বিজ্ঞাপন
এই অবক্ষয়ের অন্যতম প্রধান কারণ—কোরআনের নির্দেশনাকে উপেক্ষা করা।
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন—
“তোমরা তাদের (শত্রুদের) মোকাবেলায় যতটা সম্ভব শক্তি ও অশ্বসজ্জিত বাহিনী প্রস্তুত রাখবে, যার মাধ্যমে আল্লাহর শত্রু ও তোমাদের শত্রুকে ভয় দেখানো যাবে। এ ছাড়া এমন শত্রুও থাকবে, যাদের তোমরা চেন না, কিন্তু আল্লাহ চেনেন।” (সুরা আনফাল, আয়াত: ৬০)
তাফসিরবিদরা বলেন, এই ‘শক্তি’ বলতে অস্ত্র, প্রশিক্ষণ, যানবাহন থেকে শুরু করে আধুনিক প্রযুক্তি ও শারীরিক সক্ষমতা—সবকিছু অন্তর্ভুক্ত। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর যুগে যেখানে তীর-ধনুক, তলোয়ার ছিল, আজকের যুগে সেই শক্তির রূপ নিয়েছে ড্রোন, ক্ষেপণাস্ত্র ও সাইবার অস্ত্রে।
হাদিসে এসেছে, রাসুল (সা.) বলেন—
"জেনে রেখো, শক্তি হচ্ছে তীরন্দাজি।" (মুসলিম)
আরেক হাদিসে তিনি বলেন, "তোমরা তীরচালনা শেখো এবং ঘোড়সওয়ার হও। তবে তীরচালনা ঘোড়সওয়ারি অপেক্ষা উত্তম।" (তিরমিজি)
আধুনিক যুগে যুদ্ধ শুধু ময়দানে হয় না—অর্থনীতি, প্রযুক্তি, প্রচারমাধ্যম ও বুদ্ধিবৃত্তিক অঙ্গনেও প্রতিনিয়ত চলছে ইসলামের বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও আক্রমণ। অথচ মুসলিম নেতৃবৃন্দ আজ খেলাধুলা, বিনোদন ও রাজকীয় আড়ম্বরেই বেশি ব্যস্ত। অথচ তারা চাইলেই যে পরিমাণ সম্পদ ব্যয় করছেন বিলাসিতায়, তা দিয়ে আধুনিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলা যেত।
ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, ইসলামি বিজয়ের মূল শক্তি ছিল—আল্লাহর ওপর আস্থা, কোরআনের দিকনির্দেশনা, এবং যথাসম্ভব প্রস্তুতি। তরুণ বয়সে তারেক বিন জিয়াদ স্পেন জয় করেছেন, মুহাম্মদ বিন কাসিম সিন্ধু, আর মুহাম্মদ ফাতেহ মাত্র বিশ বছরে বিজয় করেছেন ইস্তাম্বুল।
ইসলাম শরীরচর্চা ও খেলাধুলাকে উৎসাহিত করেছে আত্মরক্ষার অংশ হিসেবে। হাদিসে এসেছে, “দুর্বল মুমিন অপেক্ষা সবল মুমিন আল্লাহর কাছে অধিক প্রিয়।” (মুসলিম) তাই দৌড়, সাঁতার, তীরচালনা, মার্শাল আর্ট—সবই ইবাদতের শামিল হতে পারে, যদি তা হয় আল্লাহর সন্তুষ্টি ও মুসলিমদের রক্ষার নিয়তে।
আজকের প্রজন্ম ভিডিও গেমস আর মোবাইল আসক্তিতে শারীরিক ও মানসিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ছে। অথচ ইসলাম তাদেরকে ফিট, সুস্থ ও প্রশিক্ষিত হতে বলে। প্রয়োজনে ব্যায়ামাগারে যেতে হবে, শেখাতে হবে আত্মরক্ষার কৌশল।
রাসুল (সা.) বলেন—
"যে ব্যক্তি জিহাদে অংশ নেয়নি, এমনকি অন্তত মনে মনে জিহাদের ইচ্ছাও করে না, সে একপ্রকার মুনাফেকির ওপর মারা যায়।" (মুসলিম)
এ আয়াত ও হাদিসগুলো শুধু ঐতিহাসিক গল্প নয়—এগুলো বর্তমান বাস্তবতায় মুসলিমদের অস্তিত্ব রক্ষার আহ্বান। যুদ্ধপ্রস্তুতির নির্দেশ কেবল রাষ্ট্রীয় বাহিনীর জন্য নয়, বরং উম্মাহর প্রতিটি সদস্যের জন্য সচেতনতা ও সক্ষমতা অর্জনের ফরজ আওকাফ।