বিজ্ঞাপন
এসব ঘটনায় ‘মব’ বা উচ্ছৃঙ্খল জনতার সৃষ্ট বিশৃঙ্খলার বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছে জোট।
বুধবার (২৫ জুন) বাম গণতান্ত্রিক জোটের কেন্দ্রীয় পরিষদের সভা থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব দাবি জানানো হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন জোটের সমন্বয়ক ও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স। এতে আরও উপস্থিত ছিলেন বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশিদ ফিরোজ, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবির জাহিদ, বাসদ (মার্ক্সবাদী)–এর সমন্বয়ক মাসুদ রানা, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু এবং সমাজতান্ত্রিক পার্টির নির্বাহী সভাপতি আব্দুল আলী।
সভায় নেতারা বলেন, গত ২২ জুন লালমনিরহাটে এক দরিদ্র নরসুন্দর বাবা ও তাঁর ছেলেকে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে স্থানীয় জনতা মারধর করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। একই দিনে, রাজধানীতে আওয়ামী লীগের প্রহসনের নির্বাচনে সহযোগিতাকারী সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদাকে একদল মব জুতার মালা পরিয়ে মারধর করে।
নেতারা বলেন, এসব ঘটনা আইনশৃঙ্খলার চরম অবনতি ও গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করার উদাহরণ। তাঁরা অভিযোগ করেন, দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নির্লিপ্ততা এসব সহিংসতার মূল কারণ। মব–সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সেনাপ্রধান বক্তব্য দিলেও বাস্তবে কোনো কার্যকর পরিবর্তন দৃশ্যমান নয়, যা দেশের জনগণের মধ্যে ভয় ও অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করছে।
সভায় বক্তারা আরও বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের ১০ মাস পেরিয়ে গেলেও মব–সন্ত্রাস রোধে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। বরং, জনগণের বাক্স্বাধীনতা দমন করে সরকার নিজের দায় এড়াতে চাইছে। তাঁরা এ পরিস্থিতিকে গণতন্ত্রের জন্য সরাসরি হুমকি বলে অভিহিত করেন।
এছাড়াও সভায় বর্তমান সরকারের একাধিক সিদ্ধান্ত—যেমন বন্দরের টার্মিনাল বিদেশি কোম্পানিকে লিজ দেওয়া এবং রাখাইনে করিডর দেওয়ার মতো ইস্যু নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। নেতারা জানান, এসব সিদ্ধান্ত দেশের সার্বভৌমত্বের পরিপন্থী এবং জনস্বার্থবিরোধী।
সভায় জানানো হয়, এসব নীতির প্রতিবাদে সাম্রাজ্যবাদবিরোধী দেশপ্রেমিক জনগণের উদ্যোগে ‘ঢাকা–চট্টগ্রাম রোডমার্চ’ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। তবে ২৩ জুন চট্টগ্রামে রোডমার্চের প্রচারণাকালে পুলিশ নেতাকর্মীদের বাধা দেয় বলে অভিযোগ ওঠে। নেতারা এই ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বলেন, এ ধরনের আচরণ গণতন্ত্র ও রাজনৈতিক স্বাধীনতার পরিপন্থী।
পরিশেষে, সভা থেকে ২৭ ও ২৮ জুন ‘ঢাকা–চট্টগ্রাম অভিমুখে রোডমার্চ’ সফল করার জন্য সর্বস্তরের জনগণের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।