অধ্যাপক আলী রীয়াজ। ফাইল ছবি
বিজ্ঞাপন
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে চলমান সংলাপ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, “ব্যর্থ হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। যে দায়দায়িত্ব আমাদের উপর অর্পিত হয়েছে, সে দায়িত্ব রাজনৈতিক দলের হিসেবে আপনাদের উপর, আমরা তার অংশীদার হয়েছি মাত্র। কমিশন আপনাদের প্রচেষ্টার অংশীদার হয়েছে, আলাদা সত্তা হিসেবে যুক্ত হয়নি।”
মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দ্বিতীয় ধাপের সংলাপের ১৪তম দিনের সূচনা বক্তব্যে এ কথা বলেন অধ্যাপক আলী রীয়াজ।
কমিশনের আজকের আলোচ্যসূচিতে ছিল দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সংসদ, সংবিধান সংশোধন এবং সংসদের নারী আসন সংক্রান্ত প্রস্তাব। আলোচনায় অংশ নেওয়া দলগুলোর উদ্দেশে আলী রীয়াজ বলেন, “বাংলাদেশের মানুষ আপনারা সবাই। আপনাদের কর্মীরা প্রাণ বাজি রেখে লড়াই করেছিলেন বলেই আমরা এখানে আসতে পেরেছি। সেই স্মৃতি ও পরিস্থিতি আমাদের উপর যে দায়িত্ব অর্পণ করেছে, তা পালনে কোনো ঘাটতি থাকা উচিত নয়। আপনারাও সেই চেষ্টা করছেন, আমরাও আপনাদের সঙ্গে মিলে সেই প্রচেষ্টার অংশীদার।”
তিনি সময় সঙ্কটের কথা উল্লেখ করে বলেন, “সময়ের স্বল্পতার কারণে আলোচনার ক্ষেত্রে প্রত্যাশিত অগ্রগতি অর্জন করতে পারছি না। কিন্তু এই সপ্তাহের পরে সময় আরও সংকুচিত হবে। বাস্তবতার নিরিখে আমাদের দ্রুত কিছু বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। নিষ্পত্তিহীন বিষয়গুলো আপনারা জানেন। আশা করি সেগুলো বিবেচনায় রাখবেন।”
জাতীয় সনদ প্রণয়ন প্রসঙ্গে আলী রীয়াজ বলেন, “সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমাদের একটি জাতীয় সনদ তৈরি করতে হবে। যতদূর সম্ভব সবাইকে নিয়ে এক জায়গায় পৌঁছাতে হবে। এ জন্য প্রত্যেককে কিছু না কিছু অবস্থানগত পরিবর্তন করতে হবে বলে আশা করি। জুলাই মাসের মধ্যেই যেন জাতীয় সনদ প্রণয়ন সম্ভব হয়, সেই লক্ষ্যেই আমাদের এগোতে হবে। মৌলিক বিষয়গুলোতে যতটা সম্ভব সবার মতামতের ভিত্তিতেই এই সনদ গঠন করতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর সহযোগী হিসেবে কাজ করছে। আমাদের সবারই সফল হতে হবে। সেই সাফল্যের মাপকাঠি হচ্ছে, কাঠামোগত সংস্কার নিয়ে আমরা একমত হতে পারছি কি-না। কিছু বিষয়ে আমরা ইতোমধ্যে একমত হয়েছি, কিছু বিষয়ে প্রাথমিক ঐকমত্য হয়েছে, আর কিছু বিষয় এখনও নিষ্পত্তিহীন রয়েছে। আমরা এগুলো আলোচনা করব।”
অধ্যাপক আলী রীয়াজ আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, “আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই সব বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে হবে। সেই সিদ্ধান্ত গ্রহণের সময় যেন প্রত্যেকে তার দায় ও দায়িত্ব অনুভব করেন। আমাদের স্মরণে রাখা উচিত—এই প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণকারীদের আত্মত্যাগ, জনগণের প্রত্যাশা এবং সেই প্রত্যাশা পূরণে আমাদের ভূমিকা।”
অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারের সঞ্চালনায় আরও উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সদস্য সফর রাজ হোসেন, বিচারপতি এমদাদুল হক, ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. ইফতেখারুজ্জামান এবং ড. আইয়ুব মিয়া।
