Logo Logo
রাজনীতি

পিআর পদ্ধতিতে সংসদ নির্বাচন চায় ইসলামী আন্দোলন, সহমত জামায়াতের


Splash Image

ছবি : সংগৃহীত।

সংবিধান ও রাষ্ট্রীয় সংস্কারে স্থায়ী সুরক্ষা নিশ্চিত করতে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটের অনুপাতে আসন বণ্টন (প্রোপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন-পিআর) পদ্ধতি চালুর দাবি জানিয়েছে চরমোনাই পীরের নেতৃত্বাধীন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ।


বিজ্ঞাপন


দলটির এ দাবির প্রতি একাত্মতা প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীসহ আরও কয়েকটি রাজনৈতিক দল।

শনিবার (১২ জুলাই) ঢাকার একটি হোটেলে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের উদ্যোগে আয়োজিত এক গোলটেবিল বৈঠকে এসব দাবি ও মতামত তুলে ধরেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। বৈঠকের শিরোনাম ছিল— ‘গণ–অভ্যুত্থানের পরবর্তী নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে প্রয়োজনীয় রাষ্ট্র সংস্কার, গণহত্যার বিচার এবং জাতীয় নির্বাচনের পদ্ধতি’।

সভাপতির বক্তব্যে ইসলামী আন্দোলনের আমির সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম (চরমোনাই পীর) বলেন, “প্রোপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন (পিআর) পদ্ধতি হলো মাদার অব অল রিফর্ম। এটি বাস্তবায়ন ছাড়া প্রকৃত গণতন্ত্র কল্পনাও করা যায় না।”

তিনি আরও বলেন, দেশে দীর্ঘদিন ধরে একই দল ক্ষমতায় থেকেও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা আসেনি। “ইতালিতে ঘন ঘন সরকার বদলালেও রাজনৈতিক স্থিতি রয়েছে। পক্ষান্তরে বাংলাদেশে ১৯৮১ সাল থেকে প্রায় একই দল ক্ষমতায় থাকলেও স্থিতিশীলতা নেই।”

পিআর পদ্ধতিকে আঞ্চলিক প্রতিনিধিত্বহীন বলে বিএনপির করা সমালোচনার জবাবে তিনি বলেন, “বাংলাদেশ জাতিগত, ভাষাগত দিক থেকে একক ধারার দেশ। স্থানীয় প্রতিনিধিত্ব অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ, তবে তুরস্কের মতো বিভাগভিত্তিক পিআর ব্যবস্থা চালু করলেই ভৌগোলিক ভারসাম্য নিশ্চিত করা সম্ভব।”

এমপিদের এলাকা ভিত্তিক নির্বাচন না থাকলে জনগণ বঞ্চিত হবে—এমন সমালোচনার জবাবে তিনি বলেন, “এমপির কাজ এলাকার উন্নয়ন নয়; তাদের কাজ হলো বৈষম্যহীন নীতি প্রণয়ন। উন্নয়নের দায়িত্ব স্থানীয় সরকারের প্রতিনিধি পর্যায়ে থাকা উচিত। এমপিরা যদি প্রার্থী না হন, তাহলে কেউ আর ভোট ডাকাতির জন্য মরিয়া হবে না। এতে নির্বাচনও সুষ্ঠু হবে।”

বৈঠকে জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, “বিএনপি নয়, অন্যান্য দলই এখন জনগণের প্রতিনিধিত্ব করছে। অথচ একটি দলের কারণে রাষ্ট্র সংস্কারে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা আটকে যাচ্ছে। যদি ঐকমত্য না হয়, তাহলে কমিশনের উচিত গণভোটের আয়োজন করা।”

তিনি আরও বলেন, “পিআরে একমত দলগুলোর সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করা হোক। আমরা স্পষ্ট বলছি, সংস্কার ছাড়া কোনো নির্বাচনে যাব না। বিএনপি এখন বলছে, আমরা নির্বাচন পেছানোর কৌশল নিচ্ছি। কিন্তু বাস্তবে তারাই সংস্কারে আগ্রহ দেখাচ্ছে না।”

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, “বর্তমানে প্রচলিত নির্বাচন ব্যবস্থা দলবাজির জন্ম দিচ্ছে। উচ্চকক্ষে পিআর পদ্ধতি থাকলে সংবিধানে যা-খুশি নয়-ছয় করে হাত দেওয়া ঠেকানো সম্ভব হবে।”

এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু, খেলাফত মজলিসের মহাসচিব আহমাদ আবদুল কাদের, নেজামে ইসলাম পার্টির মহাসচিব মাওলানা মুসা বিন ইজহার, গণ অধিকার পরিষদের হাবিবুর রহমান, ইসলামী ঐক্যজোটের মাওলানা ফজলুর রহমান, খেলাফত আন্দোলনের মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী এবং বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মাওলানা আতাউল্লাহ আমিন-সহ অংশগ্রহণকারী নেতারাও পিআর ভিত্তিক নির্বাচন ব্যবস্থাকে গণতন্ত্রের বিকল্পমুখী সংস্কার হিসেবে উল্লেখ করেন।

চরমোনাই পীর আরও বলেন, “জুলাই সনদের আইনি বৈধতা নিয়ে মতানৈক্য রয়েছে। এ নিয়ে রাজনৈতিক চাপ রয়েছে বলেই অনেকেই এখন সংস্কারে রাজি হলেও, পরবর্তী রাজনৈতিক সরকার তা ধরে রাখবে কি না, তা অনিশ্চিত। বিগত সময়ে ৪০ থেকে ৪৯ শতাংশ ভোট পেয়ে এককভাবে দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে সংবিধানে একতরফা সংশোধন করার নজিরও রয়েছে। একই ঘটনা আবার ঘটতে পারে, যদি বর্তমান নির্বাচন ব্যবস্থা বহাল থাকে।”

আরও পড়ুন

জবির উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের প্রথম পুনর্মিলন
জবির উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের প্রথম পুনর্মিলন
নড়াইলে জেলা বিএনপির মৌন মিছিল ও সমাবেশ
নড়াইলে জেলা বিএনপির মৌন মিছিল ও সমাবেশ