ছবি : সংগৃহীত।
বিজ্ঞাপন
তবে, প্রধানমন্ত্রী পদে সর্বোচ্চ ১০ বছরের মেয়াদ নির্ধারণের প্রস্তাবে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে একটি সম্ভাব্য ঐকমত্য তৈরি হচ্ছে বলে তিনি জানান।
বুধবার (২৫ জুন) দুপুরে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বিতীয় পর্যায়ের সংলাপের ষষ্ঠদিনের প্রথম পর্ব শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
জোনায়েদ সাকি বলেন, “সংবিধানের বিদ্যমান চারটি মূলনীতি—জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা—বহাল রাখা কিংবা সংশোধন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতভেদ রয়ে গেছে। ফলে এ বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত ঐকমত্যে পৌঁছানো সম্ভব হয়নি।”
তবে তিনি জানান, নতুন একটি প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হয়েছে, যেখানে পাঁচটি মূল নীতিকে সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব এসেছে। এই পাঁচটি নীতির মধ্যে রয়েছে—সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক সুবিচার (যা ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের ঐক্যের ভিত্তি), গণতন্ত্র এবং ধর্মীয় স্বাধীনতা, সম্প্রীতি ও পক্ষপাতহীনতা।
তার আশা, বিদ্যমান মূলনীতি নিয়ে বিতর্ক চলমান থাকলেও এই নতুন প্রস্তাবিত পাঁচটি বিষয়কে সংবিধানের মূলনীতি হিসেবে গ্রহণের ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে রাজনৈতিক ঐকমত্য তৈরি হতে পারে।
প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদকাল সংক্রান্ত প্রস্তাবের প্রসঙ্গে সাকি বলেন, “একজন ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সর্বোচ্চ কত বছর দায়িত্ব পালন করবেন, সে বিষয়ে ১০ বছরের একটি সীমা নির্ধারণের প্রস্তাব এসেছে। এটি নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ইতিবাচক আলোচনা চলছে এবং একটি সমঝোতা গড়ে উঠছে বলে মনে হচ্ছে।”
তিনি আরও বলেন, নির্বাচন কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন, পাবলিক সার্ভিস কমিশন, মানবাধিকার কমিশন ও অডিটর জেনারেলসহ গুরুত্বপূর্ণ সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানে নিয়োগের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক প্রভাব স্পষ্ট। এই সমস্যা সমাধানে ‘সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ কমিটি’ গঠনের প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়েছে।
সাকি জানান, এই কমিটির কাঠামো সাত সদস্যবিশিষ্ট হতে পারে এবং এতে সরকারি দল, বিরোধীদল এবং বিচার বিভাগের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার প্রয়োজন রয়েছে। কমিটির দায়িত্ব ও জবাবদিহির কাঠামো নির্ধারণে আরও বিশদ আলোচনার প্রয়োজন বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, “এই প্রস্তাবগুলোর বাস্তবায়ন ও সংবিধান সংশোধনের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপের আগে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে গভীর আলোচনার প্রয়োজন আছে। আমরা মনে করি, গণতন্ত্রের পুনর্গঠন এবং ক্ষমতা বিকেন্দ্রীকরণ ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার জন্য এই আলোচনা সময়োপযোগী ও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”
বৈঠকে রাষ্ট্রের মূলনীতি ছাড়াও দ্বি-কক্ষ বিশিষ্ট সংসদ গঠন (বিশেষ করে উচ্চকক্ষের নির্বাচন পদ্ধতি), রাষ্ট্রপতির নির্বাচন পদ্ধতি এবং নারী প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিতকরণসহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সাংবিধানিক বিষয়ের ওপর আলোচনা হয়েছে বলে জানা গেছে।