Logo Logo
বিশ্ব

সামরিক পরিষেবা বিল নিয়ে নেতানিয়াহুর সরকারে ফাটল


Splash Image

গ্রাফিক্স : ভোরের বাণী।

ইসরায়েলের রাজনীতিতে নতুন করে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন জোটে ভাঙনের ফলে।


বিজ্ঞাপন


ইয়েশিভা শিক্ষার্থীদের জন্য সামরিক পরিষেবা থেকে অব্যাহতি সংক্রান্ত একটি বিতর্কিত বিল পাসে সরকারের ব্যর্থতার প্রতিবাদে কট্টর ডানপন্থী ধর্মীয় দল ইউনাইটেড তোরাহ জুডাইজম (ইউটিজে) জোট থেকে বেরিয়ে গেছে।

দলটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সাত সংসদ সদস্যের মধ্যে ছয়জন ইতোমধ্যেই পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। এর আগে, গত মাসে ইউটিজে চেয়ারম্যান ইৎজাক গোল্ডনফ নিজেই পদত্যাগ করেছিলেন। মূলত দুটি ধর্মীয় সংগঠন—দেগেল হাতোরাহ ও আগুদাত ইসরায়েল—এর সমন্বয়ে গঠিত ইউটিজে ২০২২ সালের শেষ দিকে জোটে যোগ দিয়েছিল, যেখানে ইয়েশিভা শিক্ষার্থীদের সেনা অব্যাহতি নিশ্চিত করাই ছিল তাদের প্রধান শর্ত।

এই পদত্যাগের ফলে ১২০ আসনের ইসরায়েলি পার্লামেন্ট কনেসেটে নেতানিয়াহুর জোটের সংখ্যাগরিষ্ঠতা এখন মাত্র ৬১-এ নেমে এসেছে, যা তাকে এক অত্যন্ত নড়বড়ে অবস্থানে দাঁড় করিয়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এই সংকট সরকারকে চরম রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার মুখে ঠেলে দিয়েছে।

দেগেল হাতোরাহ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, “সরকার একাধিকবার প্রতিশ্রুতি ভেঙেছে। তারা বারবার জানালেও, এখন পর্যন্ত ইয়েশিভা শিক্ষার্থীদের পবিত্র ধর্মীয় অধ্যয়নের মর্যাদা রক্ষায় প্রয়োজনীয় আইন পাস করতে ব্যর্থ হয়েছে। প্রধান রাব্বিদের পরামর্শের ভিত্তিতেই আমরা এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছি।”

দলীয় মুখপাত্রও সাত সংসদ সদস্যের পদত্যাগের খবর নিশ্চিত করেছেন। ইউটিজে ছাড়াও অন্যান্য কট্টর ডানপন্থী দলগুলোও দীর্ঘদিন ধরে দাবি করে আসছিল যে, ইয়েশিভা শিক্ষার্থীদের জন্য সামরিক পরিষেবা থেকে আইনি অব্যাহতি দিতে হবে। এই দাবির বাস্তবায়নে বিলটি পাস করাকে তারা জোটে থাকার অন্যতম শর্ত হিসেবে উল্লেখ করেছিল।

উল্লেখ্য, ইসরায়েলে অধিকাংশ তরুণ-তরুণীর জন্য সেনাসেবা বাধ্যতামূলক হলেও ধর্মীয় শিক্ষার্থীরা ঐতিহাসিকভাবে এর আওতায় পড়তেন না। তবে ২০২৪ সালে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট একটি যুগান্তকারী রায়ে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেয়, এ ধরনের অব্যাহতির ব্যবস্থা বাতিল করে ধর্মীয় শিক্ষার্থীদেরও সেনা পরিষেবায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

চলমান গাজা যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে ইসরায়েলে সেনা নিয়োগ বর্তমানে একটি চরম স্পর্শকাতর ও রাজনৈতিকভাবে বিভাজক ইস্যুতে পরিণত হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে নেতানিয়াহু সরকার জোটে ঐক্য রক্ষা এবং বিতর্কিত বিলটি নিয়ে সমঝোতা খোঁজার চেষ্টা চালালেও, শেষ পর্যন্ত তা ব্যর্থ হয়।

এদিকে আরেক কট্টর ধর্মীয় দল শ্যাস এখনো সরকারে রয়ে গেছে। তবে তারা ইউটিজের পথ অনুসরণ করবে কি না, তা এখনও নিশ্চিত নয়। বিশ্লেষকরা আশঙ্কা করছেন, শ্যাসও যদি জোট ছাড়ে, তাহলে সরকার একেবারে ভেঙে পড়তে পারে।

ইসরায়েলের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ এখন অনিশ্চয়তার মুখে। একদিকে চলমান যুদ্ধ, অন্যদিকে সরকারের ভিতরে ফাটল—এই দুইয়ের সমন্বয়ে দেশটি একটি নতুন রাজনৈতিক মোড়ে প্রবেশ করতে যাচ্ছে বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা।

আরও পড়ুন

জবির উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের প্রথম পুনর্মিলন
জবির উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের প্রথম পুনর্মিলন
নড়াইলে জেলা বিএনপির মৌন মিছিল ও সমাবেশ
নড়াইলে জেলা বিএনপির মৌন মিছিল ও সমাবেশ