বিজ্ঞাপন
বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) দুপুর ২টার দিকে গোবিপ্রবি ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে মোটরসাইকেল শোডাউন দেয়। অধিকাংশ মোটরসাইকেলে বহিরাগতদের উপস্থিতি ছিল স্পষ্ট। প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা ও প্রক্টরিয়াল দপ্তরের নির্দেশনা উপেক্ষা করে, এমনকি প্রক্টর অফিসের সামনেই শোডাউন করা হয়। এ সময় উচ্চ শব্দে হর্ন বাজিয়ে পরিবেশে প্রচণ্ড শব্দদূষণ সৃষ্টি করা হয়, যা চলমান ক্লাসে মারাত্মক বিঘ্ন ঘটায়।
ঘটনার পরপরই ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা প্রক্টর অফিসে গিয়ে প্রতিবাদ জানান। পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও তীব্র প্রতিবাদ ছড়িয়ে পড়ে।
শিক্ষার্থীরা জানান, শোডাউনের সময় ক্যাম্পাসে আতঙ্ক ও বিশৃঙ্খল পরিবেশ তৈরি হয়। আবাসিক হল ও প্রশাসনিক ভবনের সামনেও বাইকের হর্ন ও শব্দে পড়াশোনার পরিবেশ ভেঙে পড়ে। এ ঘটনার ভিডিও ও ছবি সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়, যেখানে বহিরাগতদের উপস্থিতি ও বিশৃঙ্খলার চিত্র স্পষ্ট।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনও এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে এবং প্রশাসনকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক বেলাল হোসেন আরিয়ান বলেন,
"আমি আজকের বহিরাগতদের বাইক শোডাউনের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক তোহা বহিরাগতদের নিয়ে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ক্যাম্পাসে শোডাউন করেছে। এ ধরনের অপকর্ম অতীতে দীর্ঘদিন ছাত্রলীগ চালিয়েছে, যা ছিল ক্যাম্পাস রাজনীতির কলঙ্কজনক সংস্কৃতি। আজকের ঘটনা সেই পুরনো সংস্কৃতি ফিরিয়ে আনার অপচেষ্টা।"
গোবিপ্রবি ছাত্রদলের সভাপতি দূর্জয় শুভ বলেন,
"এ ধরনের ঘটনা কখনোই কাম্য নয়। এটা অত্যন্ত অপ্রত্যাশিত। বিশ্ববিদ্যালয়ে বহিরাগতদের নিয়ে বাইক শোডাউন মেনে নেওয়া যায় না। আমরা আশা করি, ভবিষ্যতে তারা শিক্ষার্থীদের স্বার্থকে অগ্রাধিকার দেবে।"
ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম বিদ্যুৎ বলেন,
"প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বাইক শোডাউন কোনোভাবেই ঠিক হয়নি। তারা ছাত্রলীগের পূর্বতন ধারার রাজনীতির পথেই হাঁটছে। এ ঘটনা শিক্ষার্থীদের মনে ভীতির সঞ্চার করেছে এবং ক্যাম্পাসের নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে উঠেছে।"
ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের সভাপতি মঈনুদ্দিন সিফাত বলেন,
"এই ন্যাক্কারজনক ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী প্রশাসনকে অবশ্যই ব্যবস্থা নিতে হবে, অন্যথায় ওই আইন বাতিল করা উচিত। প্রশাসন যদি আইন প্রয়োগে ব্যর্থ হয়, তবে শিক্ষার্থীদের সামনে আইন দেখিয়ে বারবার ভয় দেখানোরও অধিকার তাদের নেই। এ ধরনের কাজের বিরুদ্ধে আমরা কঠোর জবাব দিতে প্রস্তুত।"
এ বিষয়ে প্রক্টর ড. আরিফুজ্জামান রাজিব বলেন,
"যারা প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করেছে, তাদের ডেকে কথা বলা হবে। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
-হাবিবুর রহমান, গোবিপ্রবি প্রতিনিধি