ছবি: সংগৃহীত
বিজ্ঞাপন
কুরআনে উল্লেখ আছে, বছরের বারোটি মাসের মধ্যে চারটি মাস 'হারাম মাস'—যার একটি হলো মুহাররম। এই মাসে অন্যায়, যুদ্ধ-বিগ্রহ বা গোনাহর কাজ থেকে নিজেকে বিরত রাখা ইসলামের নির্দেশ।
মুহাররমের মর্যাদা হাদীসের আলোকে
রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন:
"রমাযানের পর শ্রেষ্ঠ রোজা হলো মুহাররম মাসের রোজা এবং ফরজ নামাযের পর শ্রেষ্ঠ নামায হলো রাতের তাহাজ্জুদ।"
এ থেকে স্পষ্ট, মুহাররম মাস ইবাদত-বন্দেগির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সময়।
আশূরা: ইতিহাস ও শিক্ষা
‘আশূরা’ শব্দটি এসেছে আরবী ‘আশারা’ (দশ) শব্দ থেকে। মুহাররম মাসের দশম দিনকে ‘আশূরা’ বলা হয়। এ দিনটির সঙ্গে বহু গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক ঘটনা জড়িত। যেমন, এই দিনে নবী মূসা (আঃ) ফেরাউনের কবল থেকে বনী ইসরাইলকে মুক্ত করেছিলেন। এজন্য নবী মূসা (আঃ) এই দিনে রোযা রাখতেন। রাসূলুল্লাহ (সা.) মদীনায় এসে যখন জানলেন, ইহুদিরাও এ দিন রোযা রাখে, তখন তিনি বললেন: "আমি মূসার অনুসরণে তাদের চেয়েও বেশি উপযুক্ত।" অতঃপর তিনি নিজে রোযা রাখেন এবং সাহাবীদের রোযার নির্দেশ দেন।
আশূরার রোযা পালন
মুহাররমের ১০ তারিখে (আশূরা) রোযা রাখা সুন্নত। রাসূল (সা.) রমাযানের রোযা ফরজ হওয়ার আগে আশূরার রোযা বিশেষ গুরুত্বসহ পালন করতেন। তবে পরে এই রোযা ফরজ না থাকলেও তার ফযীলত অটুট আছে। কেউ চাইলে একদিন রোযা রাখতে পারেন, আবার কেউ ৯ ও ১০ অথবা ১০ ও ১১ তারিখে দু’দিন রোযা রাখতে পারেন—এটি উত্তম।
সমাজে প্রচলিত কুসংস্কার থেকে সাবধান
দুঃখজনকভাবে, আশূরা উপলক্ষে অনেক কুসংস্কার ও শরীয়তবিরোধী কাজ সমাজে দেখা যায়—যেমন মাতম, রক্তপাত, বিশেষ খাবার বিতরণ ইত্যাদি। এসব ইসলামে অনুমোদিত নয়। মুহাররম মাস ও আশূরাকে সম্মান করার প্রকৃত পথ হলো—ইবাদত, রোযা পালন, তওবা, আত্মশুদ্ধি এবং গোনাহ থেকে বিরত থাকা।
লেখক:
মাওলানা হারুনুর রশীদ চতুলী
সহকারী মহাসচিব, জমিয়তে উলামায়ে বাংলাদেশ