বিজ্ঞাপন
শনিবার (১২ জুলাই) দীর্ঘ ৮ বছর পর অনুষ্ঠিত সম্মেলনের পর রোববার (১৩ জুলাই) এ পরিস্থিতি আরও ঘনীভূত হয়।
জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পয়গাম আলী বিকালে এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, ভোটগ্রহণ শেষে ফলাফল ঘোষণার পূর্বেই সম্মেলনস্থলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। প্রার্থী অ্যাড. মো. সৈয়দ আলম ও সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী ড. টিএম মাহবুবর রহমানের নেতৃত্বে উশৃঙ্খল কর্মীরা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সল আমিনের ওপর লাঠিসোঁটা ও চেয়ার দিয়ে হামলা চালায় এবং তার গাড়ি বহরে ভাঙচুর করে। এ সময় জেলা নেতৃবৃন্দ তাকে রক্ষা করতে গিয়ে আহত হন। পরিস্থিতি বিবেচনায় ভোটের লিখিত ফলাফল স্থগিত করা হয়।
অন্যদিকে, ভোটের ফলাফল স্থগিতের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা। রাত সাড়ে ৯টার দিকে শহরে একটি বিক্ষোভ মিছিল শেষে সংবাদ সম্মেলন করেন সভাপতি প্রার্থী অ্যাড. সৈয়দ আলম ও সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী ড. টিএম মাহবুবর রহমান। তারা অভিযোগ করেন, “জেলা বিএনপি ফলাফল স্থগিত করে দলীয় প্রার্থীকে জয়ী করতে চাইছে। আমরা এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করছি।”
ড. মাহবুবর রহমান অভিযোগ করেন, “মির্জা ফয়সল আমিনের গাড়িবহরে হামলার পেছনে জামায়াত ও আওয়ামী লীগের মদদ থাকতে পারে। এটি তার জনপ্রিয়তা ক্ষুণ্ণ করার পরিকল্পিত অপচেষ্টা।” তিনি আরও বলেন, “ঠাকুরগাঁও-২ আসনের সাবেক এমপি মির্জা রুহুল আমিনের উত্তরসূরি হিসেবে ফয়সল আমিনকে নির্বাচনে দেখতে চায় না অনেকেই। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেই তার ভাবমূর্তি নষ্ট করার চেষ্টা চলছে।”
তারা দাবি করেন, সম্মেলন ছিল শান্তিপূর্ণ এবং গণতান্ত্রিক। বিএনপির কেউ বিশৃঙ্খলার সঙ্গে জড়িত নয়। বরং দেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এটিকে একটি পরিকল্পিত হামলা বলে দাবি করেন তারা।
এদিকে, জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও সভাপতি পদপ্রার্থী আবু হায়াত নুরুন্নবী ও তার অনুসারীরাও চাড়োল ইউনিয়নের লাহিড়ী বাজারে পৃথক সংবাদ সম্মেলন করেন। তারা মির্জা ফয়সল আমিনের ওপর হামলার নিন্দা জানিয়ে হামলাকারীদের বহিষ্কার, পুনরায় ভোট গণনা এবং চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশের দাবি জানান।
তিনি বলেন, “বিএনপির শীর্ষ নেতার ওপর হামলা বরদাশতযোগ্য নয়। হামলাকারীদের চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনতে হবে।”
এ পরিস্থিতিতে সিনিয়র নেতারা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন ঘিরে বিএনপির অভ্যন্তরে যে বিভক্তি তৈরি হয়েছে তা দ্রুত নিরসন না হলে বড় ধরনের সংঘর্ষে রূপ নিতে পারে।
এর আগে, শনিবার ভোট গ্রহণ শেষে ফলাফল ঘোষণায় বিলম্ব হলে সমির উদ্দিন স্মৃতি মহাবিদ্যালয় কেন্দ্রে উপস্থিত নেতাকর্মীরা কারচুপির অভিযোগে উত্তেজনা সৃষ্টি করে। মৌখিক ফল ঘোষণার পরপরই মির্জা ফয়সল আমিনের গাড়িবহরে হামলা ও ভাঙচুর হয়, যাতে চারজন আহত হন।
-মোঃহুমায়ুন কবির রেজা ঠাকুরগাঁও