প্রতিকি ছবি, সংগৃহীত
বিজ্ঞাপন
সুদ (আরবি: রিবা) ইসলামে একটি মহাপাপ এবং স্পষ্টভাবে হারাম ঘোষণা করা হয়েছে। এটি এমন একটি আর্থিক লেনদেন, যা সমাজে অন্যায় সুবিধা, বৈষম্য এবং পারস্পরিক সম্পর্কের অবনতি ঘটায়।
সুদ শুধু ব্যক্তিগত নয় বরং সামাজিক ও অর্থনৈতিক কাঠামোকেও ধ্বংস করে। তাই ইসলামে এর কঠোর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
কেন সুদ হারাম?
১. গরিবদের দুর্বলতা পুঁজি করে ধনী শ্রেণি সুবিধা নেয়
সুদ খোর ব্যক্তি গরিবদের প্রয়োজনের সুযোগ নিয়ে তাদের উপর বাড়তি ঋণের বোঝা চাপিয়ে দেয়। এতে গরিব আরও গরিব হয়ে পড়ে।
২. সমাজে বৈষম্য ও বিভেদ তৈরি হয়
সুদভিত্তিক সমাজে পারস্পরিক সহানুভূতির জায়গা দখল করে নেয় স্বার্থপরতা ও লোভ।
৩. বিশৃঙ্খলা, দ্বন্দ্ব ও সহিংসতা জন্ম নেয়
সুদগ্রহীতারা ঋণের চাপে পড়ে বিবাদে জড়ায়, যা মারামারি এমনকি হত্যাকাণ্ড পর্যন্ত গড়াতে পারে।
৪. শ্রম ও উৎপাদন নিরুৎসাহিত হয়
সুদখোররা ঝুঁকিমুক্ত আয় পেতে ব্যবসা-বাণিজ্য ও চাষাবাদ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়, যা অর্থনৈতিক স্থবিরতা আনে।
কুরআনের দৃষ্টিতে সুদ
“আল্লাহ সুদকে ধ্বংস করেন, আর দানকে বৃদ্ধি দেন।”
— [সূরা আল-বাকারাহ, আয়াত ২৭৬]
“হে মুমিনগণ! আল্লাহকে ভয় করো এবং যদি তোমরা সত্যিকার মুসলিম হও, তবে সুদের যা বাকি আছে তা ছেড়ে দাও।”
— [সূরা আল-বাকারাহ, আয়াত ২৭৮]
হাদিসের দৃষ্টিতে সুদ
“স্বর্ণের বিনিময়ে স্বর্ণ সমান সমান, রূপার বিনিময়ে রূপা সমান সমান, হাতে হাতে। অতএব, যে বাড়িয়ে নেয় বা বাড়াতে চায়, সে সুদে পতিত হয়।”
(সহীহ মুসলিম, হাদিস ১৫৮৭)
যেসব বস্তুর মধ্যে সুদ হারাম
রাসূল ﷺ ছয়টি বস্তুর ক্ষেত্রে সুদ হারাম করেছেন: সোনা, রূপা, গম, যব (বার্লি), খেজুর, লবণ
নিয়ম: এই বস্তুগুলো একে অপরের সাথে সম পরিমাণে, একই সাথে (হাতাহাতি), বাড়তি ছাড়াই লেনদেন করতে হবে। অন্যথায় তা সুদ গণ্য হবে।
যেসব জিনিস এই ছয়টির বৈশিষ্ট্য ধারণ করে (খাদ্যদ্রব্য, মুদ্রা), সেগুলোর ক্ষেত্রেও সুদ নিষিদ্ধ।
চিন্তার খোরাক
ইসলামের বিধানে সুদ শুধু ধর্মীয় দিক থেকেই নয়, অর্থনীতির জন্যও ক্ষতিকর হিসেবে প্রমাণিত। আধুনিক গবেষণাও দেখিয়েছে সুদ-ভিত্তিক ব্যবস্থায় দারিদ্র্যতা ও সম্পদের অসম বণ্টন বাড়ে।
সুদ ইসলামে একেবারে নিষিদ্ধ (হারাম)। এটি কুরআন ও হাদিসের আলোকে স্পষ্টভাবে প্রমাণিত। একজন মুসলমানের উচিত—আল্লাহর বিধান মেনে চলা এবং সুদ থেকে শতভাগ বিরত থাকা। এই পাপ থেকে নিজে বাঁচা এবং সমাজকে রক্ষা করা সবার দ্বীনী দায়িত্ব।
নির্ভরযোগ্য উলামা ও উৎস
আব্দুল্লাহ বিন কুয়ুদ, আব্দুল্লাহ বিন গাদয়ান, আব্দুররাজ্জাক আফিফী, ইবরাহীম বিন মুহাম্মদ আলে শেখ, শায়খ আব্দুল্লাহ বিন বায