বিজ্ঞাপন
মারধরের শিকার ভুক্তভোগী দর্শনার্থী হলেন পৌর শহরের রূপপুর মহল্লার মোঃ আমজাদ হোসেনের ছেলে মোঃ শাহনেওয়াজ।
জানা যায়, ঈদের ছুটিতে বাড়ি এসে ৮ জুন বিকেলে স্ত্রী ও ভাতিজাকে নিয়ে মোঃ শাহনেওয়াজ রবীন্দ্র কাচারিবাড়িতে ঘুরতে যান। এসময় দর্শনার্থীদের জন্য প্রবেশমূল্য নিয়ে টিকিট দেওয়া হলেও মোটরসাইকেল পার্কিংয়ের জন্য টাকা নেওয়া হলেও কোন টোকেন দেয়া হয়নি কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে। পরে কাচারিবাড়ি দর্শন শেষে বের হওয়ার সময়, মেইন গেটে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মচারী মোটরসাইকেলের টিকিট দেখতে চান।
মোটরসাইকেলের জন্য আলাদা কোন টিকিট না দেওয়ায় টিকিট দেখাতে ব্যর্থ শাহনেওয়াজের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়। কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে কাস্টোডিয়ানসহ কাচারিবাড়ির সব স্টাফ শাহনেওয়াজকে গেট থেকে কিলঘুষি মারধর শুরু করে এবং অফিসের মধ্যে নিয়ে গিয়ে সেখানেও আরেক দফা মারধর করা হয়।
পরে খবর পেয়ে শাহনেওয়াজের অভিভাবক ও স্থানীয় বিএনপির নেতৃবৃন্দ এসে তাকে উদ্ধার করে নিয়ে আসেন। এ ঘটনায় শাহনেওয়াজ বাদী হয়ে শাহজাদপুর থানায় ঐদিন রাতেই একটি লিখিত অভিযোগ দেন কাস্টোডিয়ানসহ কর্মচারীদের বিরুদ্ধে।
শাহনেওয়াজের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে শাহজাদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আছলাম আলী জানান, অভিযোগ তদন্ত চলছে।
এদিকে মারধরের ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হলেও ঘটনার দুই দিন অতিবাহিত হলেও কার্যকর কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে শাহজাদপুরের সর্বস্তরের জনসাধারণের ব্যানারে মঙ্গলবার (১০ জুন) দুপুরে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করা হয়।
বিক্ষোভ মিছিলটি শাহজাদপুরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে রবীন্দ্র কাচারিবাড়ির মধ্যে প্রবেশ করে। এসময় বিক্ষুব্ধ জনতা কাচারিবাড়ির কাস্টোডিয়ানের অফিসসহ অডিটোরিয়ামে ব্যাপক ভাঙচুর করে। পাশাপাশি অডিটোরিয়াম, বিদ্যুৎ ও বাগান পরিচারক মোঃ সিরাজুল ইসলামকে মারধর করা হয়।
এরপর খবর পেয়ে শাহজাদপুরের সহকারি কমিশনার (ভূমি) মোঃ মুশফিকুর রহমান ও থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিলে উপস্থিত শাহনেওয়াজের ভাই সবুজ, হান্নান ও সুমন জানান, প্রবাসী শাহনেওয়াজ ছুটিতে দেশে এসে স্ত্রীকে নিয়ে ঘুরতে গিয়েছিল কাচারিবাড়ি। তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আমার ভাইকে মারধর করা হয়েছে যা কোনো স্বাভাবিক মানুষ করতে পারে না। তারা আরও বলেন, এই কাস্টোডিয়ান দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই দর্শনার্থীদের সঙ্গে বাজে আচরণ করেন। প্রতিদিনই কোনো না কোনো দর্শনার্থীকে অফিসে ডেকে নিয়ে শারীরিক নির্যাতন করেন এবং চাঁদাবাজি করেন।
এ বিষয়ে শাহজাদপুর কাচারিবাড়ির কাস্টোডিয়ান হাবিবুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি ৮ জুনের ঘটনা অনাকাঙ্খিত উল্লেখ করেন, তবে ভাঙচুরের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে অসম্মতি প্রকাশ করেন।
শাহজাদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আছলাম আলী জানান, অডিটোরিয়াম ভাঙচুরের বিষয়ে কাস্টোডিয়ান একটি জিডি করেছেন। বিষয়টি নিয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এদিকে এক নোটিশের মাধ্যমে অনির্দিষ্টকালের জন্য রবীন্দ্র কাচারিবাড়ি দর্শনার্থীদের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
-তাহছিন নুরী খোকন, শাহজাদপুর (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি
জনপ্রিয়
বিজ্ঞাপন
পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...