বিজ্ঞাপন
বিক্ষোভ কর্মসূচিটি শুরু হয় দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে, যা পর্যায়ক্রমে সমাবেশ ও মিছিলে রূপ নেয়।
বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত সমাবেশে শিক্ষার্থীরা দেশের বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও বিচার ব্যবস্থার প্রতি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
উল্লেখ্য, গত ৯ জুলাই (বুধবার) ঢাকার মিটফোর্ড এলাকায় ভাঙারি ব্যবসার সঙ্গে জড়িত মো. সোহাগের কাছে স্থানীয় যুবদল নেতাকর্মীরা চাঁদা দাবি করে। তিনি চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে পরিকল্পিতভাবে তার ওপর হামলা চালিয়ে পাথর দিয়ে মাথায় আঘাত করা হয় এবং প্রকাশ্যে নির্মমভাবে তাকে হত্যা করা হয়।
হামলার নৃশংসতা আরও ভয়াবহ হয়ে ওঠে যখন হত্যাকারীরা নিহতের নিথর দেহের ওপর দাঁড়িয়ে উল্লাস প্রকাশ করে—যা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশজুড়ে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, “এই হত্যাকাণ্ড কেবল একজন ব্যক্তিকে হত্যা নয়—এটি মানবতা, ন্যায়বিচার ও রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার ওপর সরাসরি আঘাত।” তারা আরও বলেন, “সোহাগের মৃত্যু আমাদের বিবেকের মৃত্যু। এই ঘটনার বিচার না হলে সমাজে ন্যায়ের জায়গা আরও সংকুচিত হবে।”
শিক্ষার্থীরা দেশে ক্রমবর্ধমান সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, ছিনতাই ও খুন-খারাবির বিরুদ্ধে তীব্র উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, এসব অপরাধ সাধারণ মানুষের জীবনের নিরাপত্তাকে চরমভাবে হুমকির মুখে ফেলেছে।
তারা প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান, যেন সোহাগ হত্যাকাণ্ডে জড়িত সকল অপরাধীর দ্রুত গ্রেফতার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা হয়। একইসঙ্গে, রাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানানো হয় চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাস নির্মূলে কার্যকর ও দৃঢ় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য।
বক্তারা বলেন, “আমরা একটি নিরাপদ, সহনশীল ও ন্যায়ভিত্তিক সমাজ চাই—যেখানে আর কোনো সোহাগকে এভাবে প্রাণ হারাতে না হয়।”
সমাবেশ-পরবর্তী বিক্ষোভ মিছিলটি বাংলাদেশ মেরিটাইম ইউনিভার্সিটির মেঘনা ভবনের সামনে থেকে শুরু হয়ে মিরপুর-১২ ও সাড়ে-১১ এলাকা প্রদক্ষিণ করে পুনরায় মেঘনা ভবনের সামনে এসে শেষ হয়।
বিক্ষোভ মিছিল শেষে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসসংলগ্ন স্থানে টাঙানো বিএনপির একটি দলীয় ব্যানার সরিয়ে ফেলেন। শিক্ষার্থীদের মতে, এই ব্যানার অপসারণ ছিল সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে তাদের প্রতীকী প্রতিবাদ।
এই কর্মসূচির মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা শুধু সোহাগ হত্যার বিচারই দাবি করেননি, বরং দেশের সার্বিক মানবাধিকার, ন্যায়বিচার ও নাগরিক নিরাপত্তা নিয়েও সচেতনতার বার্তা প্রদান করেন।
প্রতিবেদক- সাদিকুর রহমান সাদি
ক্যাম্পাস প্রতিনিধ