বিজ্ঞাপন
বলছিলাম খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট্রাল মসজিদের কথা।
বিশ্ববিদ্যালয় যে শুধু শিক্ষার কেন্দ্র নয়, এটি সংস্কৃতি, আধ্যাত্মিকতা ও সৌন্দর্যের একটি সমন্বিত ক্ষেত্র তা খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ প্রমাণ করে। এটি যেনো ক্যাম্পাসজুড়ে ছড়িয়ে থাকা এমন একটা স্থান যেখানে প্রার্থনার পাশাপাশি মেলে আত্মিক প্রশান্তি, ও স্থাপত্যের অপরূপ শোভা।
২০০৩ সালে তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম. আব্দুল কাদির ভূঁইয়ার সময়ে এই মসজিদটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। শুরু থেকেই এর পরিকল্পনায় জড়িয়ে ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্যবিদ্যা ডিসিপ্লিনের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মেধা ও শ্রম। সেই সময়ে মসজিদের নকশা প্রস্তুত করেন স্থাপত্যবিদ্যা ডিসিপ্লিনের তৎকালীন শিক্ষক মোহাম্মদ আলী নাকি। তবে আর্থিক সংকট ও প্রশাসনিক জটিলতার কারণে নির্মাণকাজ দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল। এরপর ২০১৪ সালে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ফায়েকুজ্জামান এটি পুনরায় নির্মাণের উদ্যোগ নেন। নকশায় কিছু পরিবর্তন এনে চূড়ান্ত নকশা সম্পন্ন করেন স্থাপত্যবিদ্যা ডিসিপ্লিনের সহযোগী অধ্যাপক মো. শেখ মারুফ হোসেন। এরপর ২০২০ সালের ২৮ আগস্ট উদ্বোধন করা হয় মসজিদটি। ১৫,০০০ বর্গফুট এলাকা জুড়ে অবস্থিত এই মসজিদটিতে রয়েছে ৩০টি কাতার যেখানে প্রায় ৩,০০০ মুসল্লী একসাথে সালাত আদায় করতে পারে। সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত এই মসজিদে নামাজ পড়তে দূরদুরন্ত থেকে মানুষ আসে। মধ্যপ্রাচ্যের আদলে তৈরি করা এই মসজিদটির প্রধান আকর্ষণ এই বিশাল গম্বুজ। এর স্থাপত্যশৈলীর বিশেষত্বের কারণে কোন প্রকার শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্র ছাড়াই মসজিদের ভেতরটা ঠান্ডা থাকে। নারীদের জন্যও আলাদা নামাজের ব্যবস্থা আছে এখানে। এছাড়াও বিভিন্ন ইসলামিক বই, পবিত্র কুরআন এর তাফসিরসহ, নবীদের জীবনি আছে এখানে। বর্তমানে এই মসজিদে কর্মরত আছেন দুই জন ইমাম। তারা হলেন ইমাম মুফতি আব্দুল কুদ্দুস এবং সহকারী ইমাম ক্বারী শাহাদুজ্জামান।
এই স্থানটি শুধুমাত্র প্রার্থনার জন্য নয়। রোজ বিকেলে এখানকার শিক্ষার্থীরা এই মসজিদ প্রাঙ্গণে বিশ্রাম নেয়। নিজেদের সমস্ত ক্লান্তি ভুলতে এক টুকরো প্রশান্তির উদ্দেশ্য প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ এখানে ভীড় করে।
-আফনান আজিজ