Logo Logo
জাতীয়

প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের শূন্যপদে দ্রুত নিয়োগের নির্দেশ


Splash Image

দেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে প্রধান শিক্ষকের দীর্ঘদিনের শূন্যপদ পূরণে দ্রুততম সময়ের মধ্যে নিয়োগ সম্পন্নের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।


বিজ্ঞাপন


সোমবার (১৪ জুলাই) বিকেলে রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অনুষ্ঠিত এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে তিনি এ নির্দেশ দেন। বৈঠকে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার, মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু তাহের মো. মাসুদ রানা, প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব সিরাজ উদ্দিন মিয়াসহ সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে বৈঠকের বিস্তারিত জানানো হয়।

বৈঠকে দেশের প্রাথমিক শিক্ষার মান, প্রতিষ্ঠানভিত্তিক পারফরম্যান্স এবং কাঠামোগত উন্নয়ন সত্ত্বেও কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতির অভাব নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।

উপদেষ্টা ড. বিধান রঞ্জন রায় জানান, “প্রাথমিক শিক্ষা ক্ষেত্রে অবকাঠামো উন্নয়নে ব্যাপক অর্থব্যয় হলেও শিক্ষার মূল লক্ষ্য—মানোন্নয়ন—সেটি এখনও অর্জিত হয়নি। তাই আমরা স্কুলগুলোর কর্মদক্ষতার ভিত্তিতে র‍্যাংকিং করছি। যেসব স্কুল পিছিয়ে, তাদের জন্য বিশেষ কর্মসূচি নেওয়া হচ্ছে।”

মূল্যায়নে দেখা গেছে, যেসব স্কুল ভালো করছে, সেখানে প্রধান শিক্ষকের নেতৃত্ব, তার সহকর্মীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক এবং ব্যবস্থাপনার দক্ষতা বড় ভূমিকা রাখছে। অথচ বর্তমানে দেশের প্রায় ৩২ হাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পদ শূন্য রয়েছে।

এ অবস্থায় দ্রুত পদায়নের পাশাপাশি নতুন নিয়োগ কার্যক্রম শুরুর নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, “স্কুলগুলোতে প্রধান শিক্ষক নিয়োগে যোগ্যতাকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। কয়েকটি ক্যাটাগরি করে দিতে হবে—অভিজ্ঞ শিক্ষকরা অগ্রাধিকার পাবেন, তবে তরুণরাও সুযোগ পাবেন প্রধান শিক্ষক হিসেবে। এই প্রক্রিয়াটি যেন স্বচ্ছ ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়, সেটি নিশ্চিত করতে হবে।”

তিনি দ্রুত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের জন্য সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)-এর সঙ্গে সমন্বয়ের নির্দেশ দেন এবং শিক্ষকদের বদলির ক্ষেত্রে বিদ্যমান নীতিমালা পুনর্বিবেচনার নির্দেশনাও দেন।

“এক উপজেলায় নিয়োগ পাওয়ার পর অনেক শিক্ষক শহরের কাছে বদলির জন্য তদবিরে ছোটেন। এ প্রক্রিয়া বন্ধে একটি নির্দিষ্ট ও স্বচ্ছ নীতিমালা থাকতে হবে, যার বাইরের কোনো সুপারিশ চলবে না,” বলেন অধ্যাপক ইউনূস।

বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা বিদ্যালয় অবকাঠামোতে নারীবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টির ওপরও গুরুত্ব দেন। তিনি বলেন, “স্কুল ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে অন্তত একজন নারী স্থপতিকে অবশ্যই সম্পৃক্ত করতে হবে, যেন ভবনগুলো মেয়েদের জন্য নিরাপদ ও স্বাচ্ছন্দ্যময় হয়। পরিকল্পনায় মেয়েদের প্রয়োজনগুলোকে আলাদা গুরুত্ব দিতে হবে।”

একই সঙ্গে তিনি দেশের প্রতিটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ধাপে ধাপে ইন্টারনেট সংযোগ এবং মাল্টিমিডিয়া শ্রেণিকক্ষ চালুর নির্দেশনা দেন।

উল্লেখ্য, প্রধান উপদেষ্টা বৈঠকে স্পষ্ট করে বলেন, শিক্ষার মান বাড়াতে কেবল অবকাঠামো নয়, বরং স্কুলভিত্তিক পারফরম্যান্স, শিক্ষক নেতৃত্ব ও পরিবেশগত উপাদানগুলোকেই গুরুত্ব দিয়ে জাতীয় পরিকল্পনা নিতে হবে।

অধ্যাপক ইউনূসের এই উদ্যোগকে শিক্ষা প্রশাসনের ভেতরে একটি বাস্তবমুখী এবং সময়োপযোগী পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন, দ্রুত প্রধান শিক্ষক নিয়োগ এবং নীতিমালাভিত্তিক বদলির মাধ্যমে প্রাথমিক শিক্ষাব্যবস্থায় শৃঙ্খলা ও গুণগত উন্নয়ন সম্ভব হবে।

আরও পড়ুন

জবির উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের প্রথম পুনর্মিলন
জবির উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের প্রথম পুনর্মিলন
নড়াইলে জেলা বিএনপির মৌন মিছিল ও সমাবেশ
নড়াইলে জেলা বিএনপির মৌন মিছিল ও সমাবেশ