বিজ্ঞাপন
অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন IFES-এর প্রতিনিধি রোকসানা আফরোজ ও নাসিরুল ইসলাম। আইডিয়ার পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন নির্বাহী পরিচালক নাজমুল হক, আবুল কালাম আজাদ, প্রজেক্ট অফিসার মো. সালাউদ্দিন, মেহেদী হাসান সৈকত, সাবিনা ইয়াসমিন ও রিম্পি দাশ।
দিনের কার্যক্রম শুরু হয় প্রজেক্ট অফিসার মো. সালাউদ্দিনের শুভেচ্ছা বক্তব্যের মাধ্যমে। তিনি প্রশিক্ষণের উদ্দেশ্য তুলে ধরে অংশগ্রহণকারীদের প্রত্যাশা যাচাইয়ের জন্য ভিপ কার্ডে শেখার অনুরাগ লিখে বোর্ডে পিন করতে বলেন। এরপর IFES প্রতিনিধি রোকসানা রুমানা পরিচিতি সেশন পরিচালনা করেন, যেখানে অংশগ্রহণকারীরা নিজেদের নাম ও কমিউনিটির পরিচয় তুলে ধরেন।
পরিচিতির পর বক্তব্য দেন আইডিয়ার নির্বাহী পরিচালক নাজমুল হক। তিনি বলেন, চা-বাগান, মণিপুরী ও পাত্রসহ বিভিন্ন জনগোষ্ঠী ভোট ও নির্বাচনে অংশগ্রহণে এখনও পিছিয়ে রয়েছে। কখনও জোরপূর্বক ভোট কাস্ট করে দেওয়া হয়, আবার অনেকে ভোটের গুরুত্ব সম্পর্কেই পর্যাপ্ত ধারণা পান না। গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করতে এসব জনগোষ্ঠীর সচেতনতা বাড়ানোর ওপর তিনি গুরুত্বারোপ করেন।
এরপর IFES প্রতিনিধি নাসিরুল ইসলাম প্রিটেস্ট পরিচালনা করেন। মূল সেশনে গণতন্ত্র, নির্বাচন ও ভোটাধিকার সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেন সালাউদ্দিন ও এ কে আজাদ। আলোচনায় ভোটার লিস্ট যাচাই, ভোটকেন্দ্রের নিয়ম, গোপন ব্যালটের গুরুত্ব এবং দায়িত্বশীল ভোটারের আচরণ বিষয়ে অংশগ্রহণকারীরা হাতে-কলমে ধারণা পান।
অন্তর্ভুক্তিমূলক ভোটার শিক্ষা নিয়ে সালাউদ্দিন একটি রোল প্লে পরিচালনা করেন। সেশনের শেষে অংশগ্রহণ কারীদের শেখার অনুভূতি জানতে চাইলে এক প্রতিনিধি বলেন—“প্রতিবন্ধী ও পিছিয়ে থাকা জনগোষ্ঠী যেন ভোটের ক্ষেত্রে পিছিয়ে না থাকে—এটাই আমাদের দায়িত্ব।” রোকসানা রুমানা এ কথার গুরুত্ব ব্যাখ্যা করে বলেন, সঠিক তথ্য দেওয়া ও সহায়তা করা সমাজের নৈতিক দায়িত্ব।
পরবর্তী ধাপে শুরু হয় উঠান বৈঠক সেশন। এ কে আজাদ উঠান বৈঠকের উদ্দেশ্য ও কার্যকারিতা ব্যাখ্যা করেন। এরপর সাবিনা ইয়াসমিন উঠান বৈঠকের পূর্ণ আলোচ্যসূচী নিয়ে ডেমোনস্ট্রেশন করেন—যার মধ্যে ছিল পরিচিতি, ভোটের গুরুত্ব, নাম যাচাইয়ের নিয়ম, নতুন ভোটার নিবন্ধন, নারী ও আদিবাসীদের অংশগ্রহণ, গোপন ব্যালট, গুজব চেনার কৌশল প্রভৃতি। পরে শিরিনা (মণিপুরী), পারবনি, উত্তম দাস, অর্পিতা চৌধুরী, সুমনা বাউরি ও রায়মণি পাত্র তাদের নিজ নিজ গ্রুপে এই ডেমোনস্ট্রেশন অনুশীলন করেন।
দুপুরে বিরতির পর শুরু হয় মক ভোটিং সেশন। এ কে আজাদ, সালাউদ্দিন, মেহেদী সৈকত, সাবিনা ইয়াসমিন ও IFES প্রতিনিধিরা এই সেশন পরিচালনা করেন। অংশগ্রহণকারীরা ভোটার লিস্ট চেক করা থেকে শুরু করে ব্যালট গ্রহণ, গোপন কক্ষে ভোট প্রদান, ব্যালট বক্সে ফেলা—সবকিছুই হাতে-কলমে অনুশীলন করেন। অনেকেই জানান, এটি তাদের জীবনে প্রথমবার এমন প্রক্রিয়া শেখার অভিজ্ঞতা।
এরপর অনুষ্ঠিত হয় পথনাটক, যার মূল বিষয় ছিল গুজব, ভুল তথ্য ও ভোট নিয়ে প্রচলিত বিভ্রান্তি। নাটকে দেখানো হয় কিভাবে ভুল তথ্য ছড়িয়ে মানুষকে ভয় দেখানো হয় বা ভোটের সিদ্ধান্ত নিয়ন্ত্রণ করা হয়। এতে অংশগ্রহণকারীরা গুজব চিহ্নিত করা ও মোকাবিলার কৌশল শিখে নেন।
দিনশেষে অংশগ্রহণকারীদের প্রত্যাশা যাচাই করা হয়। বোর্ডে পিন করা ভিপ কার্ডের সঙ্গে সারা দিনের আউটপুট মিলিয়ে দেখা যায় অধিকাংশ প্রত্যাশাই পূরণ হয়েছে। পরে পোস্ট-টেস্ট নেওয়া হয়, এবং তিনজন অংশগ্রহণকারী তাদের অনুভূতি শেয়ার করেন। তারা জানান—ভোট নিয়ে ভুল ধারণা দূর হয়েছে, গুজব চেনার দক্ষতা বেড়েছে এবং উঠান বৈঠক পরিচালনায় আত্মবিশ্বাস অর্জন করেছেন।
শেষে IFES প্রতিনিধি রোকসানা আফরোজ এবং এ কে আজাদ ধন্যবাদ বক্তব্যের মাধ্যমে দিনের প্রশিক্ষণ সেশন সমাপ্ত ঘোষণা করেন।
জনপ্রিয়
বিজ্ঞাপন
পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...