Logo Logo
অপরাধ

প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ছয়, শিক্ষক পাঁচ — প্রধান শিক্ষকের বাসায় বিদ্যালয়ের ল্যাপটপ


Splash Image

ঝালকাঠির রাজাপুর সদর ইউনিয়নের ৯৯ নং উত্তর পূর্ব ছোট কৈবর্তখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিতে শিক্ষার্থী আছে মাত্র ছয় জন।


বিজ্ঞাপন


অথচ এই ছয় শিক্ষার্থীর জন্য বিদ্যালয়ে কর্মরত রয়েছেন পাঁচ জন শিক্ষক। শিক্ষার্থী সংকটের পাশাপাশি বিদ্যালয়ে রয়েছে একের পর এক অনিয়মের অভিযোগ। প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ের ল্যাপটপ ব্যক্তিগত কাজে নিজের বাসায় রেখে ব্যবহার করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের ভবনের বেশিরভাগ শ্রেণিকক্ষ ফাঁকা। বিদ্যালয়ে তখন উপস্থিত ছিলেন চার জন শিক্ষক এবং ছয় জন শিক্ষার্থী। এর মধ্যে তৃতীয় শ্রেণিতে চার জন, চতুর্থ শ্রেণিতে একজন এবং পঞ্চম শ্রেণিতে একজন শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন। এক শ্রেণিকক্ষে দেখা যায়, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির দুই শিক্ষার্থী গল্প করছিল, সেখানে কোনো শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন না। অন্যদিকে তৃতীয় শ্রেণির চার শিক্ষার্থীর পরীক্ষা নিচ্ছিলেন একজন শিক্ষক।

দুপুর ২টা ১৫ মিনিট পর্যন্তও প্রাক-প্রাথমিক, প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি খাতায় লেখা হয়নি। সাংবাদিকরা হাজিরা খাতায় শিক্ষার্থীদের নাম না থাকার কারণ জানতে চাইলে, শিক্ষকদেরই সাংবাদিকদের সামনেই খাতায় নিজেদের মতো করে উপস্থিতি লিখতে দেখা যায়।

বিদ্যালয়টিতে প্রাক-প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত কাগজে-কলমে ৫১ জন শিক্ষার্থী দেখানো হলেও, স্থানীয়দের দাবি অনুযায়ী প্রতিদিন গড়ে ১০-১৫ জন শিক্ষার্থী উপস্থিত থাকে। বিদ্যালয়ে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম থাকলেও তা চালু হয়নি। প্রধান শিক্ষক সাহিদা খানম বিদ্যালয়ের ল্যাপটপও নিজের বাসায় নিয়ে রেখেছেন বলে জানা যায়। অভিযোগ রয়েছে, শিক্ষকরা নিয়মিতভাবে দাপ্তরিক সময় মেনে বিদ্যালয়ে উপস্থিত থাকেন না। ইচ্ছামতো ছুটি দিয়ে বিদ্যালয় বন্ধ করে চলে যান।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক সাহিদা খানম বলেন, “আমার বিদ্যালয়ে কাগজ-কলমে ৫১ জন শিক্ষার্থী আছে। এর মধ্যে প্রতিদিন গড়ে ৩০-৩৫ জন উপস্থিত থাকে। হাজিরা খাতায় প্রতিদিন হাজিরা নেওয়া হয়, আজ হয়তো কিছু লেখা হয়নি। একজন শিক্ষক কম থাকায় সমস্যা হচ্ছে। মাল্টিমিডিয়া এক মাস আগে পেয়েছি, সেটআপ করা হয়নি বলে চালু করতে পারিনি। আর ল্যাপটপ ঈদের ছুটির পর থেকে আনতে পারিনি, কারণ মূল্যায়ন পরীক্ষা চলছে।” তিনি এ বিষয়ে সংবাদ প্রকাশ না করার জন্য সাংবাদিকদের অনুরোধ করেন।

রাজাপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আকতার হোসেন বলেন, “শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চলাকালীন সময়ে সরকারি ল্যাপটপ অবশ্যই বিদ্যালয়ে থাকতে হবে। শিক্ষার্থীদের হাজিরা ক্লাস চলাকালীন সময়ে নিতে হবে। বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী উপস্থিতি কমসহ অন্যান্য অনিয়মের বিষয়ে তদন্তের জন্য প্রধান শিক্ষককে শোকজ করা হবে।”

রাজাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাহুল চন্দ্র জানান, “বিষয়টি সাংবাদিকদের মাধ্যমে জানতে পেরে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

-মো. নাঈম হাসান ঈমন, ঝালকাঠি প্রতিনিধি

আরও পড়ুন

জবির উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের প্রথম পুনর্মিলন
জবির উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের প্রথম পুনর্মিলন
নড়াইলে জেলা বিএনপির মৌন মিছিল ও সমাবেশ
নড়াইলে জেলা বিএনপির মৌন মিছিল ও সমাবেশ