ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি। ছবি : সংগৃহীত
বিজ্ঞাপন
তিনি বলেন, যদি ইসরায়েল ইরানে চালানো হামলার জন্য আন্তর্জাতিকভাবে জবাবদিহির আওতায় না আসে, তবে এই হামলার পরিণতি শুধু মধ্যপ্রাচ্য নয়, বরং গোটা অঞ্চল ও তার বাইরের দেশগুলোকেও বহন করতে হবে।
রিও ডি জেনিরোতে অনুষ্ঠিত এই সম্মেলনে আরাগচি অভিযোগ করেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের সাম্প্রতিক হামলা জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব ২২৩১ এবং পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক চুক্তি এনপিটির সরাসরি লঙ্ঘন। তিনি বলেন, “২০১৫ সালে এই প্রস্তাবে সর্বসম্মতিক্রমে ইরানের শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক কর্মসূচির অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল। অথচ এখন সেই কর্মসূচিকেই টার্গেট করা হচ্ছে।”
প্রসঙ্গত, গত মাসে ইসরায়েল হঠাৎ করেই ইরানের বেশ কয়েকটি সামরিক ও পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায়। এর পাল্টা জবাব দেয় ইরান। এই সংঘাত চলাকালে যুক্তরাষ্ট্র ইরানের নাতাঞ্জ, ফর্দো ও ইসফাহান পারমাণবিক স্থাপনায় পৃথক হামলা চালায়। আরাগচি বলেন, “আমাদের শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি হামলা ইসরায়েলের আগ্রাসনের সঙ্গে তাদের সম্পৃক্ততার অস্বীকারের আর কোনো সুযোগ রাখে না।”
এই সংঘাতের প্রেক্ষাপটে ব্রিকস প্লাসের অন্যান্য সদস্য রাষ্ট্রগুলো ইরানের পাশে দাঁড়িয়েছে। সম্মেলন থেকে দেওয়া এক যৌথ বিবৃতিতে তারা যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের সাম্প্রতিক বিমান হামলার তীব্র নিন্দা জানায়। ১১টি দেশের এই জোট বিবৃতিতে বলেছে, “আমরা ১৩ জুন থেকে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের বিরুদ্ধে চালানো সামরিক হামলার নিন্দা জানাই। আমরা বেসামরিক অবকাঠামো ও শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর ওপর ইচ্ছাকৃত হামলার বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি।”
বিশ্লেষকদের মতে, ব্রিকস সম্মেলন থেকে এই বিবৃতি তেহরানের কূটনৈতিক বিজয় হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
ইসরায়েলের সঙ্গে ১২ দিনের সংঘাতে ইরানে ভয়াবহ প্রাণহানির খবর দিয়েছে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এতে অন্তত ৯৩৫ জন নিহত ও ৫ হাজার ৩৩২ জন আহত হয়েছেন। জবাবে ইরানও ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালায় ইসরায়েলের ওপর। হিব্রু ইউনিভার্সিটি সূত্রে জানা গেছে, এই পাল্টা হামলায় ইসরায়েলে কমপক্ষে ২৯ জন নিহত এবং ৩ হাজার ৪০০ জনের বেশি মানুষ আহত হয়েছে।
ঘন ঘন পাল্টা হামলার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় ২৪ জুন থেকে দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর রয়েছে। তবে আন্তর্জাতিক মহল এই যুদ্ধবিরতিকে অস্থায়ী বলেই মনে করছে।