ে আছে ছিন্নভিন্ন মরদেহ ও ক্ষতিগ্রস্ত যানবাহন। বিস্ফোরণের পর লাল কেল্লা ও আশপাশের এলাকায় বিপুলসংখ্যক পুলিশ ও নিরাপত্তাকর্মী মোতায়েন করা হয়েছে। পর্যটকে ভরপুর এ এলাকায় মুহূর্তেই সৃষ্টি হয় তীব্র ভীতির পরিবেশ।

একই দিনে রাজধানী দিল্লি থেকে মাত্র ৫০ কিলোমিটার দূরে হরিয়ানার ফরিদাবাদে ২ হাজার ৯০০ কেজি বিস্ফোরক উদ্ধার করেছে নিরাপত্তা বাহিনী। ঘটনাটি ঘটেছে বিহার রাজ্যের দ্বিতীয় দফার ভোটগ্রহণের আগের দিন, যা নিয়ে বাড়ছে রাজনৈতিক অস্থিরতার আশঙ্কা।

মুঘল আমলে নির্মিত লাল কেল্লা ভারতের অন্যতম ঐতিহাসিক নিদর্শন, যা সারা বছর দেশি-বিদেশি পর্যটকে পরিপূর্ণ থাকে।

বিস্ফোরণের পরপরই ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে বিষয়টি অবহিত করেন। দিল্লি পুলিশ কমিশনার, এনআইএ ও ইন্টেলিজেন্স ব্যুরোর প্রধানরাও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে সর্বশেষ পরিস্থিতি জানিয়েছেন।

তবে, এখন পর্যন্ত বিস্ফোরণের কারণ সম্পর্কে কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য করেনি দিল্লি পুলিশ। এদিকে, দিল্লির সাবেক মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল বলেন, “সরকার ও পুলিশের উচিত দ্রুত তদন্ত শুরু করে বিস্ফোরণের প্রকৃত কারণ প্রকাশ করা। দিল্লির নিরাপত্তা নিয়ে কোনো অবহেলা মেনে নেওয়া হবে না।”

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বিস্ফোরণের শব্দ ছিল অত্যন্ত প্রচণ্ড। এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, “আমি মানুষের দেহের অংশ আকাশে উড়ে রাস্তায় পড়তে দেখেছি। শব্দের তীব্রতায় আমার কান কয়েক মিনিট ধরে ব্যথা করছিল।” আরেকজন বলেন, “বিস্ফোরণে আশপাশের ভবনের দেয়াল, জানালা ও দরজা কেঁপে উঠেছিল। ঘটনাটি এত ভয়ঙ্কর ছিল যে, তা ভাষায় বর্ণনা করা সম্ভব নয়।”

নয়াদিল্লির ঐতিহাসিক লালকেল্লার পাশে এই ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় পুরো ভারতজুড়ে নেমে এসেছে শোক ও উদ্বেগের ছায়া।

বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন

আরো দেখুন


বিজ্ঞাপন

পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...