বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন । ছবি: সংগৃহীত
বিজ্ঞাপন
মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) সকালে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট প্রাঙ্গণে সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের উদ্যোগে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান’ কর্মসূচির মাঠ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, “যেভাবে সারাদেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানো হচ্ছে, তাতে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে—নির্বাচন পেছানোর উদ্দেশ্যেই এই ষড়যন্ত্র চলছে। তবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও নির্বাচন কমিশন যেভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছে, তাতে বিএনপি আশাবাদী যে প্রধান উপদেষ্টার প্রতিশ্রুত সময়ের মধ্যেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।”
সম্প্রতি ঢাকার মিটফোর্ড এলাকায় এক ব্যবসায়ীকে নৃশংসভাবে হত্যা করা নিয়ে প্রশ্ন উঠলে জাহিদ হোসেন বলেন, “জাতীয় স্থায়ী কমিটির পক্ষ থেকে আমাদের মহাসচিব সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে লিখিতভাবে বলেছেন—ঘটনা যাই হোক, অন্যায় তো অন্যায়ই। কোনো অন্যায়কে ছোট করে দেখা, বড় করে দেখা, বা একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের ওপর চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা—এটি রাজনৈতিক অপব্যাখ্যা ছাড়া কিছুই না। অন্যায়কে রাজনীতিকরণ করা ঠিক নয়।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সাহেবকে নিয়ে যেসব মন্তব্য কেউ কেউ করেছেন, তাদের উদ্দেশ্যে বলছি—আমরা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আদর্শে বিশ্বাসী, খালেদা জিয়ার অনুসারী এবং তারেক রহমানের নেতৃত্বে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে যুক্ত। ষড়যন্ত্রের রাজনীতিতে আমরা বিশ্বাস করি না।”
সমর্থকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে জাহিদ বলেন, “আমি শুধু বন্ধুদের উদ্দেশে বলছি—ধৈর্য ধরুন। কোনো অন্যায়কে সমর্থন করবেন না। নিজের অন্যায় সমর্থন করে আর অন্যেরটা নিয়ে চুপ করে থাকবেন—এমন নীতিতে বিএনপি চলে না। বিএনপি সবসময় ন্যায়বিচার চায়, মব সন্ত্রাসে বিশ্বাস করে না।”
এদিকে, মিটফোর্ডের ঘটনার প্রেক্ষিতে জামায়াতে ইসলামীর এক নেতা মন্তব্য করেছেন—“জনগণ বিএনপিকে লালকার্ড দেখিয়েছে।” অন্যদিকে, এনসিপির এক নেতা বলেন, “বিএনপি একসময় পাকিস্তানিদের পুনর্বাসন করেছে, আর এখন করছে মুজিববাদীদের।”
এই বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে ডা. জাহিদ হোসেন বলেন, “আমি এই প্রশ্নগুলোর সরাসরি উত্তর দিতে চাই না। যারা এসব প্রশ্ন তোলে, তারা প্রকৃত অর্থে বিষয়টি বোঝে না। তাদের রাজনৈতিক জ্ঞান ও অভিজ্ঞতার সীমাবদ্ধতা রয়েছে। আমি মনে করি, তাদের মন্তব্য মূল্যহীন।”
তিনি আরও বলেন, “জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে কে কাকে লালকার্ড, সবুজ কার্ড বা সাদা কার্ড দেখাবে। কে কী বলল, সেটা বিএনপির কোনো আলোচনার যোগ্য নয়। যারা পুনর্বাসনের কথা বলেন, তারা আগে ঝালকাঠির ঘটনা পত্রিকায় দেখে নিক—সেখানে কারা পুনর্বাসন করেছে, আর কারা করেনি।”
অনুষ্ঠানে বিএনপির সাংস্কৃতিক সম্পাদক আশরাফ উদ্দিন আহমেদ উজ্জ্বল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মোর্শেদ হাসান খান, ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের রফিকুল আলম লাবু, নজরুল ইসলাম, অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম শামসুল ইসলাম শামস, সাংস্কৃতিক জোটের রফিকুল ইসলাম, সাংবাদিক সৈয়দ আবদাল আহমেদ, আমিরুল ইসলাম কাগজী এবং শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোটের জাকির হোসেন উপস্থিত ছিলেন।