ছবি : সংগৃহীত।
বিজ্ঞাপন
শাহজাহান রোডের ৩২/২/এ বাসার সপ্তম তলার ৭/বি ফ্ল্যাটে মালাইলা আফরোজ (৪৮) ও তার মেয়ে নাফিসা বিনতে আজিজকে (১৫) ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলা কেটে হত্যা করা হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, হত্যাকাণ্ডের পর গৃহকর্মী আয়শা (২৩) বাথরুমে গিয়ে গোসল করে, শরীরের রক্ত পরিষ্কার করে নেয়। এরপর সে মোহাম্মদপুর প্রিপারেটরি স্কুলের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী নাফিসার স্কুল ড্রেস পরে, কাঁধে ব্যাগ নিয়ে মুখ মাস্কে ঢেকে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।
নিহত মালাইলা আফরোজ গৃহিণী এবং মেয়ে নাফিসা বিনতে আজিজ স্থানীয় মোহাম্মদপুর প্রিপারেটরি স্কুলের ছাত্রী। নাফিসার বাবা এম জেড আজিজুল ইসলাম উত্তরার সানবিমস স্কুলের পদার্থবিজ্ঞানের শিক্ষক।
ভবনের একাধিক সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে পুলিশ জানিয়েছে, নাফিসার বাবা সকাল ৭টার দিকে স্কুলের উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বের হয়ে যান। সকাল ৭টা ৫১ মিনিটে বোরখা পরিহিত অবস্থায় গৃহকর্মী আয়শা লিফটে করে সাত তলায় ওঠে। এরপর সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটে কাঁধে স্কুল ব্যাগ ও নাফিসার স্কুল ড্রেস পরিহিত অবস্থায় মুখে মাস্ক লাগিয়ে তাকে বেরিয়ে যেতে দেখা যায়।
দুপুর সাড়ে ১১টার দিকে আজিজুল ইসলাম বাসায় ফিরে স্ত্রী ও মেয়েকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখতে পান। তিনি দ্রুত তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক নাফিসাকে মৃত ঘোষণা করেন। সুরতহালের পর ময়নাতদন্তের জন্য লাশ দুটি সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
নিহত নাফিসার বাবা এম জেড আজিজুল ইসলাম জানান, মাত্র চার দিন আগে বাসার দারোয়ান মালেকের মাধ্যমে ওই মেয়েকে গৃহকর্মী হিসেবে আনা হয়। সে নিজের নাম আয়েশা, বয়স আনুমানিক ২০ বছর, গ্রামের বাড়ি রংপুর বলে পরিচয় দেয়। তার বাবা-মা আগুনে পুড়ে মারা গেছেন এবং সে জেনেভা ক্যাম্পে চাচা-চাচির সঙ্গে থাকে বলে জানিয়েছিল। তার শরীরেও আগুনে পোড়ার ক্ষত ছিল বলে জানা যায়।
আজিজুল ইসলাম বলেন, মেয়েটি কাজ শুরুর পর প্রথম দুদিন সময়মতো এলেও গতকাল সাড়ে ৯টার দিকে আসে।
ঘটনাস্থল ফ্ল্যাটটিতে গিয়ে দেখা যায়, প্রবেশমুখ থেকে শুরু করে বিভিন্ন স্থানে রক্তের দাগ। আলমারিসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র এবং ভ্যানিটি ব্যাগ তছনছ করা অবস্থায় আছে। এতে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, মূল্যবান কিছু খোয়া যেতে পারে।
পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার ইবনে মিজান জানান, বাসায় ধস্তাধস্তির আলামত রয়েছে। এছাড়াও, ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ দুটি ধারালো ছুরি উদ্ধার করেছে, যা হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বাথরুমে ফ্রেশ হওয়ার আলামত পাওয়া গেছে। হত্যার পর ওই মেয়েটি ইন্টারকমের লাইনটি খুলে দেওয়ার চেষ্টা করেছিল বলেও জানা গেছে।
উপ-কমিশনার আরও জানান, সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ চলছে এবং হত্যার আগে-পরে গৃহকর্মীর উপস্থিতি ও অ্যাক্টিভিটিজ বিশ্লেষণ করে পরবর্তী তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। সিসিটিভি ফুটেজে একজনকে দেখা গেলেও, আশপাশে আরও কেউ ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ ঘটনায় ওই বাসার দারোয়ান মালেককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
জনপ্রিয়
বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...