Logo Logo
অপরাধ

ফোনকলেই ধরা পড়লো ভালুকার ট্রিপল মার্ডারের প্রধান আসামি


Splash Image

ময়মনসিংহের ভালুকায় ঘটে যাওয়া মর্মান্তিক তিন খুনের ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত নজরুল ইসলামকে এক ফোনকলের সূত্র ধরেই গাজীপুরের জয়দেবপুর রেলস্টেশন এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে ভালুকা মডেল থানা পুলিশ।


বিজ্ঞাপন


প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে নজরুল নিজেই স্বীকার করেছেন তিনটি খুনের ভয়াবহ কাহিনী।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত রোববার (১৩ জুলাই) দুপুরে পারিবারিক কলহের জেরে নজরুলের সঙ্গে তার ভাবি ময়না ও ভাতিজি রাইসা আক্তারের বাকবিতণ্ডা হয়। অভিযোগ অনুযায়ী, তার ভাবি ও ভাতিজি প্রায় সময় তাকে খাবার নিয়ে খোঁটা দিতেন এবং বড় ভাই রফিকুলের মাধ্যমে তাকে আবার জেল খাটানোর হুমকি দিতেন। উল্লেখ, নজরুলকে এর আগেও একটি মামলায় জেলে যেতে হয়। পরবর্তীতে তিনি জামিনে এসে ভাইয়ের ভাড়া বাসায় উঠেন। এসব অপমান ও ক্ষোভ থেকে প্রতিশোধ নেওয়ার মানসিকতায় নজরুল রাতে সবার ঘুমের সময় পরিকল্পিতভাবে ভয়াবহ হত্যাকাণ্ড চালায়।

সে রাতে প্রথমে ভাবি ময়নাকে, পরে ভাতিজি রাইসাকে এবং সবশেষে ছোট ভাতিজা নীরবকে ধারালো দা দিয়ে গলা কেটে হত্যা করে। হত্যার পর মেঝেতে ছড়িয়ে পড়া রক্ত চাদর দিয়ে মুছে, রক্তাক্ত চাদরটি খাটের নিচে রেখে পাশের কক্ষে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে সে।

পরদিন (১৪ জুলাই) ভোরে নজরুল বাড়ির গেট তালাবদ্ধ করে চলে যায় ভালুকার গ্যাসলাইন এলাকার কামরুল মেলিটারির রিকশা গ্যারেজে। সেখান থেকে একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ভাড়া নেয় এবং নিজের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি বিক্রি করে গাজীপুরের দিকে রওনা হয়। মাওনা এলাকায় একটি গ্যারেজে রিকশাটি বিক্রির চেষ্টা করলেও গ্যারেজ মালিক রাজি না হওয়ায় রিকশা রেখেই তিন হাজার টাকা নিয়ে জয়দেবপুর চলে যায়।

মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) দুপুরে নজরুল এক আত্মীয়কে ফোন করলে, সেই ফোনকল ট্র্যাক করে ভালুকা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হুমায়ুন কবীর, এসআই আমিনুল ইসলাম ও এসআই নুরুল ইসলামের নেতৃত্বে পুলিশ অভিযান চালিয়ে জয়দেবপুর রেলস্টেশন এলাকা থেকে নজরুলকে গ্রেফতার করে। পরে তাকে জয়দেবপুর রেলওয়ে ফাঁড়িতে নেওয়া হয় এবং সেখান থেকে রাত ৮টার দিকে ভালুকা মডেল থানায় আনা হয়।

গ্রেফতারকৃত নজরুলের বক্তব্য থানা প্রাঙ্গণে উপস্থিত সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) আব্দুল্লাহ আল মামুন। এ সময় নজরুল নিজে স্বীকার করেন, তাকে ভালুকা মডেল থানা পুলিশের একটি দলই গ্রেফতার করেছে।

এদিকে সোমবার রাত ৮টার দিকে নিহত ময়না, রাইসা ও নীরবের মরদেহ তাদের নানাবাড়িতে পৌঁছালে সেখানে এক হৃদয়বিদারক পরিবেশের সৃষ্টি হয়। আগেই ময়নার বাবার বাড়ির পাশের কবরস্থানে খোঁড়া তিনটি কবর প্রস্তুত রাখা হয়েছিল। মরদেহ পৌঁছানোর পর গোসল ও জানাজা শেষে পাশাপাশি মা ও দুই সন্তানকে দাফন করা হয়।

-সাখাওয়াত হোসেন সুমন, ভালুকা (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি

আরও পড়ুন

২০২৬ বিশ্বকাপের আগে বড় পরিবর্তন, পাল্টে যাচ্ছে পেনাল্টির নিয়ম!
২০২৬ বিশ্বকাপের আগে বড় পরিবর্তন, পাল্টে যাচ্ছে পেনাল্টির নিয়ম!
চোখের জল মুছতে মুছতে ছেলে হত্যার বিচার চান আসিফের মা
চোখের জল মুছতে মুছতে ছেলে হত্যার বিচার চান আসিফের মা