প্রতীকী ছবি।
বিজ্ঞাপন
একজন চাকরিপ্রার্থী হিসেবে নিজেকে যেভাবে তুলে ধরছেন, কীভাবে কথা বলছেন, এমনকি আপনি কোনো প্রশ্নের উত্তর জানেন না—সেটিও কীভাবে প্রকাশ করছেন, তা পর্যবেক্ষণ করেন ইন্টারভিউ বোর্ডের সদস্যরা।
ইন্টারভিউতে ভালো করার জন্য তাই আগে থেকে মানসিক প্রস্তুতির পাশাপাশি কিছু নির্দিষ্ট অভ্যাস গড়ে তোলাও জরুরি। যা একদিনে আয়ত্ত করা সম্ভব নয়। আজকের প্রতিবেদনে আমরা এমন কয়েকটি বিষয় তুলে ধরছি, যা চাকরির ইন্টারভিউতে সফল হওয়ার ক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা রাখবে—
⦿ এক সেকেন্ড সময় নিন
অনেকেই প্রশ্ন শোনার সঙ্গে সঙ্গেই উত্তর দেওয়া শুরু করেন। এটি সাধারণত নার্ভাসনেস বা অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসের প্রকাশ। তবে সঠিক পদ্ধতি হলো—প্রশ্ন শোনার পর এক বা দুই সেকেন্ড বিরতি নেওয়া। এই ছোট্ট বিরতি আপনাকে আপনার বক্তব্যকে সংগঠিত করতে সহায়তা করবে। ফলে আপনার উত্তর হবে আরও সুসংগত ও প্রাসঙ্গিক।
⦿ না জানলে স্বীকার করুন
ইন্টারভিউয়ে সব প্রশ্নের উত্তর জানা থাকাটা আবশ্যক নয়। কোনো প্রশ্ন বিভ্রান্তিকর মনে হলে বা জানা না থাকলে তা মেনে নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ। ভান করার চেয়ে সত্য বলা অধিক সম্মানজনক। বিনয়ের সঙ্গে স্বীকার করুন যে আপনি বিষয়টি পুরোপুরি জানেন না, তবে আপনি তা শেখার জন্য আগ্রহী। এতে আপনার সততা ও শেখার মানসিকতা উভয়ই প্রকাশ পায়।
⦿ ক্যারিয়ারে বিরতি থাকলে লুকাবেন না
কর্মজীবনে ছেদ পড়া অস্বাভাবিক কিছু নয়। কেউ হয়তো পরিবারকে সময় দেওয়ার জন্য, কেউ হয়তো নিজেকে নতুন করে গুছিয়ে নিতে, আবার কেউ হয়তো ভিন্ন কিছু শিখতে গিয়ে চাকরি থেকে বিরতি নিয়েছেন। এটি লুকানোর চেষ্টা করার চেয়ে স্বাভাবিকভাবে ব্যাখ্যা করাই উত্তম। কারণ একমাত্র স্বচ্ছ ব্যাখ্যাতেই আত্মবিশ্বাস ফুটে ওঠে।
⦿ তাড়াহুড়ো নয়, সময় মেনে পৌঁছান
ইন্টারভিউর নির্ধারিত সময়ের অনেক আগেই পৌঁছানো যেমন অস্বস্তিকর হতে পারে, তেমনি দেরিতে পৌঁছানো আপনার দায়িত্বজ্ঞানহীনতার বার্তা দিতে পারে। তাই নির্ধারিত সময়ের ১০ মিনিট আগে পৌঁছানোর চেষ্টা করুন। এটি আপনাকে মানসিকভাবে প্রস্তুতি নেওয়ার সময় দেবে এবং প্রফেশনালিজমেরও প্রকাশ ঘটাবে।
⦿ রিসার্চ করুন
যে প্রতিষ্ঠানে আপনি ইন্টারভিউ দিতে যাচ্ছেন, তাদের সম্পর্কে পূর্বধারণা থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিষ্ঠানটির কাজের ধরন, নেতৃত্বে কারা আছেন, সাম্প্রতিক প্রকল্প বা অর্জন কী—এসব সম্পর্কে পূর্বতথ্য থাকলে প্রশ্নের উত্তর দেওয়াও সহজ হবে। এ ছাড়া আপনি প্রতিষ্ঠানটি নিয়ে আগ্রহী তা বোঝাতেও সাহায্য করবে।
⦿ শারীরিক ভাষা বজায় রাখুন
আপনার দেহভঙ্গি এবং চোখে-মুখে আত্মবিশ্বাস প্রতিফলিত হওয়া উচিত। ইন্টারভিউর সময় সোজা হয়ে বসুন, হাত গুটিয়ে রাখবেন না এবং প্রশ্নকর্তার চোখের দিকে মাঝে মাঝে তাকান। মাথা উঁচু করে রাখুন। মনে রাখবেন—শুধু আপনিই চাকরি চান না, প্রতিষ্ঠানটিও যোগ্য প্রার্থী খুঁজছে। তাই নিজেকে ছোট করে ভাবার কোনো প্রয়োজন নেই।
ইন্টারভিউতে সফলতা শুধুমাত্র দক্ষতার ওপর নির্ভর করে না, এর পেছনে রয়েছে মনোভাব, অভ্যাস এবং প্রস্তুতির দীর্ঘ প্রক্রিয়া। উপরের বিষয়গুলো মনে রেখে অনুশীলন করলে আপনি ইন্টারভিউ বোর্ডের সামনে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে উপস্থিত হতে পারবেন। মনে রাখবেন, আপনি যোগ্য বলেই ডাক পেয়েছেন। তাই নিজেকে সম্মান করুন, নিজের দক্ষতায় বিশ্বাস রাখুন—সাফল্য আপনার কাছেই আসবে।