বিজ্ঞাপন
শুক্রবার (১১ জুলাই) রাতে এক ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে জানান, আলোচনায় অগ্রগতি হলেও তা যে কোনো সময় ভেস্তে যেতে পারে।
তিনি বলেন, “ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর যুক্তরাষ্ট্র সফরের সময় ইসরায়েলি প্রতিনিধি দল কেবলমাত্র সময়ক্ষেপণ করেছে। আলোচনার জন্য তারা এমন কর্মকর্তাদের পাঠিয়েছে, যাদের সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা নেই।”
বর্তমানে আলোচনা কেন্দ্রীভূত হয়েছে গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার ও মানবিক সহায়তা বিতরণ প্রক্রিয়ার ওপর। তবে এই দুটি ইস্যুতে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি অনুপস্থিত। ওই কর্মকর্তা জানান, ইসরায়েলি প্রতিনিধিরা এখনো এসব বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাতে পারছে না।
উল্লেখ্য, যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্ত নেতানিয়াহু গত বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্র সফর শেষে ওয়াশিংটন ত্যাগ করেন। তিনি আশা প্রকাশ করেছিলেন, আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই ৬০ দিনের একটি অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে। পরবর্তীতে স্থায়ী যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা হবে। তবে তিনি স্পষ্টভাবে জানান, হামাস ইসরায়েলের শর্ত মেনে স্থায়ী চুক্তিতে সম্মত না হলে গাজায় আবারও সামরিক অভিযান শুরু হবে।
এ পর্যন্ত দোহায় দুই পক্ষের মধ্যস্থতাকারীদের সহায়তায় আট দফা আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে মতবিরোধ থেকেই যাচ্ছে।
আলোচনায় হামাসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, গাজায় প্রবেশ করা সকল মানবিক সহায়তা জাতিসংঘ এবং আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থার মাধ্যমে বিতরণ করতে হবে। বিপরীতে, ইসরায়েল বিতর্কিত ‘গাজা মানবিক ফাউন্ডেশন’-এর মাধ্যমে ত্রাণ সরবরাহ করতে চায়। এই সংস্থার ত্রাণ সংগ্রহ করতে গিয়ে ইতোমধ্যে প্রায় ৮০০ ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন বলে দাবি করা হয়েছে।
এছাড়া, যুদ্ধবিরতি চলাকালীন ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গাজার কোন কোন অংশে থাকবে—তা নিয়েও দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ রয়েছে। আলোচনা চলাকালীন ইসরায়েল জানায়, যুদ্ধবিরতির সময় তাদের বাহিনী গাজা সীমান্ত থেকে ১ থেকে ১.৫ কিলোমিটারের মধ্যে অবস্থান করবে। কিন্তু পরে যে ম্যাপ দেওয়া হয়, সেখানে গাজার বেশ কিছু এলাকায় তিন কিলোমিটার ভেতর পর্যন্ত সেনা অবস্থানের তথ্য উঠে আসে। ওই ম্যাপ অনুসারে, রাফা শহর, খান ইউনিসের খুজা গ্রামের ৮৫ শতাংশ, বেঈত লাহিয়া ও বেঈত হানোন, এবং গাজা সিটির তুফাহ, সেজাইয়া ও জেইতুন এলাকায় ইসরায়েলি সেনারা থাকবে।
হামাস এই প্রস্তাবিত অবস্থানকে প্রত্যাখ্যান করেছে এবং একে বিশ্বাসঘাতকতা বলে উল্লেখ করেছে। হামাস নেতাদের মতে, এই অবস্থান যুদ্ধবিরতির চেতনার পরিপন্থী এবং ইসরায়েলের প্রতি আস্থার আরও ঘাটতি সৃষ্টি করেছে।
ফিলিস্তিনি ওই কর্মকর্তা বলেন, “নেতানিয়াহুর ওয়াশিংটন সফরের পর ইসরায়েলি প্রতিনিধিরা আলোচনায় অগ্রগতি হওয়ার ভান করছে। বাস্তবতা হচ্ছে, তারা আলোচনাকে বিভ্রান্তিকর ও ফলহীন রাখার চেষ্টা করছে।”